• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
পুনর্নির্ধারিত সুদহার

আগ্রাসী ব্যাংকিং তদারকি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৩, ২০১৮, ১০:৩৭ এএম
আগ্রাসী ব্যাংকিং তদারকি করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ঢাকা : ব্যাংকঋণের সুদহার এক অঙ্কে নেমে এলে দেশে বিনিয়োগ আরো গতি পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রাণসঞ্চার হবে। এতে বিকাশ হবে শিল্পের। এতে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বাড়বে। এ সুযোগে আগ্রাসী ব্যাংকিংয়ে এ খাতে বিদ্যমান সঙ্কট যাতে আরো গভীর হতে না পারে তা তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস-কে (বিএবি) এ সিদ্ধান্ত অবহিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আর বিএবি বলছে, এটি সরকারের চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত নয়।  

গত বুধবার ব্যাংকঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ এবং আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ বেঁধে দিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিএবি। বিএবির এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। এরপর বৃহস্পতিবার (২১ জুন) বিএবি সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে বৈঠক করে।

বৈঠকে বিএবি প্রতিনিধিদলে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. সায়েদুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিএবির সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। বৈঠক শেষে বিএবি সভাপতি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর সরকারের মহাপরিকল্পনা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে লক্ষ্য তার সঙ্গে তাল মেলাতে বেসরকারি খাতের ব্যাংকের উদ্যোক্তারা আমানত ও ঋণের সুদহার পুনর্নির্ধারণ করেছেন। নজরুল ইসলাম মজুমদার আরো বলেন, আমানত ও ঋণের সুদহার সর্বসম্মতভাবে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের অভিভাবক। আর্থিক খাত নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তাই গভর্নরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানাতে এসেছিলাম বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের নীতি সহায়তা যাতে অব্যাহত রাখে। বিএবি সভাপতি বলেন, আমাদের (তফসিলি ব্যাংকগুলো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উদ্যোক্তাদের সিদ্ধান্ত কার্যকর করবেন। কীভাবে বিনিয়োগ বাড়াবে, কোথায় বিনিয়োগ বাড়াবে সেগুলো ঠিক করবেন এমডিরা ও বাংলাদেশ ব্যাংক। সময় অল্প। এর মধ্যে বাস্তবায়নে যেতে হবে।

তিনি বলেন, পুরনো ঋণের সুদহার পুনর্বিবেচনা করা হবে। তবে পুরনো আমানতের সুদহার অব্যাহত থাকবে। কিছুটা লোকসান হলেও তা ব্যাংকের মালিকরা মেনে নেবেন। আমানতকারীর স্বার্থ নষ্ট হবে না। তবে বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট হবে। কারণ তারা কম সুদে অর্থ নিয়ে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা দরকার। তাদের নীতি সহায়তা ও দিকনির্দেশনা জরুরি।  

ঋণ ও আমানতে সুদহার পুনর্নির্ধারণ চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত- এ প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, এটি ঠিক নয়। যারা বলছেন, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলছেন। আমরা এই সুদের হারে ৬ মাস আগেও ছিলাম। তাই যেতে পারব না কেন। আমি তাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই।    

বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, বিএবির একটি প্রতিনিধিদল এসেছিল। তবে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা আমি অবগত নই।

এদিকে বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিএবির সিদ্ধান্তে খুব সতর্ক। তাই তাদের সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিনিয়োগ চাঙ্গা করার নামে পুনর্নির্ধারিত সুদহারে যাতে ব্যাংকের অর্থ বেরিয়ে না যায়। ঋণ দেওয়ার আগে ঋণের মান অর্থাৎ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে হবে। মানহীনভাবে ঋণ দেওয়া যাবে না। আগ্রাসী ব্যাংকিং করে যাতে বিদ্যমান সঙ্কট আরো গভীর না হয় সেটি তদারকি করা হবে।  

ওই কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহেই তফসিলি ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সঙ্গে এ ব্যাপারে বৈঠক হতে পারে। সেখানে তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। এরপর জুলাই মাসের ২ তারিখে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে ব্যাংকার্স সভায় এ ব্যাপারে বিশদ আলোচনা হবে।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!