• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আঙুল কেটে ভালোবাসার প্রমাণ!


সাভার প্রতিনিধি জুলাই ১৫, ২০১৭, ০৩:৪৮ এএম
আঙুল কেটে ভালোবাসার প্রমাণ!

প্রতীকী ছবি

সাভার (ঢাকা): ভালোবাসার প্রমাণ দিতে আঙুল কেটে উপহার দিলেন ভালোবাসার মানুষটিকে। আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নে আহাদ তার নিজের আঙুল কেটে সেই ভালোবাসার প্রমাণ দিলেন স্ত্রী লাকিকে।

দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল আহাদ-লাকি দম্পতির মধ্যে। দুই পরিবারের লোকজন উভয়ের দ্বন্দ্ব মিমাংসা করার চেষ্টাও করেছে একাধিকবার। কিন্তু তাদের মধ্যকার কলহ কখনোই নিরসন হয়নি। একপর্যায়ে দুই পরিবারের লোকজনের সিদ্ধান্তে আহাদ-লাকি দম্পতির মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ (ডিভোর্স) হয়। অবশ্য স্বামী আহাদ স্ত্রী লাকিকে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে অনুরোধও করেন। কিন্তু কিছুতেই মন গলেনি স্ত্রী লাকি আক্তারের। স্ত্রীর মন না গললেও লাকিকে নিয়ে ফের সংসার করতে আগ্রহ দেখান স্বামী আহাদ। এরই সূত্র ধরে ওই দম্পতিসহ তাদের উভয়ের পরিবারের লোকজন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসায় জড়ো হন উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধানের জন্য।

কিন্তু আহাদের সঙ্গে সংসার না করার পক্ষেই অনড় থাকেন লাকি। এতে আবেগপ্রবণ হয়ে আহাদ সালিশ চলাকালীন সময়ের এক ফাঁকে চেয়ারম্যান বাড়ির রান্না ঘবে প্রবেশ করেন এবং ভালোবাসার প্রমাণ স্বরূপ রান্না ঘরে থাকা বটি দিয়ে নিজের বাম হাতের একটি আঙুল দ্বিখন্ডিত করে উপহার হিসেবে লাকির ওড়নায় বেধে দিয়ে দিয়ে চলে যান।

এটা নাটক-সিনেমার কোনো দৃশ্য নয়। বাস্তবে এমন ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠ আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের কলতা সূতি গ্রামে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম সুরুজ।

আজহারুল ইসলাম সুরুজ জানান, আহাদ এবং লাকি পরস্পর প্রেম করে বিয়ে করে। লাকি ডিভোর্স দেয়ায় উভয়ের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়। সে কারণে এলাকার গণ্যমান্য লোকজন নিয়ে বসা হয়েছিল একটা সমাধানের জন্য কিন্তু আহাদ হঠাৎ তার আঙুলটি কেটে লাকিকে উপহার দেয়ায় সবকিছু ভন্ডুল হয়ে যায়। লাকি আহদকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে।

স্থানীয়রা জানান, সাত-আটদিন আগে আহাদ-লাকি দম্পতির মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ (ডিভোর্স) হয়ে যায়। পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধানের জন্য আশুলিয়ার পূর্ব কলতাসূতি গ্রামে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম সুরুজের বাসায় উপস্থিত হন। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে আহাদ লাকিকে নিয়ে ফের সংসার করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় আহাদ এবং তাঁর পরিবারের লোকজন লাকিকে আবার নতুন করে সংসার শুরু করার জন্য অনুরোধে করনে। কিন্তু লাকিসহ লাকির পরিবার তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন।

পরবর্তীতে উভয় পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কথাবার্তায় লিপ্ত হলে আহাদ ভালোবাসার প্রমাণ স্বরূপ নিজের একটি আঙুল দ্বিখন্ডিত করে উপহার হিসেবে লাকির ওড়নায় বেধে দেন। পরবর্তীতে আহাদকে চিকিত্সার জন্য স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রেরণ করা হয়।

এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়, বছর দশেক আগে আশুলিয়ার কলতাসূতি এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে লাকি আক্তারের সাথে গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা আহাদ মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। এছাড়া এই দম্পতির চার বছর বয়সী এক ছেলে ও দুই বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!