• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ জেলহত্যা দিবস


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ৩, ২০১৬, ০৯:২৫ এএম
আজ জেলহত্যা দিবস

আজ ৩ নভেম্বর; জেলহত্যা দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসের এক রক্তাত  দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধে নেতৃৃত্বদানকারীদের অন্যতম জাতীয় চার নেতাকে। আজ আমরা পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি সেই জাতীয় চার নেতা- স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে। পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর ঘাতকচক্র কারাগারে ঢুকে হত্যা করে এই চার মহান নেতাকে। তার আগে ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে খুনিচক্র। তারই ধারাবাহিকতায় ঘাতকচক্র জেলহত্যার নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছিল। ইতিহাসের সেই নির্মমতা আমাদের গ্লানিবোধে আক্রান্ত করে।

১৯৭১ সালে একটি পক্ষ পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। মুক্তিকামী মানুষকে হত্যার তাণ্ডব শুরু করেছিল। ৩০ লাখ শহীদের পাশাপাশি জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য হত্যা করেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। সেই যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে তাদের এ দেশীয় দোসররাও হেরে যায়। কিন্তু তারা পরাজয় মেনে নেয়নি এবং নিজেদের অবস্থান থেকেও সরে আসেনি। তারাই পরবর্তীকালে সংগঠিত হয়ে নানারকম ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে ছিল সেই একই ষড়যন্ত্র। আর এরই ধারাবাহিকতায় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসে নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। কারাগারের নিরাপত্তানীতি ভেঙে রাতের অন্ধকারে এভাবে জাতীয় নেতাদের হত্যার ঘটনা বিশ্বে বিরল।

দুঃখের বিষয়, জেলহত্যার পর দীর্ঘদিন ক্ষমতা দখলে রেখেছিল খুনিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষ। তারা ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল হত্যা মামলার বিচার। সুপরিকল্পিতভাবে অনেক আলামত নষ্ট করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর মামলার প্রক্রিয়া আবার চালু করা হয়। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর নিু আদালত থেকে মামলার রায় পাওয়া যায়। রায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ডসহ ১৫ জনের সাজা হয়। এর পর মামলা যায় হাইকোর্টে, পাওয়া যায় হাইকোর্টের রায়; যদিও সাজাপ্রাপ্তদের অনেকেই পলাতক কিংবা বিদেশে অবস্থান করছে। জেলহত্যার বিচার ও রায় কার্যকর করার ভেতর দিয়ে ইতিহাসের আরেক কলঙ্ক থেকে জাতি মুক্ত হবে- এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।  

সোনালীনিউজ/ঢাকা
 

Wordbridge School
Link copied!