• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি

আজও পরিচয় মেলেনি ২৯১ জনের


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৪, ২০১৭, ১০:১০ এএম
আজও পরিচয় মেলেনি ২৯১ জনের

ঢাকা: সাভারের রানাপ্লাজা ট্র্যাজেডির ভয়াবহ সেই দিনটি আজ। পুরো দেশকে নাড়া দেয়া সেদিনের দুর্ঘটনায় নিহত হন ১ হাজার ১শ ৩৫ জন। আহত হন দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিক। নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ২৯১ জনের পরিচয় পাওয়া যায়নি আজও।

সে ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়তো কঠিন, কিন্তু যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছেন কিংবা চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন কেমন আছেন তারা? দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে তারা পার করছেন প্রতিটি মুহূর্ত।

আলোচিত রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ওই ভবনের কারখানা শ্রমিকরা কেবল পঙ্গুই হননি, হারিয়েছেন ঘর-সংসারও। কোনও কোনও আহত-পঙ্গু শ্রমিক শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েন। এর ফলে অনেকেরই স্ত্রী ও স্বামী তাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

গায়ের উপর তিনটা মরদেহ আর ডান হাত ছাদের ভিমের নিচে চাপা। চতুর্দিকে শত শত মানুষের বাচার আর্তনাদ। এমন মুহুর্তে রক্তভেজা মেঝেতে রুদ্ধশাস ৯ ঘণ্টা অতিক্রম। এমন বাস্তবতা থেকে উদ্ধার হয়েছিলেন রানাপ্লাজার গার্মেন্টস কর্মী নিলুফার বেগম। তার একটি পা অচল হয়ে গেছে। তবুও সংসারের প্রয়োজন মেটাতে হয় তাকেই। জানান, স্বামীর রোজগারে সংসারের খরচ জুটলেও চিকিৎসার টাকা থাকেনা।

এমনি পঙ্গুত্ববরণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন অনেকে। যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছেন তাদের অনেকেই রানাপ্লাজা ধ্বংস্তূপের সামনে এসে এখনো স্তব্ধ হয়ে যান। সাদ্দাম হোসেন তাদের একজন যিনি একটি হাত হারিয়েছে রানাপ্লাজা ট্রাজেটিতে।

আর পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়ে পঙ্গু হয়েছেন বাকী বিল্লাহ। তারা দুজনই স্নাতকোত্তর পাসকরে রানাপ্লাজার পাশের ভবনে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বাকীবিল্লাহ কিছুটা সুস্থ হয়ে একটি চাকরি পেলেও তার শারীরিক দুর্বলতার কারণে গত মাসে তাকে চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৫১ ধারার তফসিল পাঁচে কোন শ্রমিকের মৃত্যু হলে ১লক্ষ টাকা আর স্থায়ী অক্ষমতা সৃষ্টির জন্য এক লাখ ২৫ হাজার টাকা মালিক কর্তৃক ক্ষতিপূরণের বিধান রয়েছে। কিন্তু মারাত্মক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ নিরূপণ হবে দেয়নি আদালত কর্তৃক। যদিও রানাপ্লাজায় শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা মামলাটি এখনো বিচারধীন রয়েছে।

যাদের নিপুণ হাতের সেলাইয়ে গার্মেন্টস শিল্প আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে খ্যাতি অর্জন করেছে সেই কারিগরদের ক্ষতিপূরণ দেয়া তাদের আইনি অধিকার বলে মনে করেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার ইস্টাডি এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতাম উদ্দিন আহমেদ।

এমনই একটি বদ্ধ জলাশয় ভরাট করে ৬তলা ভবনের অনুমতি পেলেও ৯তলা নির্মাণ করেছিলেন জমির কথিত মালিক সোহেল রানা। যার মধ্যে ৫টি গার্মেন্টসে ৩৬শো শ্রমিক কাজ করতেন।

২০১৩ সালের এপ্রিলে ভবনে ফাঁটল দেখা দিলে সতর্কবার্তার পরও শ্রমিকদের ঘটনার দিন কাজে যোগদানে বাধ্য করা হয়। আর এরই ফলে এপ্রিল রানাপ্লাজা ধসে পড়ে নিহত হন ১১৩৬জন শ্রমিক। আহত হন ২৪ শো ৩৮জন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!