• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আতঙ্কে এলাকাছাড়া বেনাপোল-শার্শার অনেক কারবারি


বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি জুন ২৩, ২০১৮, ০২:০৭ পিএম
আতঙ্কে এলাকাছাড়া বেনাপোল-শার্শার অনেক কারবারি

যশোর : যশোরের বেনাপোল-শার্শায় পুলিশ-র‌্যাবের কার্যক্রমে দিশাহারা হয়ে পড়েছে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শার্শার দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার পর মূলত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাও ছেড়েছে অনেক মাদক ব্যবসায়ী।

অন্যদিকে মাদকবিরোধী অভিযানে সন্তোষজনক ভূমিকা না রাখায় গত ২৪ মে বেনাপোল পোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফিরোজ আহম্মেদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সারা দেশের সঙ্গে যশোরের সর্বত্র পুলিশ-র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করছে। এ অভিযানের ফলে গত ২১ মে ভোরে শার্শার মাদক ব্যবসায়ী শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া ইউনিয়নের জামতলার ট্যাংরা গ্রামের রহমান গাজীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম দুখি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে।

যার নামে শার্শা থানায় ৫টি মাদক আইনে মামলা রয়েছে। দুখি সম্প্রতি পুলিশি অভিযানে পুলিশের এক এএসআইকে মাথা ফাটিয়ে হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় পালিয়ে গিয়েছিল। একই দিন উপজেলার মহিষকুড়া গ্রামের হারুনার রশিদের ছেলে মুত্তাজুল মোড়ল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। যার নামে শার্শা থানায় চারটি অস্ত্র ও দুটি মাদক মামলা ছিল।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, শার্শায় যে দুজন মাদক ব্যবসায়ী ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে তারা উল্লেখযোগ্য কোনো মাদক ব্যবসায়ী নয়। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের পর অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলেও অধিকাংশরা এলাকায় থেকে গোপনে তাদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই মরণনেশা ইয়াবাসহ মাদকসেবী ও কারবারিরা আটক হচ্ছে। কিন্তু রাঘববোয়ালরা রয়ে যাচ্ছে অন্তরালে।

সম্প্রতি শার্শা-বেনাপোলের বিজিবি সদস্যরা বড় বড় মাদকের চালান আটক করলেও পুলিশ কোনো বড় ধরনের সাফল্য দেখাতে পারেনি। ফলে শার্শার বিভিন্ন পয়েন্টে মাদকের কারবার নির্বিঘ্নে চলছেই। ফলে শার্শার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে অবস্থান করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তাদের সহযোগিতা করছে দরিদ্র শ্রেণির বেকার তরুণ-তরুণীরা। এরা পুলিশ ও র‌্যাবের কাছে আটক হলেও শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা রয়ে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। পুরস্কার ঘোষিত কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ।  

জেলা পুলিশ পুরস্কার ঘোষিত বেনাপোল-শার্শার শীর্ষ ৬ মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে ধরিয়ে দিতে পারলে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বেনাপোল-শার্শার দুই মাদক ব্যবসায়ীকে। তারা হলো বেনাপোল পোর্ট থানার ভবারবেড় কলুপাড়ার মৃত হোসেন আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে বাবা কালু ও বারপোতার মুন্তাজ আলী মোড়লের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম ওরফে শরি মেম্বার ওরফে বোতল শরি।

আর ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে শার্শার কোটা পশ্চিমপাড়ার শের আলী দফাদারের ছেলে আনোয়ার হোসেন আনা ওরফে বাবা আনা, শার্শার কাশীপুর-গোপীনাথপুরের মৃত জয়নালের ছেলে আসাদুল ইসলাম আশা, বেনাপোল পোর্ট থানার রঘুনাথপুরের (বর্তমানে নারায়ণপুর) মৃত কেরামত মল্লিকের ছেলে বাদশা মল্লিক এবং রঘুনাথপুরের গোলাম মোস্তফা ওরফে গোলা ঢাকালের ছেলে জাহাঙ্গীরকে ধরিয়ে দিলে।

পুরস্কার ঘোষণা ও যশোর পুলিশের ১০০ দিনের মাদকবিরোধী অভিযানের আগেই এসব মাদক ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এদের মধ্যে কয়েক জন ভারতে অবস্থান করছে। পুলিশ নতুন কৌশল হিসেবে এসব মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পাহারা বসায়। যাতে তারা আত্মসমর্পণ করে। এরপরও তারা আত্মসমর্পণ করেনি। এখনো সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক জব্দ হচ্ছে। বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা।

এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা পলাতক রয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযানে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর আছে পুলিশ। শীর্ষ তালিকার বাইরেও অন্য মাদক ব্যবসায়ীদের আটক অভিযান চলছে।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!