• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আদালত নেই কাঁঠালিয়ায়, ভোগান্তিতে বিচার প্রার্থীরা


মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি জুলাই ১৫, ২০১৭, ১০:২০ এএম
আদালত নেই কাঁঠালিয়ায়, ভোগান্তিতে বিচার প্রার্থীরা

ঝালকাঠি: জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলা সদরে কোন আদালত না থাকায় বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এ উপজেলায় দেওয়ানী বা ফৌজদারী আদালত না থাকায় মানুষ ন্যায় বিচার পেতে নানা ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

কাঁঠালিয়ার জনসাধারণের জন্য ঝালকাঠি জেলা শহরে আদালত হওয়ায় কাঙ্খিত সময়ে ন্যায় বিচার পাচ্ছেনা তারা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়ে বিচার প্রার্থীরা জেলা সদর আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

উপজেলার বানাই গ্রামের শাহাদৎ হোসেন সিদু তালুকদার জানান, এলাকার আমজাদ আলী বিশ্বাসের কাছ থেকে জমি কিনেছিলাম। সেই জমির দখল নিয়ে ঝালকাঠি আদালতে মামলা করেছি। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে কবে মামলার রায় হবে জানিনা। বার বার শুধু মামলার তারিখ পড়ছে। বৃদ্ধ বয়সে বার বার আদালতে যেতে আসতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া আর্থিক ক্ষতি তো আছেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাঁঠালিয়া উপজেলা সদর থেকে জেলা শহরের দুরত্ব ৫০ কিলোমিটার। এ উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন থেকে জেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়নের সাথে জেলা ও উপজেলা শহরের যোগাযোগ ব্যাবস্থা খুবই অনুন্নত। বেহাল রাস্তাঘাটের কারণে জেলা সদরে যেতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ।

অপরদিকে অনিয়মিত কিছু বাস, টেম্পু ব্যাটারীচালিত অটোরিকশা চলাচল করলেও প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। সঠিক সময়ে আদালতে পৌছানো সম্ভব না হলে নানা রকম হয়রানী ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

শুধু কাঁঠালিয়া উপজেলাই নয় জেলা সদর ছাড়া জেলার অন্য কোন উপজেলায় চৌকি আদালতের কার্যক্রম নেই। ফলে জেলা সদর আদালতে মামলার জট লেগেই থাকে। এতে সাধারণ বিচার প্রার্থীরা চরম ভোগান্তির ও আর্থিক ক্ষতির সম্মূখিন হন।

কাঁঠালিয়া উপজেলা সুজনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল হালিম বলেন, ১৫২ দশমিক ২ বর্গ কিলোমিটারের এ উপজেলায় দের লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এখানকার অধিকাংশ জনগণ দরিদ্র এবং কৃষিজীবি। তাদের পক্ষে জেলা সদরে গিয়ে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমা পরিচালনা করা অত্যন্ত ব্যয় বহুল ও কষ্টসাধ্য।

কাঁঠালিয়া সদরের অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম খোকন সিকদার বলেন, কাঁঠালিয়ায় আদালত না থাকায় বিচার প্রার্থীদের নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আদালতে প্রায়শই বিচারক অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় এ উপজেলার জনগণ প্রত্যাশিত সময়ে ন্যায় বিচার ব্যবস্থা ও আর্থিক ক্ষতি দুটিই বঞ্চিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে শিক্ষানুরাগী সমাজ সেবক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব রেজাউল করিম বলেন, সাধারণ মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে উপজেলা সদরে দেওয়ানী ও ফৌজদারী  আদালত স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. শরীফ মুহম্মদ ফয়েজুল আলম বলেন, এ ব্যাপারে মাসিক আইন-শৃংখলা বিষয়ক পরবর্তী সভায় জনগুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উথ্যাপন করে রেজুলেশনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবরে অবহিত করা হবে। তবে ইতিপূর্বে এ বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সিকদার বলেন, উপজেলার দরিদ্র জনগণের সঠিক সময়ে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে উপজেলা সদরে দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালত স্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদ পুরাতন কোর্ট ভবনে আদালত পরিচালনা করা সম্ভব। উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদাধিকার বলে নির্বাহী আদালত পরিচালনা করতে পারেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!