• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আম রপ্তানি কমে আসছে ইউরোপের বাজারে


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১১, ২০১৭, ১০:১৬ পিএম
আম রপ্তানি কমে আসছে ইউরোপের বাজারে

ফাইল ছবি

ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা আম এবার ইউরোপিয় ইউনিয়ন-ভুক্ত দেশগুলোতে রপ্তানি করতে পারছেন না অনেক আম চাষী। ফলে ইউরোপের বাজারে রপ্তানির জন্য তৈরি করা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেক চাষী। কৃষি অধিদপ্তর বলছে ভাল মানের আম রপ্তানি না করায় এর আগের দুই বছর ইউরোপের দেশ থেকে আমের চালান ফেরত এসেছে। তাই এবারে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে আম বাছাই করা হচ্ছে। 

কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে ভিন্ন কথা। ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেভাবে আম বাছাই করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে ইউরোপিয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো উচিত।

এদিকে আম চাষীরা বলছেন সরকারের বেঁধে দেয়া নিয়মের কারণে প্রায় ৭০ শতাংশ আম তারা রপ্তানি করতে পারবেন না তারা। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে আম রপ্তানির প্রচলন গত কয়েক বছর থেকে শুরু হয়েছে। আম চাষীরা দেশি বাজারের তুলনায় বেশি দামে বিদেশে আম বিক্রি করতে পারায় অনেকের লক্ষ্য ছিল রপ্তানির দিকেই। কিন্তু এবারে আম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারের রয়েছে বেশ কিছু কড়া বিধিনিষেধ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আনোয়ার হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, আমের মান বিগত বছর গুলোতে ভালো না থাকাই বাংলাদেশ থেকে আম আর না নেওয়ার ইঙ্গিত দেয় ইউরোপিয় ইউনিয়ন। যার কারণেই তাদের বেধে দেয়া নিয়ম অনুসরণ করতে হচ্ছে তাদের। আমরা এবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি যে উন্নত মানের আম রপ্তানি করা হবে।
তিনি আরো জানান, গত দুই বছরে ৩৫ টি আমের চালান বাতিল হয় মান নিম্ন হওয়ার কারণে। 

বাংলাদেশে যে সব জেলায় প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদন হয় তার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ একটা। সেখানকার আম চাষীরা রপ্তানির জন্য আলাদাভাবে এবং স্থানীয় বাজারের জন্য আরেকভাবে আম প্রস্তুত করেন। আম ব্যবসায়ী হাসান আল সাদি এ বিষয়ে বলেছেন, আমের মৌসুম এক মাস আগে থেকে শুরু হলেও রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোন সাড়া তারা পাননি। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট বলছে রপ্তানির উদ্দেশ্যে আগে থেকেই আম চাষীদের বিষ ও পোকামুক্ত আম উৎপাদনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সে অনুযায়ী তারা আম উৎপাদন করেছে। এখন কোয়ারান্টাইন বা আম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পদ্ধতির কারণে প্রায় ৭০ শতাংশ আম রপ্তানি করতে পারবে না বলে চাষীরা অভিযোগ করছেন।

ইন্সটিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.শরফ উদ্দিন বলেছেন, যেভাবে আম বাছাই করা হচ্ছে, সেটা সঠিক পদ্ধতি নয়। যদি আমের গায়ে আঠার দাগ বা পাতার দাগ থাকে সেটাও বাতির করা হচ্ছে। এভাবে যদি চলে তাহলে ভবিষ্যতে চাষীরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে বাংলাদেশের আম ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি,যুক্তরাজ্য,ফ্রান্স, গ্রীস, সুইডেন, জার্মানিতে বেশি রপ্তানি হয়। এছাড়া কিছু আম যায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশে। ২০১৪-১৫ সালে ৭৮৮টন আম রপ্তানি হয়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২৮৮ টন এবং এবং এ বছর এখন পর্যন্ত ২৫ টন  রপ্তানি হয়েছে বলে কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে।

এদিকে সরকারের সংশ্লিষ্ট ঐ সংস্থা বলছে আম রপ্তানির উপর যদি এখন সর্তকতা না মানা হয় তবে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য ফল বা শস্যের রপ্তানির ওপরেও আপত্তি আসতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!