• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আমনের ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত কৃষক


আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী নভেম্বর ২৪, ২০১৬, ১১:০১ এএম
আমনের ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত কৃষক

পটুয়াখালী: দেশের অন্যান্য জেলার থেকে পটুয়াখালীতে আমন ধানের উৎপাদন বেশি হলেও সরকারীভাবে পটুয়াখালী জেলা থেকে আমন সংগ্রহের পরিমান একাবেরই কম। বিগত বছরগুলোতে জেলা খাদ্য বিভাগ জেলার বাইরে থেকে চাল সংগ্রহ করে জেলার ভেতরে সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক বিতরণ করেছে।

এর ফলে চাল সংগ্রহে সরকারের যেমন বাড়তি খরচ হয়েছে, তেমনি জেলার স্থানীয় কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে এ বছর জেলার ভেতর থেকেই জেলার প্রয়োজনীয় চাল সংগ্রহের অনুরোধ কৃষক ও স্থানীয় অটো রাইস মিল মালিকদের।

জেলা খাদ্য বিভাগের তথ্য মতে- ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে পটুয়াখালী জেলায় আমন ধান উৎপাদনের পরিমান ছিলো ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৩৪০ মেট্রিকটন। আর ওই বছর সরকারী ভাবে জেলা খাদ্য বিভাগ পটুয়াখালী জেলা থেকে আমন সংগ্রহ করেছে মাত্র ২৮৩ মেট্রিকটন। আর জেলার বাইরে থেকে সংগ্রহের পরিমান ছিলো প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিকটন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘জেলায় পর্যাপ্ত অটো রাইস মিল না থাকায় সরকার বাইরের জেলা থেকে প্রয়োজনীয় চাল সংগ্রহ করে। এর ফলে সরকারকে প্রতি কেজি চাল সংগ্রহে দুই থেকে তিন টাকা বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ে ডিলাররা পটুয়াখালী খাদ্য বিভাগের গোডাউনে চাল দিতে না পারায় বিভিন্ন কর্মসূচী পরিচালনা করতেও সমস্যা হচ্ছে। এদিকে বাইরের জেলা থেকে সংগ্রহ করা এসব চাল স্থানীয় মানুষ খাওয়ায় অবস্থা না হওয়ায় এ চালের মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার শারিকখালী এলাকর কৃষক ইকবাল মৃধা বলেন, ‘আমরা পটুয়াখালীর একটি অটো রাইস মিলে ধান বিক্রি করে থাকি। সরকার যদি পটুয়াখালীর মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল কিনতো তাহলে আমাদের কাছ থেকেও মিল মালিকরা আরো বেশি ধান কিনতো। এতে আমরা ধানের ন্যয্য দাম পাইতাম।’

জেলার অটো রাইস মিল মালিকরা বলছেন, জেলায় বর্তমানে যে ৪ টি অটো রাইস মিল আছে এর একটিতেই  প্রতিদিন ১২৮ টন চাল উৎপাদন করতে পারে। জেলা খাদ্য বিভাগের বছরে যে পরিমান চাল প্রয়োজন তা তাদের পক্ষেই সরবরাহ করা সম্ভব।

পটুয়াখালী কোহিনুর অটো রাইসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেলোয়ার গাজী জানান, বর্তমানে তারা স্থানীয় বাজার থেকে ধান সংগ্রহ করে আধুনিক পদ্বতিতে উন্নত মানের চাল তৈরী করে থাকেন। এসব চালের মান ভালো এবং স্থানীয় মানুষের কাছে জনপ্রিয়। তবে সরকার তাদের কাছ থেকে খুব অল্প পরিমান চাল ক্রয় করে থাকে। সরকারী ভাবে চাল ক্রয়ের পরিমান বাড়ালে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে তারা অরো বেশি চাল কিনতে পারতো। এর ফলে কৃষকরা যেমন তার উৎপাদিত ধানের ন্যয্য দাম পেতো তেমনি সরকারের চাল ক্রয়ের খরচের পরিমান ও কিছুটা কমতো। ’

পটুয়াখালী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মকলেচ আল আমিন বলেন, ‘বর্তমানে জেলার বাইরে থেকে চাল এনে জেলার চাহিদা পূরন করা হয়। এর ফলে চাল পরিবহনে যানবাহন ভাড়া, শ্রমিকদের মজুরি  সহ চাল পরিবহন করতে গিয়ে ঘাটতি দেখা যায়। তবে স্থানীয় ভাবে চাল ক্রয় করতে পারলে সরকারের এসব খরচ কমে যাবে। এ ছাড়া বর্তমানে যে কয়েকটি অটো রাইস মিল গড়ে উঠেছে তাদের উৎপাদিত চালের মান অনেকটা ভালো ও সাধারন মানুষ এই চালের ভাত খেতে সাচ্ছন্দ বোধ করেন।

এ বছর নতুন করে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী, বিভিন্ন প্রতিষ্টানের রেশন, ভিজিএফ, ওএমএস, ভিজিডি সহ সরকারী সহায়তা হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৪৬ হাজার মেট্রিকটন চালের প্রয়োজন হতেপারে। এই পরিমান চাল পটুয়াখালী জেলা থেকে সংগ্রহ করার অনুরোধ পটুয়াখালীর কৃষক ও মিল মালিকদের।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!