• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমাদের ‘পরানের গহিন ভিতরে’ সৈয়দ হক


সৌদি প্রতিনিধি অক্টোবর ২২, ২০১৬, ১০:৫৭ পিএম
আমাদের ‘পরানের গহিন ভিতরে’ সৈয়দ হক

ঢাকা: কবি সৈয়দ শামসুল হক বেঁচে থাকবেন আমাদের ‘পরানের গহিন ভিতর’।  তিনি থাকবেন তার সৃষ্টির প্রতিটি পঙক্তির রহস্য হয়ে। কবি লিখেছেন-
আমি জন্মেছি বাংলায় আমি বাংলায় কথা বলি।
আমি বাংলার আলপথ দিয়ে, হাজার বছর চলি।-
আমাদের ‘পরানের গহিন ভিতর’ থাকা হাজার বছরের পথচলা এই কবি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তিনি আর হাঁটবেন না বাংলার কোনো আলপথে। শুনাবেন না কোনো নতুন কবিতা। কিংবা নতুন করে আর কাউকে বলবেন না ‘খেলারাম খেলে যা’।

সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দা নগরীর ‘লিমার’ হোটেলের হলরুমে অনুষ্ঠিত সৈয়দ শামসুল হক শীর্ষক আলোচনা সভায় এভাবে স্মৃতিচারণ করে প্রবাসী কবিরা। 

জেদ্দা প্রবাসী সাহিত্যিকদের সদ্য প্রতিষ্ঠিত ‘উদ্ভাস- সাহিত্য-সংস্কৃতি ফোরাম’ আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি  কবি শেখ ফজলুল কবির ভিকু। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল এ কে এম শহিদুল করিম। 

বক্তারা বলেন, ‘সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কলম হাতে হেঁটেছেন বাংলা সাহিত্যের প্রতিটি আলপথে। হাজার বছর নয় যতদিন বাংলা সাহিত্য থাকবে চর্যাপদের অক্ষরগুলো থেকে আসা এ কবি থাকবেন ততদিন। তিনি থাকবেন তার সৃষ্টির প্রতিটি পঙক্তির রহস্য হয়ে। তার তিরোধানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে দেশ-বিদেশের প্রতিটি সাহিত্য প্রেমিকের মনে। মধ্যপ্রাচ্যের তপ্ত বালুকাময় মরু প্রান্তরেও নেমে এসেছিলে সেই শোকের ছায়া।

অন্যান্যের মধ্যে কবির সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন কাউন্সিলর মোকাম্মেল হোসেন, কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন, কাজী আমিন আহমেদ, মার্শাল কবির পান্নু, কাজী নওফেল, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান শামিম, ইউসুফ মাহমুদ ফরাজী, কাজী নেয়ামুল বশির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈনুদ্দিন ভূঁইয়া, মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।

আলোচনার শুরুতেই পবিত্র কোরআন করিমের আয়াত তেলাওয়াতের মধ্যদিয়ে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত। সংগঠক আজিজুর রহমানের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় কবিকে নিয়ে আলোচনা ছাড়াও কবির কবিতা পাঠ করে উপস্থিত সুধীদের কাব্যরসে নিমগ্ন করেন শারতাজুল আলম দিপু, আবুল বাশার বুলবুল, জাকির হোসেন, মাহফুজ আহমেদ, মারুয়া ওয়াজিউল্লাহ, সাইফুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ।

প্রধান অতিথি কনসাল জেনারেল শহিদুল করিম তার আলোচনায় বলেন, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ হক ছিলেন, বাংলাদেশের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্র সৈনিক। তাঁর সাহিত্যচর্চায় একদিকে যেমন তিনি নির্মাণশৈলী বিচারে পরিচয় দিয়েছেন তার মুনশিয়ানা তেমনি অন্যদিকে ধারণ করেছেন সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে। যা প্রেরণা যোগায় জাতিকে। শিল্প-সাহিত্যের সকল শাখায় অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর। কবি বেঁচে থাকবেন আমাদের ‘পরানের গহিন ভিতর’। 

শহিদুল করিম আরও বলেন, সৈয়দ হকের কবিতা, গল্প-উপন্যাস, নাটক, গান স্বাধীনতা-উত্তর বাঙালি মননে রেখাপাত করেছে, উদ্বুদ্ধ করেছে জাতিকে। রবি ঠাকুরের মতো তিনিও বেঁচে থাকবেন যুগযুগ ধরে। সমাপনী বক্তৃতায় ফজলুল কবির ভিকু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্যে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিসহ উপস্থিত সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সামাজিক ব্যক্তিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মকে কবিতার প্রতি, সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী করে গড়ে তুলার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!