• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আমার সাবস্ক্রাইবাররা আমার ফ্যামিলির মতো: লনি


মিতুল আহমেদ ডিসেম্বর ২৪, ২০১৬, ০৬:৫৩ পিএম
আমার সাবস্ক্রাইবাররা আমার ফ্যামিলির মতো: লনি

‘ব্রডকাস্ট ইয়োরসেলফ’ স্লোগান নিয়ে ২০০৫ সালে প্রথম যাত্রা শুরু করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভিডিও ব্লগ সাইট ‘ইউটিউব’। দৃশ্য ধারনের যে কোনো মাধ্যম দিয়ে ভিডিও তৈরি করে এই সাইটটির সহায়তায় বিশ্বময় দেখানো যায় নিজের সৃষ্টশীলতা। ইউটিউবের বয়স প্রায় একযুগ ছাড়িয়ে যেতে চললো। এরইমাঝে ভিডিও শেয়ারের এই মাধ্যমটি সারা বিশ্বে পেয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা। বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। হাজার হাজার ইউটিউব চ্যানেলে চারদিক ছয়লাব। বিনোদন, খেলাধুলা, প্রাঙ্কসহ নানা রকম শিক্ষামূলক ভিডিও কন্টেন্টও হরদম বানিয়ে সেগুলো শেয়ার করা হয় এই প্লাটফর্ম থেকে। যার সৃষ্টিশীলতা মানুষকে বেশি চমকে দেয়, আকৃষ্ট করে ঠিক হাজারো ইউটিউব চ্যানেলের ভিড়ে মানুষ শেষ পর্যন্ত সেটাই পছন্দ করে। লাইক করে, কমেন্ট করে, শেয়ার করে। মানুষ খোঁজে নেয় সেই চ্যানেলটিই। আর এমন সৃষ্টিশীল ও জনপ্রিয় একটি ভিডিও চ্যানেল ‘লনি’স ওয়ার্ক’! যিনি নিজের নামে এই চ্যানেলটি বানিয়েছেন তিনি সৈয়দ গোলাম তানভীর লনি। পেশায় একজন দন্ত চিকিৎসক। সম্প্রতি ‘লনি’স ওয়ার্ক নিয়ে রসবোধ সম্পন্ন সেই মানুষটির সঙ্গে কথা হলো নানা বিষয় নিয়ে। আলাপনের কিছু অংশ দেখে নিতে পারেন সোনালীনিউজ-এর পাঠকরা:

বাংলাদেশে অসংখ্য জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। লাখে লাখে সাবস্ক্রাইবারওয়ালা চ্যানেলও নেহায়েত কম নয়। কিন্তু রসবোধ সম্পন্ন সৃষ্টিশীল ভিডিও চ্যানেলের কয়টার খবর আপনার জানা আছে? কয়টার নাম নেয়া যাবে যেগুলো সস্তা বিনোদন দেয়া ছাড়াও দেখা মাত্রই আপনার মনকে ফুরফুরে করে দেয় বা কয়টা চ্যানেল পাওয়া যাবে যাতে আছে চিন্তার যোগ? যা আপনাকে ভাবাবে? কিন্তু যার উদ্দেশে বলা হচ্ছে, সেই ডক্টর লনি কি বলেন বলেন তার চ্যানেল সম্পর্কে?
আমার যখন যা মনে হয় সেটাই বানাই। আমার কন্টেন্টের কোনো স্পেশালিটি নাই। এখন যদি মনে হয় একটা গান করমু, তখন গান বানাই। কখনো প্রাঙ্ক কখনো বা ফানি ভিডিও। মানে যখন যা ভাল্ লাগে ঠিক তাই বানাই।

প্রাঙ্কগুলোতেতো অস্বস্তিকর ব্যাপারও ঘটে...
না। অস্বস্তিকর নয়। মজার ব্যাপার এগুলো। মানুষের যা মজা লাগে আমি সেটাই বানাই। আপনি বোধয় ব্রায়ের দোকানে প্রাঙ্ক ভিডিওটার কথা বলেছেন। কিন্তু এটাতো অস্বস্তিকর না। আমরাতো মুদির দোকানে গিয়ে ব্রা চাইনি। ব্রায়ের দোকানে গিয়েই ব্রা চেয়েছি। আর তারাও এটা বিক্রির জন্যই দোকান খোলে বসেছে। এটা অস্বস্তিকর কেনো হবে। লোকছাপারও কিছু নাইতো। যদি তাই হতো তাহলেওতো দোকানে লিখেই দিতো, এখানে সব সিক্রেট! এগুলো কিনতে চাওয়া আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ! আর সবচেয়ে বড়ো কথা, ব্রাতো খারাপ কিছু না। ছেলেরা যদি একটা সেন্ডু গেঞ্জি দোকানে গিয়ে খোলাখুলি চাইতে পারে তাহলে কেনো মেয়েরা নয়। কেনো তারা এটা কিনতে গিয়ে অস্বস্তি বোধ করবে। এটা আমি ডাক্তার হিসেবে না, মানুষ হিসেবে বলছি কিন্তু! একটা মেয়ের নিজের অন্তর্বাস কেনার স্বাধীনতা থাকবে না কেনো?             

ভিডিও কন্টেন্টে কি মেসেজ দেয়ার প্রবণা আছে লনি’র...?
না। আমি মেসেজ দিতে চাই না। মেসেজতো চাইলে, ভুল জিনিষকে দিয়েও বানানো যায়। কিন্তু এটা সত্য যে মাঝেমধ্যে অটোমেটিক মেসেজ দেয়া হয়ে যায়। কখনো দিতেও চাই। কিন্তু এটা আমার ইন্টেনশন থাকে না। ষোল ডিসেম্বরের একটা ভিডিও আছে, ওইটা মেসেজ দেয়ার জন্যই বানানো। আবার সব কন্টেন্টেই যদি মেসেজ দিতে থাকি, তাহলে মানুষ মহা বিরক্ত হয়ে যাবে। আর মেসেজ পাওয়ার জন্য বা দেয়ার জন্যতো আমাদের পাঠশালা আছেই। আমি নাহয় একটু ফানই করলাম। এখন যদি আমার চ্যানেলটা শিক্ষামূলক একটা চ্যানেল বানায়ে ফেলি তাহলেতো মজাই থাকবে না!         

ইউটিউবার হিসেবে যাত্রারম্ভ...
আমার বাবা-মা মিউজিকের লোক। দুজনেই বিটিভির স্পেশাল গ্রেডের শিল্পী। বাবা ফোকশিল্পী সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া এবং মা রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সালেহা বেগম লিয়া। জন্মের পর থেকেই সংগীতময় একটা পরিবেশে বেড়ে উঠি। ছোটবেলায় গান করতাম আমি। এক সময় সিডি করারও ইচ্ছে হলো। করলামও। ওয়ার্ল্ড মিউজিকের ব্যানারে ‘নষ্ট মানব’ নামে একটা অ্যালবামও আছে আমার। তখন গীটার কাঁধে ঘুরে বেড়াতাম। এখন যেরকম ডিএসএলআর’এর ট্রেন্ড, তখন কিন্তু গীটারের ট্রেন্ড ছিল। আমি পুরোদমে চেষ্টা করলাম। গীটারের পর কিবোর্ড দিয়েও চেষ্টা করলাম। নিজের ঘরে মিউজিক স্টুডিও হয়ে গেল। কিন্তু দেখলাম যে হিট হওয়ার কোনো সম্ভাবনায় নাই। কারণ ততোদিনে সিডির বাজার নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর আর গানের দিকে গেলাম না। নিজে নিজে ঘরে বসে প্রেকটিস করি, কিন্তু প্রফেশনালি আর নেয়া হলো না। পরে মোবাইল আর ডিজিটাল ক্যামেরায় ভিডিও ধারনের দিকে মন চলে গেল। প্রথমেতো এমনিতেই নিজে নিজে ভিডিও করতাম। ফেসবুকে দিতাম। কিন্তু পরে মনে হলো, আমিতো একটা ইউটিউব চ্যানেলই দিতে পারি। এরপরই নিজে নিজে ভিডিও করতে থাকলাম। একটা স্ট্যান্ডের উপর ক্যামেরা দাঁড় করায়ে নিজের ভিডিও নিজেই করতাম। আর আমার ভিডিওতে আমার বউ, দেড় বছরের মেয়ে টপ্পাকে অভিনয় করাতে থাকলাম। তা না হলে লোক কই পাবো! আর বানানো ভিডিওটা ইউটিউবে আপলোড দিয়ে মানুষকে যন্ত্রণা দিতাম। বলতাম, ভাই আমার ভিডিওটা শেয়ার দেন, লাইক দেন! অবশ্য এখনও এমনটা মানুষকে বলি আমি। আমার ভিডিওগুলো যে এখনও খুব একটা শেয়ার হয়, ভিউ হয় তেমন কিন্তু না।        

ইউটিউবে লনি’র সাবস্ক্রাইবার কতো...?
লনিকে যখন জিজ্ঞাস করা হল আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ‘সাবস্ক্রাইবার’ কত সেটা দেখা যায় না কেন? এই প্রসঙ্গে তার উত্তর শুনে বিস্মিত হই। তিনি বলেন তার সাবস্ক্রাইবার হাইড করা এবং তিনি তার সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা কাউকে দেখাতে চান না। কেন হাইড করে রাখেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাইনা কেউ আমার ভিডিও সাবস্ক্রাইবার এর নাম্বার দিয়ে বিচার করুক। ভিডিও যদি ভালো লাগে তাহলে সবাই অবশ্যই তা দেখবে আর তারা যেন নেক্সট ভিডিও মিস না করে সেজন্য তারাই সাবস্ক্রাইব করবে। সাবস্ক্রাইব করাটা আসলে সাবস্ক্রাইবারদের কাজ, তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য। আমি আমার সাবস্ক্রাইবার দেখাইনা হাইড করে রাখি। কারন আমি টেনশন নিতে চাইনা। আমি যদি পারতাম আমি আমার ভিডিও ভিউ ও হাইড করে রাখতাম। সাবস্ক্রাইবার দেখালে অনেক ইউটিউবার বা অনেক দর্শকদের কাছে হয়ত নাম্বার তা অনেক বেশি লাগবে আবার অনেকের কাছে হয়তো অনেক কম লাগবে। যে কারনে হয়তো অনেকের কাছে আমি অনেক জেলাস-এর পাত্র হয়ে যাব, আবার অনেকে হয়তো অনেক বেশি আন্ডার ইসটিমেট করবে। আর আমার মধ্যেও ভিডিও বানানোর চাইতে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানো নিয়ে বেশি চিন্তা কাজ করবে। আর আমি আসলে আমার সাবস্ক্রাইবার বা ফেসবুক পেজে যারা আছে তাদের কাছে অনেক বেশি থ্যাঙ্কফুল। কারন তারা আসলে শুধু সাবস্ক্রাইবার না। আমার বাবার ক্যান্সার এর প্রবলেম। তারা তো শুধু সাবস্ক্রাইবার কিন্তু তারা নিয়মিত খোঁজ নেয়, লনি ভাই আপনার বাবার অবস্থা এখন কেমন, এভাবে জানতে চান প্রতিনিয়ত? আর আমি নিজেও জানতাম না এমন হবে। যতবার আমার বাবার রক্ত দরকার হয়েছে প্রতিবার আমার সাবস্ক্রাইবাররাই নিজ উৎসাহে বার বার ব্লাড দিয়েছে। এক ব্যাগ ব্লাড লাগলে ২ , ৩ জন কোথা থেকে চলে এসেছে। তারা তো আমার কেউ না। তারা তো জাস্ট সাবস্ক্রাইবারস,  তাইনা?  তারা নিয়মিত আমি কেমন আছি আমার বাসার অন্যান্য ফ্যামিলি মেম্বারসরা কেমন আছে সেটার খোঁজ নেয়। তারা তো জাস্ট সাবস্ক্রাইবারস, তাইনা? দিজ আর মাই সাবস্ক্রাইবারস। তারা শুধু সাবস্ক্রাইবার না , তারা অনেকটা আমার ফ্যামিলি র মতো।
ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে কতো টাকা আয় করেন লনি...?
যারা কন্টেন্ট বানায় না। তাদের মোটামুটি একটা ধারনা যে, এখান থেকে বোধয় অনেক টাকা কামানো যায়। তার কারণ তারা পত্রিকায় পড়ে অভ্যস্ত যে ইউটিউব চ্যানেলে লাখ লাখ ভিউ হলে লাখ লাখ টাকাও ইনকাম করা যায়। আসলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অন্তত আমি এমনটা পায়নি। আমি যা দেখি আমার চ্যানেলে যে, প্রতি দুই তিন মাস পরে পরে দেখা যায় ২০ ডলারের মতো জমতে। ভিউয়ার্সের তুলনায় যা খুবই সামান্য। আর লাখ লাখ টাকা কামানোর বিষয়টা সম্পর্কে আমি ভালো জানিও না। ভিউ হলে যে টাকা ইনকাম করা যায়, এমন হলে ইউটিউবতো বলতো। লাখ লাখ টাকা ইনেকামের বিষয়টা আসলে একটা ভুল ধারনা, মানুষ এর তার কাছ থেকে শুনে এমনটি বলে। এটা ডিপেন্ড করে অনেককিছুর উপর। অ্যাড এখানে ফ্যাক্টর। কন্টেন্ট দেশি নাকি বিদেশি। দেশি হলে এক রকম অ্যাড, বিদেশি হলে অ্যাডের রেট আরেক রকম। তাছাড়াও কন্টেন্টে যে অ্যাড দেয়া হয়, সেটা ভিউয়ার্স ক্লিক করে কিনা সে বিষয়টাওতো মাথায় রাখতে হবে। অ্যাডে ক্লিক করলে টাকা আসবে, না হলে আসবে না। লাখ ভিউ হইলেই যদি টাকা আসতো তাহলেতো আর অ্যাডের মেজারমেন্টাই থাকতো না!  

কন্টেন্ট বানিয়ে সবাই টাকা পায়, লনি পায় না...
ইউটিউবে প্রায়শই লনি’র ভিডিও কন্টেন্ট চার লাখ, পাঁচ লাখ ভিউ হলেও তার চ্যানেলে কোনো টাকা জমে না। কিন্তু কেনো? জানতে চাইলে লনি খিক খিক হেসে বলেন, এটা হয়তো আমার সমস্যা। বা আমার চ্যানেলে সমস্যা। কিংবা আসলে কেউ হয়তো টাকা পাচ্ছে না। কিন্তু লাখ লাখ ভিউয়ের বিণিময়ে প্রচুর টাকা ইনকামের ভুয়া খবর দিয়ে লাইম লাইটে আসতে চাইছে। আমার ধারনা, ইউটিউবে হিটটা বাড়ানোর জন্য চাপা মারছে। ফলে নিউজ হচ্ছে তাকে নিয়ে, কিংবা কখনো কখনো ইউটিউব কন্টেন ক্রিয়েটরের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে কেউ কেউ বিজ্ঞাপনও বানিয়ে নিচ্ছে। অন্তত এসবতো হচ্ছে! কারন টাকা ইনকামের বিষয়টার প্রমান আমি পাই নাই। যারা আমার কথা বিশ্বাস করছেন না, তাদেরকে বলি। ইউটিউব সবার জন্য অপেন। দয়া করে প্লিজ একটি চ্যানেল খুলুন আর দেখুন আসল ঘটনা কি?

ইনকাম ছাড়া ভিডিও যে কারণে ভিডিও বানান লনি...
টাকা পয়সা রোজগার ছাড়াই অনবরত ভিডিও বানিয়ে শেয়ার করে যাচ্ছেন লনি। কিন্তু কেনো সেটা? তার সোজাসাপ্টা উত্তর, মজা লাগে। টাকা পাইতে কার না ভালো লাগবে! আমিতো পাচ্ছি না। সহরজ রাস্তা খুঁজছি টাকা ইনকামের, কিন্তু সেটাতো হচ্ছে না। এখন আমি যদি টাকার বিষয়টা খুঁটায়ে দেখতে যাই তাহলে আর আমার কন্টেন্ট বানানো লাগবে না! আমার মূল কথা হচ্ছে, আমি যেটা বানাই সেটা যদি মানুষ দেখে এবং মানুষের ভালো লাগে তাইলেই আমি খুশি। এর বেশি কিছু না। তবে বেশী ভালো লাগে যখন ভিডিও কেউ শেয়ার করে।আর এইসবের ভেতর দিয়ে যদি কিছু টাকা আসে তাইলে বেটার।

ফ্যানদের কোনো ইমোশন কি অনুপ্রাণিত করে না লনিকে...?
আমি সবসময় নিজে নিজে অনুপ্রাণিত। মানুষের কারণে অনুপ্রাণিত হলেতো আমি এতোদিনে ধ্বংস হয়ে যেতাম। কারণ মানুষ আমাকে যে পরিমাণ ব্যাড কমেন্ট দিছে, ওগুলো যদি মাথায় নিতাম তাহলে এতোদিনে চ্যানেল বন্ধ করে অন্যান্য ইউটিউব চ্যানেলও বন্ধ করতে বলতাম। কারণ মানুষ কখনো প্রশংসাও ঠিকঠাকভাবে করবে না, আবার মন্দটাও ঠিকঠাকভাবে বলবে না। এগুলো মাথায় নিলে আপনি ধ্বংস হয়ে যাবেন। 

একটা প্র্যাঙ্ক ভিডিও করেছিলাম। ওইতো রাস্তায় অপরিচিত মানুষরে দেখলে হঠাৎ কেউ বলে উঠে না যে, আরে দোস্ত তুই কই ছিলি? আসলে ওইটা তার দোস্ত না। কিন্তু পরে বলে যে, সরি ভাই। আমি ভাবছিলাম আমার দোস্ত আপনি। তো এমন একটা ব্যাপার নিয়া আমরা রাস্তায় প্র্যাঙ্ক ভিডিও করতে নামলাম। আমার মনে হইছে কুদ্দুস, আক্কাস, রহিম এই টাইপ নামগুলো বাংলাদেশের গ্রাম্য নাম হিসেবে খুব প্রচলিত। আমি ভাবলাম প্র্যাঙ্ক করার সময় এই নামগুলোই বলবো।

প্র্যাঙ্কের বিষয়টা ছিল অপরিচিত মানুষকে মাথার চুল টেনে জিজ্ঞেস করা, আরে দোস্ত তুই কই ছিলি? তো রাস্তায় আমরা অপরিচিত মানুষরে দেখে চুল টেনে বললাম, আরে কুদ্দুস! বা ওরে আক্কাস! তো এই ভিডিওটা নিয়া রীতিমত বাজে কমেন্টে ভরে গেল। থাকে না কিছু মানুষ, যারা শুধু শুধু খারাপ বলতেই উৎসুক হয়ে থাকে। খারাপ কিছু না পেলেও বিভিন্ন দিক খুঁজে বের করে খারাপ কিছুর। তো তারা এই ভিডিওতেও চরম সৃষ্টিশীলতার সাথে খারাপ কিছু বের করে ফেললো। যারা সব সময় খারাপ বলার ধান্ধায় থাকে, তারা কখনো ধার্মিক এঙ্গেল থেকে খারাপ বলবে, না হয় সোশাল দিক থেকে খারাপ বলে। তো এই ভিডিওর কমেন্টে তারা আমাকে বললো, এটা একটা খারাপ ভিডিও। জানতে চাইলে বললো, কুদ্দুস আল্লাহর একটি নাম। আপনি কুদ্দুস নামকে ইনসাল্ট করেছেন। এটা আপনি ধর্ম বিরোধী কাজ করেছেন। এখন এইরকম যারা বুঝেন তাদেরকে কিভাবে বোঝাবেন! কোন যুক্তি দিয়ে বোঝানো সম্ভব যে আমরা যারা ভিডিওটি বানিয়েছি এটা শুধুই ফান। এটাকে এতো গুরত্ব দিয়ে দেখার কিছু নাই। আর আমরাতো একজন ব্যক্তির নাম নিয়ে এই প্র্যাঙ্কটা করিনি। একজন অপরিচিত মানুষকে জাস্ট চুল টানার বিষয়টা এইখানে প্রধান। তাও ভিডিওর কোথাও সেই মানুষটার নাম নিয়ে খারাপ কিছু বলা হয় নাই। তো এরকমভাবে সবাই যদি ব্যাড কমেন্ট করেন না বোঝে, তাহলে সমস্যা। এইসব অতিভক্তিওয়ালা মানুষ খুব বিপজ্জনক। ভালো জিনিষরে খারাপ বানায়ে দিয়ে তারপর ধর্ম নিয়ে এসে একটা হযবরল পাকায়ে ফেলবে। আমরাতো জাস্ট অপরিচিত একটা মানুষের সাথে একটু মজা করেছি, তার নামকে নিয়েতো না। তাও নাম কিংবা ওই মানুষটার কোনো অবমূল্যায়ন না করে। 

‘লনি ওয়ার্কস’-এর জনপ্রিয় কয়েকটি ভিডিও কন্টেন্ট:

 

 সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিএল

Wordbridge School
Link copied!