• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আরও একটি ফাইনাল আবারও আফসোস বাংলাদেশের


ক্রীড়া প্রতিবেদক মার্চ ১৮, ২০১৮, ১১:৩৯ পিএম
আরও একটি ফাইনাল আবারও আফসোস বাংলাদেশের

ঢাকা: শেষ বলে ভারতের প্রয়োজন ৫ রান। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে উৎসবের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। বল করলেন সৌম্য সরকার। সব শেষ! দিনেশ কার্তিকের এক ছক্কায় সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের। তার মানে আরও একটি ফাইনাল আবারও আফসোস বাংলাদেশের। না এবারও হলো নাহ! একেবারে নিকটে গিয়েও ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিদাহাস ট্রফিতে চুমু আঁকা হলো না সাকিবদের। এ নিয়ে পঞ্চমবার ফাইনালেই স্বপ্নভঙ্গ, বেদনা-হতাশার ইতিহাস। নিঃশ্বাস দূরত্বে থাকা শিরোপা উঁচিয়ে উল্লাস করেছে প্রতিপক্ষ শিবির, টাইগার শিবির তা শুধু চেয়ে চেয়েই দেখলো।

বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে নিদাহাস ট্রফি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের শিরোপা জিতে নেয় ভারত। ফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান তুলে শিরোপার স্বাদ নেয় টিম ইন্ডিয়া।

রোববার (১৮ মার্চ) কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেয় ভারত। ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। উদ্বোধণী জুটিতে ২৭ রান যোগ করেন তারা। এরপরই বিচ্ছিন্ন হন তারা। ১১ রানে থাকা লিটনকে ফিরিয়ে ভারতকে প্রথম ব্রেক-থ্রু এনে দেন অফ-স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর।

লিটন ফিরে যাবার ৬ বল পর বিদায় ঘটে আরেক ওপেনার তামিমেরও। ১৩ বলে ১৫ রান করে আউট হন তামিম। ২৭ রানেই পরপর দু’উইকেট হারিয়ে চিন্তায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চিন্তা আরও বাড়িয়ে দেন চার নম্বরে নামা সৌম্য সরকার। ২ বল মোকাবেলা করে ১ রান করে সৌম্য ফিরে গেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৩৩।

এমন অবস্থায় বাংলাদেশকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমান ও মুশিফকুর রহীম। দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। তবে দলের স্কোরটা বেশি দূর নিতের পারেননি সাব্বির ও মুশফিক। ৩১ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন তারা। এরমধ্যে ৯ রান অবদান রেখে থেমে যান মুশফিক।

দলীয় ৬৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর আবারো বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। সাব্বির ও মাহমুদুল্লাহ জুটিতে শতরানের কোটা পেরিয়ে যায় টাইগাররা। কিন্তু বাংলাদেশের স্কোর তিন অংকে পৌছানোর পরই থামতে হয় মাহমুদুল্লাহকে। সাব্বিরের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হন মাহমুদুল্লাহ। ১৬ বলে ২১ রান করেন তিনি। সাব্বিরের সাথে ৩৬ রান যোগ করেন মাহমুদুল্লাহ।

মাহমুদুল্লাহ’র মত রান আউট হয়েছেন সাকিবও। ৭ বলে ৭ রান করেন টাইগার দলপতি। জুটিতে ২৯ রান আসার পর বিচ্ছিন্ন হন তারা। এর মধ্যে ২২ রানই ছিলো সাব্বিরের। এরমধ্যেই টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সাব্বির। শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে ৭৭ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ৭টি চার ও ৪টি ছক্ক ছিলো। শেষেরদিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ৭ বলে অপরাজিত ১৯ রানে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান করে বাংলাদেশ। ভারতের পক্ষে চাহাল ৩টি উইকেট নেন।

শিরোপা জয়ের জন্য ১৬৭ রান করতে হবে ভারতকে। এমন লক্ষ্যে ভালো শুরু করেও তা ধরে রাখতে পারেনি টিম ইন্ডিয়া। দুই ওপেনার ১৬ বলে ৩২ রান এনে দেন দলকে। ধাওয়ানকে ১০ রানে থামিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন সাকিব। এরপর শুন্য হাতে ফিরতে হয় তিন নম্বরে নামা সুরেশ রায়নাকে। উইকেটটি নেন রুবেল হোসেন।

৩২ রানে দুই উইকেট হারানোর পর ভারতকে সামনের দিকে টেনে নিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুল। ৩৬ বলে ৫১ রানের জুটি গড়েন তারা। এতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নেয় ভারত। তবে ১৫ রানের ব্যবধানে রাহুল ও রোহিতকে তুলে নিয়ে দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ।

২৪ রানে রাহুলকে শিকার করেন রুবেল। আর ৪২ বলে ৫৬ রান করা রোহিতকে বিদায় দেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। রোহিতের ইনিংসে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো। রোহিত যখন ফিরেন তখন ৬ উইকেট হাতে নিয়ে ৪০ বলে ৬৯ রান দরকার ভারতের। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ বোলারদের দুর্দান্ত বোলিং-এ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ভারত। কারন শেষ ১২ বলে ভারতের দরকার পড়ে ৩৪ রান। এমন অবস্থায় ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে বাংলাদেশ।

কিন্তু নিজেদের ইনিংসের ১৯তম ওভারে বাংলাদেশের বোলার রুবেলের ছয় বল থেকে ২২ রান আদায় করে ভারতের উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিক। এতে শেষ ওভারে ১২ রান প্রয়োজন পড়ে ভারতের। বল হাতে আক্রমনে আসেন বাংলাদেশের সৌম্য। নিজের করা প্রথম ২ ওভারে ২০ রান দিয়েছিলেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে একটি ওয়াইডসহ ৩ রান দেন তিনি। তাই শেষ ৩ বলে ৯ রান প্রয়োজন পড়ে ভারতের।

চতুর্থ বলে বাউন্ডারি আদায় করেন নেন ভারতের শঙ্কর। তবে পঞ্চম বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি। তাই শেষ বলে জিততে ৫ রান এবং ম্যাচ টাই করতে ৪ রান দরকার পড়ে ভারতের। সৌম্যর শেষ ডেলিভারিটি শুন্যে ভাসিয়ে সীমানা ছাড়া করে ভারতকে অবিস্মরনীয় জয় এনে দেন কার্তিক। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮ বলে অপরাজিত ২৯ রান করেন কার্তিক। বাংলাদেশের রুবেল ২টি উইকেট নেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!