আরও দুই তরুণ ‘নিখোঁজ’

ঢাকা : একসঙ্গে চার তরুণ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার রহস্য উদঘাটন না হতেই আরো দুই তরুণ নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন- ইমরান ফরহাদ (২০) ও সাঈদ আনোয়ার খান (১৮)। এ দুজনের মধ্যে ইমরান ফরহাদ কেয়ার মেডিকেল কলেজের ছাত্র। আর সাঈদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। এ ঘটনায় রাজধানীর বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বনানী এলাকা থেকে একসঙ্গে চার তরুণ নিখোঁজ হন। তারা হলেন- সাফায়েত হোসেন, জায়েন হোসাইন খান পাভেল, মোহাম্মদ সুজন ও মেহেদী হাওলাদার। এদের মধ্যে সাফায়েত ও পাভেল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত তাদের বিষয়ে কোনো তথ্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের উপ-পুলিশ কমিশনার মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘নিখোঁজের বিষয়গুলো আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এগুলো খতিয়ে দেখছি। এরা কিভাবে নিখোঁজ হয়েছে এবং কোথায় আছে তা জানার চেষ্টা চলছে।’

নিখোঁজ ইমরান ফরহাদের ফুফাতো ভাই আল-মামুন জানান, ‘ইমরান ফরহাদ মোহাম্মদপুরের কেয়ার মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে পড়ত। পরিবারের সঙ্গে সে মাটিকাটা এলাকার ১৪৫/এ নম্বর বাসায় থাকত। গত ২৯ নভেম্বর সকালে মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’

তিনি আরো জানান, ‘প্রথমে তারা আত্নীয়স্বজন ও বন্ধুদের কাছে ইমরানের খোঁজ করেন। ২ ডিসেম্বর তারা ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তারা বুঝতে পারছেন না ইমরান আসলে কোথায় গেছে বা তার কী হয়েছে। ইমরান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের সদস্যরা সবাই ভেঙে পড়েছে।’

মামুন জানান, ‘ইমরানের বাবার নাম আসাদুজ্জামান। তিনি প্রবাসী। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। ইমরানদের পরিবার খুবই ধার্মিক। তবে তারা উগ্রপন্থা পছন্দ করেন না। ইমরান উগ্রপন্থী কোনো ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হতে পারে বলে তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না।’

এদিকে সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান সাঈদ আনোয়ার খান। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সাঈদের বাবা আনোয়ার সাদাত খান বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। জিডি নম্বর ৪৩১। আনোয়ার সাদাত খান জিডিতে উল্লেখ করেছেন, তিনি পরিবার নিয়ে বনানীর বি ব্লকের ২১ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাসায় থাকেন। নিখোঁজ হওয়ার আগে তার ছেলের পরনে কালো প্যান্ট ও কালো জ্যাকেট ছিল। তার উচ্চতা ছয় ফুট।

পুলিশের বিশেষ শাখার একটি সূত্র জানায়, নিখোঁজ সাঈদ আনোয়ার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তার বাবা একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেও জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গত ১ ডিসেম্বর একসঙ্গে চার তরুণের নিখোঁজ হওয়ার রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই চার তরুণের অবস্থান ও নিখোঁজ হওয়ার রহস্য জানতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, র‌্যাবসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, ‘পুলিশ তাদের অবস্থান ও নিখোঁজ হওয়ার রহস্য জানতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।’ 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি