• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আর্থিং রডের গুণগত মান নিশ্চিতের নির্দেশ


আদালত প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭, ০৪:১৬ পিএম
আর্থিং রডের গুণগত মান নিশ্চিতের নির্দেশ

ঢাকা: বৈদ্যুতিক সংযোগে আর্থিংয়ের রড (গ্রাউন্ডিং রড) ব্যবহারে গণগত মান নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে আর্থিংয়ের রড ব্যবহারে গুণগত মান ব্যবহারে নিশ্চিতের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট পাঁচজনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এই আদেশ দেন।

মিজান মিয়া নামের এক ইলেকট্রিশিয়ানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রাশেদুল হক। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।

আদেশের পর রাশেদুল হক জানান, গত ৫ মে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ‘নিম্ন মানের গ্রাউন্ডিং রড, ঝুঁকিতে জীবন ও বিতরণ ব্যবস্থা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি যুক্তকরে রিট আবেদনটি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুতের নতুন সংযোগে নকল আর্থিং রডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্যুতের মাটির নিচের ব্যবহৃত এ সব আর্থিং রড নিয়ে ভয়াবহ জালিয়াতি চলছে। সংঘবদ্ধচক্র পুরনো ঢাকার ধোলাইখাল, ধূপখোলা, যাত্রাবাড়ী ও লালবাগসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধ কারখানায় গোপনে এ সব রড নকল তৈরি করে বিক্রি করছে। নিম্নমানের রং করা এ সব রড পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের বিভিন্ন কাজে লাগানো হচ্ছে। যা ব্যবহার বিপদজনক ও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

অপরদিকে নকল রডসহ অন্যান্য নকল সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তালিকাভুক্ত আর্থিং রড ব্যবসাসীরা নকলবাজদের দাপটে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। অনেকেই দিনের পর দিন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর নকলের কারণে গ্রাহকের টিভি, ফ্রিজ, ফ্যান ও লাইটসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বার বার নষ্ট হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন। আর্থিং রড ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ২০১২ সাল থেকে পল্লী বিদ্যুৎ প্রতি মাসে আড়াই লাখের বেশি নতুন সংযোগ দিয়ে আসছে। বর্তমান সরকারের আশ্বাস মতে, ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে। এ টার্গেট নিয়ে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার কাজ এগিয়ে চলছে।

২০১৪ সাল থেকে গ্রাহকরা নিজেই খোলাবাজার থেকে অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের সঙ্গে আর্থিং রড ও প্লাস্টিক মিটার বোর্ড কিনে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের আগে পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড আর্থিং রডের নমুনা ও তাতে কি ধরনের উপকরণ থাকতে হবে তা নির্ধারণ করে দেয়। এ সব উপকরণের মধ্যে গ্যালভানাইজিং করাসহ বিভিন্ন পরিমাপ নির্ধারণ করে দেয়। এ উপকরণে রডের ওজন, রডের জিংক, ওয়েল্ডিং রডের নির্দিষ্ট পরিমাপসহ বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে সরবরাহ করতে হয়। কিন্তু নকল রডের ক্ষেত্রে কোন শর্ত পূরণ করা হয় না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে রড নকল থেকে শুরু করে পল্লী বিদ্যুতের সরঞ্জামে নানা ধরনের জালিয়াতি করছে।

সূত্রমতে ব্যয়বহুল পদ্ধতির আর্থিং রড মাটির নিচে কাজ করে। তাই এই রড তৈরিতে সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। রডগুলোতে মরিচা বা জং যেন না ধরে সেজন্য গ্যালভানাইজিং করা হয়ে থাকে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ শুরু থেকে নিয়ম মেনে চলে আসছে। আর নিয়মগুলো নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতামূলক নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে, কঠোর এ নিয়মের পরেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কিছু সংখ্যক অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে হাতে রং করা আন্ডার সাইজের নিম্নমানের গ্রাউডিং রড ব্যবহার করে আসছে। যা গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। নকল রডের কারণে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!