• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আ.লীগ-জাপার লড়াই, চমকের আশায় বিএনপি


রংপুর প্রতিনিধি আগস্ট ১২, ২০১৭, ০১:৪৯ পিএম
আ.লীগ-জাপার লড়াই, চমকের আশায় বিএনপি

ঢাকা : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রংপুরের ছয়টি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের পক্ষে চলছে প্রচার-প্রচারণা। সবক’টি আসনেই জয়ের স্বপ্ন দেখছে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। কার্যত রংপুরের সবক’টি আসনেই ভোটযুদ্ধ হবে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে। তবে রংপুর-৩ (সদর), রংপুর-৪ আসন (পীরগাছা-কাউনিয়া) ও রংপুর -৬ (পীরগঞ্জ) আসনে নিজেদের শক্তিশালী প্রার্থী থাকায় চমকের আশায় আছে বিএনপি।

রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া): এ আসনে ষষ্ঠ থেকে দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির স্থানীয় কোনো নেতা প্রার্থী হতে পারেননি। রংপুর-৩ ও রংপুর-৪ আসনের নেতারা প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবার আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু ও শিল্পপতি সিএম সাদিক।

জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের ভাতিজা সাবেক এমপি হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ পার্টির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহেদুজ্জামান মাবু ও যুগ্ম সম্পাদক মোকাররম হোসেন সুজন। এছাড়া রংপুর জেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক খায়রুল আলম বাবুর এ আসনে নির্বাচন করার কথা শোনা যাচ্ছে।

রংপুর-২ (তারাগঞ্জ-বদরগঞ্জ): এ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আনিছুল হক চৌধুরীর ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান টুটুল চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ সরকার বিটু নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার জন্য জোর লবিং চালাচ্ছেন।

জাতীয় পার্টির সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী সাবলু ও ঢাকা দক্ষিণ জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম শাহাদত মনোনয়ন চাইবেন।

বিএনপির উপজেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী সরকার ও বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কমল লোহানী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এছাড়া জাসদের (আম্বিয়া-প্রধান) আবদুস সাত্তার ও জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য ব্যবসায়ী জয়চন্দ্র প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

রংপুর-৩ (সদর): এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদ। তিনি এ (সদর ও সিটি করপোরেশন) আসনে পরপর চারবার এমপি নির্বাচিত হন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন তার ভাই দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের। আগামী নির্বাচনে এ আসনেই লড়বেন এরশাদ।

এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক আমলা চৌধুরী খালেকুজ্জামান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবির) পরিচালক অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম।

আগামী নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনজন। তারা হলেন- মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুজ্জামান সামু, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম মণ্ডল ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন।

অন্যদিকে, এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জেলা সিপিবি নেতা কমরেড শাহাদাত হোসেন, বাসদের জেলা সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু ও আবদুল কুদ্দুস, ইসলামী আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাজিরুল ইসলাম লিটন, জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য সচিব রেয়াজ উদ্দিন এবং জাসদের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সাবেক জেলা সভাপতি ডা. একরামুল হোসেন স্বপন।

রংপুর-৪ (কাউনিয়া-পীরগাছা): এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে পরপর দুবারের এমপি টিপু মুনশী এবারও মনোনয়ন চাইবেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরা সেখানে টিপু মুনশীর বিকল্প কাউকে দেখছেন না। তবে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম মাসুদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে তার সমর্থকরা জানান।

এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন দুজন। তারা হলেন- যুবলীগ থেকে সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগ দেয়া বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল ও সাবেক পীরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবুর রহমান।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন রংপুর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ভরসা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান রহিম উদ্দিন ভরসার জ্যৈষ্ঠ পুত্র ও রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শিল্পপতি এমদাদুল হক ভরসা, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কর্নেল (অব.) আবদুল বাতেন। এছাড়া জেলা নাগরিক ঐক্যের সদস্য রফিকুল ইসলামও নির্বাচন করতে পারেন।

রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর): এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে তিনবার এমপি হয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী এইচএন আশিকুর রহমান। এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। স্থানীয় নেতাদের কেউ কেউ বলছেন, বয়সের কারণে আশিকুর রহমান প্রার্থী না হলে তার ছেলে রাশেক রহমানকেই প্রার্থী করা হতে পারে।

এ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোতাহার হোসেন মওলা এবং মিঠাপুকুর উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সরকার নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী। এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা সভাপতি শিল্পপতি এস এম ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর।

এছাড়া বিএনপির সাবেক এমপি খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল, জেলা বিএনপির সদস্য অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ তালুকদার ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি খাজা নূর খাজা, শিল্পপতি আখতার হোসেন ধানের শীষের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ): এ আসনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে স্থানীয় নেতারা নিশ্চিত করেছেন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে এই আসনে শেখ হাসিনা জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর মোহাম্মদ মণ্ডলের কাছে সামান্য ভোটে পরাজিত হলেও নবম ও দশম সংসদ নির্বাচনে পরপর এমপি হন। তখন থেকেই এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে।

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রংপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুল ইসলাম এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যান সাবেক এমপি নূর মোহাম্মদ মণ্ডল। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে পীরগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যবসায়ী নূরে আলম যাদু দলীয় চেয়ারম্যানের সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!