ঢাকা : আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-২ আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচার-প্রচারনা শুরু করেছে। এ আসনে আ.লীগে ও বিএনপিতে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। ৩০ বছর ধরে আসনটি ধরে রেখেছেন আ.লীগের বর্তমান এমপি আলহাজ্ব দিবরুল ইসলাম। তবে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে জানা গেছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন: বর্তমান এমপি ও জেলা আ.লীগের সভাপতি আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মোস্তাক আহমেদ টুলু, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার রায়, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি দবিরুলের ছোট ভাই সফিকুল ইসলাম। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জেড মূতুর্জা তুলা, ডক্টর এসোসিয়েসন অব বাংলাদেশ-ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. আবদুস সালাম। জাতীয় পার্টির-কেন্দ্রীয় মহিলা পার্টির সহ-সভাপতি নুরুন নাহার বেগম। জামায়তে ইসলামীর- জেলা আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের নাম শোনা যাচ্ছে।
এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কাজ করতে দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে দলকে পুনর্বিন্যাস, সভা-সেমিনার, সেবামুলক কর্মকান্ড ও নেতা-কর্মীদের আন্তরিক হয়ে কাজ করার আহবানের বিষয় রয়েছে। আ.লীগের পক্ষে বর্তমান এমপি আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম ও বিএনপির প্রার্থী সেই সাথে অন্যান্য দলের আগ্রহীদের ইতিমধ্যে নির্বাচনকেন্দ্রিক জনসংযোগ ও কর্মীসভা করতে দেখা যাচ্ছে। অপরদিকে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রবীর কুমার রায়, জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মোস্তাক আলম টুলু, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামকে নানা রকম অনুষ্ঠান, মিটিং, অনুদান প্রদান ও নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা গেছে। অন্যদিকে, মাঠপর্যায়ে নানামুখী প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন অন্যান্য দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও।
বর্তমান এমপি আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম জানান, এলাকার আশাতীত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসজিদ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত করেছি। এছাড়াও আমি প্রত্যাশা করি এ আসনের ভোটাররা আমাকে পুনরায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর কুমার বলেন, আমি সব সময় তৃনমুল আপামর জনগনের পাশে থেকেছি। তাদের সুখ-দুঃখে নানামুখী কর্মসূচী গ্রহন করেছি। বর্তমানে এ জনপদের সঠিক চিত্র ভালভাবে নেত্রীর কাছে উপস্থাপন হলেই এ আসনে আমাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. মোস্তাক আলম টুলু জানান, এই আসনে আ.লীগে মানুষ নতুন মুখ চায়। বর্তমান এমপিকে মনোনয়ন দিলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই নতুন কেউ মনোনয়ন পেলে নৌকা মার্কার জয় নিশ্চিত হবে।
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম জানান, এই এলাকার সাধারণ মানুষের সুখে-দুখে পাশে আছি, থাকতে চাই। তাই আমি মনোনয়ন প্রত্যাশা করি। তবে আ’লীগের সকল প্রার্থী একই সুরে জানান, দলীয় নেত্রী যাকেই মনোনয়ন দেবেন সবাই তার হয়েই কাজ করবেন।
বিএনপির পক্ষে কেন্দ্রীয় ড্যাব নেতা ডা. আবদুস সালাম জানান, তিনি ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। কেন্দ্রীয় নেতা জেড মূতুর্জা তুলা জানান, এই আসনের মানুষ পরিবর্তন চায়। আওয়ামী লীগের বর্তমান ইমেজ অনেক কারণে নষ্ট। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় গনসংযোগ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে দলকে সুসংগঠিত করার কাজ করছি। নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনয়নের জন্য ৩০০ আসনেই একক প্রার্থী দেয়ার কথা থাকলে এ আসনে মনোনয়নের জন্য ইতিমধ্যে তোড়-জোর শুরু করেছেন নুরুন নাহার বেগম। তাকেও নানামুখী কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করতে দেখা যাচ্ছে।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন দলের পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নানামুখী কর্মকান্ড চলছে। ওই দলগুলো থেকে কে পাবে মনোনয়ন সেটার জন্য অপেক্ষায় থাকা। এ আসনের ভোটাররা পুরাতন ইতিহাস মুছে ফেলে ৩০ বছর ধরে দখলে রাখা প্রার্থীকে টপকিয়ে মনোয়ন পাবে কিনা। সেই সাথে জামায়তে ইসলামী দলটি কোনঠাসা হওয়ায় আবদুল হাকিম প্রার্থী হবেন কিনা এবং কি বিএনপির ২ প্রার্থীর সাথে মিলেমিশে জোটে থাকা একক প্রার্থী দিবে বিএনপি-জামায়ত সেটার অপেক্ষা। তবে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কোন দলে কে মনোনয়ন পাবে? সেটার দিকে তাকিয়ে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মানুষ সেই সাথে ঠাকুরগাঁওবাসী।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :