• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আ.লীগের সঙ্গে থেকেই নির্বাচন করার চিন্তা জাপার


সোনালী বিশেষ নভেম্বর ১৭, ২০১৭, ০২:২৮ পিএম
আ.লীগের সঙ্গে থেকেই নির্বাচন করার চিন্তা জাপার

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গেই মহাজোটে থেকে পরবর্তী সরকারের অংশ হতে চায় সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)। মারাত্মক কোনও বিপর্যয় বা মেরুকরণ না ঘটলে নির্বাচনে দলটির এ অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হবে না বলে মনে করছেন দলটির নীতি নির্ধারকরা।

জাপার বেশিরভাগ নেতা মনে করেন, বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টিও সরকারের অংশীদার হয়েই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। জাপার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অন্তত চারজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টি উঠে আসে।

তারা জানান, নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে দুই ধরনের চিন্তা রয়েছে জাতীয় পার্টির। তবে উভয়ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গেই থাকতে চায় দলটি। যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে, তবে মহাজোট ছেড়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এককভাবে নির্বাচন করে আবারও প্রধান বিরোধী দল হওয়ার ইচ্ছা জাপার। সেক্ষেত্রে চলমান মেয়াদের মতো সরকারের মন্ত্রিসভায় ও বিরোধীদলে থাকা সহজ হবে দলটির।

দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এখন পর্যন্ত জাপার কয়েকজন নেতা সরকারের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটেও শরিক হিসেবে রয়েছে দশম সংসদের বিরোধী দলটি। ফলে, আগামী নির্বাচনের বিষয়ে আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে কিছুই ভাবছে না দলটি।

জাপার শীর্ষ দায়িত্বশীল নেতারা দাবি করেছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে থেকেই নির্বাচনের চিন্তা এখনও স্থিতিশীল রয়েছে। এক্ষেত্রে দলটির নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোট করা হলেও এই জোট থেকে নির্বাচন করার কোনও চিন্তাই নেই দলটির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন এককভাবে করবো নাকি জোটগতভাবে করবো, সেটা বলার সময় আসেনি। ভবিষ্যতই বলবে, আমাদের নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে। তবে সময়ের দাবিকে উপেক্ষা করা যায় না। দেশ ও দলের স্বার্থ এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।’

নির্বাচনের অংশ নেয়ার বিষয়ে মহাসচিব ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেও জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী বলেছেন পরিষ্কার করেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই সাবকন্টিনেন্টে জোটের রাজনীতি চলছে। বাংলাদেশও জোটগত রাজনীতি অব্যাহত আছে। ভবিষ্যতে জোটগত রাজনীতি আরও বিকশিত হবে। আমরা আওয়ামী লীগের কাছে সম্মানজনক আসন সংখ্যা চাই।’

জাপার মহাসচিব জানান, তারা ৩০০ আসনেই প্রাথমিক প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। ফলে, জোটগত নির্বাচন হলে এই তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকেই চ‚ড়ান্ত করা হবে। গত মে মাসে জাপার চেয়ারম্যান এরশাদ নিজেই বিষয়টি জানিয়েছিলেন।

জাপার দু-একজন নীতিনির্ধারণী নেতা মনে করেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত না হলেও নির্বাচনের প্রকৃতি ও ধরন নির্ভর করছে বিএনপির আসা-না আসার ওপর। দলটি ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন বর্জনের পথে গেলে জাপার ভ‚মিকাও থাকবে আগের মতোই।

এ বিষয়ে জাপার কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত কোন ওয়েতে নির্বাচনে যাবো, সেটা এখনই বলা মুশকিল। তবে দলের বেশিরভাগ নেতা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকেই নির্বাচনের পক্ষে। এছাড়া মন্ত্রীও আছেন কয়েকজন। ফলে, সরকারের সঙ্গে সম্পর্কটা তো রয়েছেই।’

জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে গত এক বছরে নানা কথা বললেও কোনওটিই স্থির থাকেননি। গত বছরের এপ্রিলে মাদারীপুরে এক সভায় তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতত একক নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। জোট গঠন করছি, দলকে শক্তিশালী করেছি। তারপর দেখা যাবে।’

এ বিষয়ে গতকাল মোবাইলে ফোনে এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ে এখনই ভাবছি না। পরে বলবো।’ এরশাদ এসময় জানান, তার শরীর আগের চেয়ে কিছুটা ভালো এবং তিনি বিশ্রামে আছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

 

Wordbridge School
Link copied!