• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আশুরায় করণীয় সম্পর্কে বিশ্বনবীর দিক-নির্দেশনা


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ১১, ২০১৬, ০২:৪৩ পিএম
আশুরায় করণীয় সম্পর্কে বিশ্বনবীর দিক-নির্দেশনা

হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়। আল্লাহ তাআলা এ মাসে সৃষ্টির শুরু থেকেই মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক নিদর্শন রেখেছেন।

এ মাসে মুসলমানদের জন্য অনেক করণীয় রয়েছে। ইয়াহুদি-খ্রিস্টানরা এ মাসে রোজা পালন করেন, যা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমরা এ মাসে রোজা পালন কর কেন?

তারা উত্তরে দিলেন, এ মাসে হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদের ফিরাউনের হাত থেকে রক্ষা করেন এবং ফিরাউনকে দলবলসহ নীল নদে ডুবিয়ে দেন। এর শুকরিয়া স্বরূপ আমরা মহররমের ১০ তারিখ রোজা পালন করি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তোমাদের চেয়ে এ শুকরিয়া আদায়-পূর্বক রোজা রাখা বেশি হকদার আমরা।’ সংক্ষেপে এ মাসের করণীয় সম্পর্কে বিশ্বনবির দিক-নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-

  • এ মাসের বিশেষ আমল হলো- নফল রোজা পালন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, রমজানের পর শ্রেষ্ঠ রোজা হলো- আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। (মুসলিম)
  • ১০ মহররম রোজা রাখার মর্যাদা অনেক। হজরত আবু কাতাদা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর নিকট আমার আশা হলো- তিনি আশুরার দিনের রোজার বিনিময়ে এক বছরের পূর্বের গোনাহ মাফ করে দেবেন। (মুসলিম)
  • মহররমের ১০ তারিখ আশুরার দিনটি মহররম মাসের নয়, বরং বছরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে আশুরার দিনের মতো গুরুত্ব ও মর্যাদা দিয়ে অন্যকোনো দিনে রোজা পালন করতে দেখিনি। (বুখারি ও মুসলিম)
  • রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার উপলক্ষে কমপক্ষে দু’টি রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা এক দিন রোজা পালন করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আশুরার দিনে রোজার নির্দেশ দিলে মদিনার লোকেরা বললেন, ইয়াহুদি-খ্রিস্টানরাতো এ দিনকে মর্যাদা দিয়ে থাকে। তিনি বললেন, আগামী বছর আমি ৯ তারিখেও রোজা রাখবো। (মুসলিম)
  • ১০ মহররম ইসলামের প্রথম ফরজ রোজা। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন যে, ইসলাম পূর্ব যুগে কুরাইশরা আশুরার দিনে রোজা রাখতো। আল্লাহর রাসুলও এ দিনে রোজা রাখতেন। তিনি মদিনায় আগমনের পর নিজে রোজা রাখার পাশাপাশি সবাইকে সেদিন রোজা রাখার নির্দেশ জারি করলেন। এরপর যখন রমজানের রোজার বিধান নাজিল হলো; তখন তিনি বললেন- যে ইচ্ছা এ রোজা রাখবে; যার ইচ্ছা রাখবে না। (বুখারি)

পরিশেষে...
মহররম মাসের ১০ তারিখ আশুরার দিনটি যদিও হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তার সঙ্গী-সাথীদের জন্য বিজয়ের দিন হলেও এ দিনেই ঘটেছে পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে হৃদয় বিদরাক ও মর্মান্তিক কারবালা ঘটনা। পৃথিবীতে উত্তম প্রতিষ্ঠার অগ্রসেনানী হজরত হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুর এ আত্মত্যাগ আল্লাহর জমিনে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠাকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা।

আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ে এ মহান আশুরার দিনটিকে ইবাদাত-বন্দেগি এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠার রসদ হিসেবে গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। সঠিক উপায়ে ইসলামের অনুকরণ করার তওফিক দান করুন। আমিন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!