• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
‘ভিশন’ নিয়ে রাজনীতি

আসছে আওয়ামী লীগের ভিশন-২০৪১


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৬, ২০১৭, ০৩:৩৪ পিএম
আসছে আওয়ামী লীগের ভিশন-২০৪১

ঢাকা: রাজনীতির নতুন ইস্যু এখন দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক রূপকল্প। নেতারা এজন্য এর নাম দিয়েছেন ‘ভিশন’। ইতোমধ্যে দেশের বৃহৎ দুই দলই নিজেদের রূপকল্প বা ভিশন প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। রূপকল্প-২০২১ এর মত আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মত রূপকল্প-২০৪১ প্রণয়নের কাজ শুরু করছে।

অন্যদিকে, বিএনপিও দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক রূপকল্প-২০৩০ প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। এর আগে দলটি সরকার মেয়াদের ইশতেহার দিলেও এবারই প্রথমবারের মত দীর্ঘমেয়াদের রূপকল্প নিয়ে জনগণের সামনে আসছে।

বিশ্লেষকরা বড় দুই দলের রাজনৈতিক রূপকল্পকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন। তারা বলছেন, রাজনৈতিক রূপকল্প মানে দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক দলের দৃষ্টিভঙ্গি। এটি জনগণের সামনে উপস্থাপন করলে সবাই জানতে পারবে উন্নয়নের জন্য কোন দল কোন ইস্যুগুলোকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তবে উপস্থাপনের পর ক্ষমতায় গিয়ে তা বাস্তবায়ন করলেই হবে রূপকল্পের সার্থকতা।

আওয়ামী লীগের ভিশন ২০৪১ সম্পর্কে বলতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গণমাধ্যমকে জানান, ২০২২ সাল থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ২০ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা সম্পন্ন করতে করতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ সাল থেকেই সেই ইশতেহার (ভিশন ডকুমেন্ট) তৈরির কাজ শুরু হবে। ৩ বছরে সম্পন্ন হবে পুরো প্রক্রিয়া। এই ইশতেহারের সারসংক্ষেপ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। তবে পরিকল্পনার পুরোটা জানবেন প্রধানমন্ত্রীসহ মাত্র তিন-চারজন মানুষ।

অর্থমন্ত্রী ভিশন ২০২১ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, ২০০৪ সালে যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন না, তখনও এমন একটি ইশতেহার তৈরি করেছিলেন তারা। ২০০৮ সালে গিয়ে সেই ডকুমেন্ট তৈরির কাজ শেষ হয়েছিল। উল্লেখ্য, ভিশন-২০২১ ছিল ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার।  

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্ব ব্যাংকের মধ্যকার বসন্তকালীন বার্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন অর্থমন্ত্রী। সেখানেই গণমাধ্যমের সঙ্গে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্য সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী জানান, মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। আমরা আশা করছি ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। আমরা সরকার হিসেবে নয়, দল হিসেবে কাজ শুরু করব। ২০১৮ সালের শেষ নাগাদই কিছু মেনিফেস্টো ও কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করব। ২০০৮ সালে একই রকমের একটি ইশতেহার তৈরি করা হয়েছিল। এতে সময় লেগেছিল ৪ বছর। মুহিত বলেন, জনসাধারণের কাছে এটি ১৬ পৃষ্ঠার একটি ডকুমেন্ট হলেও কয়েকজনের কাছে তা ১০০ পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট। প্রধানমন্ত্রীসহ কেবল তিন-চারজন মানুষ এ ধরনের পরিকল্পনার বিস্তারিত জেনে থাকেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

মুহিত জানান, প্রধানমন্ত্রী একইভাবে নতুন পরিকল্পনাটি সম্পন্ন করতে চাইছেন। এবারও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মাত্র ৩/৪জন মানুষ এই প্রক্রিয়ায় জড়িত থাকবেন। একই রকমের ডকুমেন্ট ২০২১ সাল নাগাদ তৈরি করতে চান তিনি (প্রধানমন্ত্রী)। এটি হলো ২০৪১ সালের জন্য ভিশন ডকুমেন্ট। আমার মতে, দলের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আগের পরিকল্পনাটিও আমি করেছিলাম, তাই জানি এর সঙ্গে কতটা নিষ্ঠার সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে হয়।

রাজনৈতিক দলের রূপকল্প প্রণয়ন নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই চর্চাটি রাজনীতি ও উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক। আগে সরকারে ক্ষমতার মেয়াদ পর্যন্ত অর্থাৎ পাঁচ বছরে রাজনৈতিক দলগুলো কে কী করবে তা উপস্থাপন করতো। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কোনো ভিশন ছিল না। তাই দেশের প্রধান দুই বড় দল যখন দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক রূপকল্প নিয়ে কাজ করছে, তখন অবশ্যই এটি রাজনীতির জন্য, জনগণের জন্য ইতিবাচক। তিনি বলেন, রূপকল্প প্রণয়ন করলেই হবে না। রূপকল্পের বাস্তবায়নও করতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!