• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি চেয়ারম্যান খুন, আ.লীগের সম্পাদকসহ আসামি ১৫


নড়াইল প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮, ১০:৪২ এএম
ইউপি চেয়ারম্যান খুন, আ.লীগের সম্পাদকসহ আসামি ১৫

দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা লতিফুর রহমান পলাশের মৃতদেহ

নড়াইল: জেলার দিঘলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা লতিফুর রহমান পলাশকে (৪৮) গুলি করে হত্যার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শরীফ মনিরুজ্জামান, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মাসুদজ্জামান মাসুদ, দিঘলিয়ার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইমতিয়াজ আহম্মেদ মাসুম, দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি স ম ওহিদুর রহমানসহ ১৫জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১২টার দিকে লোহাগড়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন নিহত পলাশের বড় ভাই জেলা পরিষদের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু। 

অন্য আসামিরা হলেন-আওয়ামী লীগ নেতা শরীফ মনিরুজ্জামানের ভাই শরীফ বাকি বিল্লাহ, তিনটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি সোহেল খান, শেখ বনিরুল ইসলাম বনি, শেখ পনিরুল ইসলাম কটো, হেমায়েত হোসেনসহ ১৫জন। আসামিদের অধিকাংশের বাড়ি দিঘলিয়া ইউপির কুমড়ি গ্রামে। এ মামলার বাদি মুক্তিযোদ্ধা সাইফুর রহমান হিলু বলেন, আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আমরা ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করি। 

জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক লতিফুর রহমান পলাশকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তার শরীরে একাধিক গুলি ও কোপের চিহৃ ছিল। 

এদিকে, সদর হাসপাতালে নিহত পলাশের ময়নাতদন্ত শেষে গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দিঘলিয়া ইউনিয়নের কুমড়ি গ্রামের বাড়িতে চেয়ারম্যান পলাশকে দাফন করা হয়। উপস্থিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা এ নৃশংস হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু বলেন, পলাশ হত্যায় জড়িতদের চিহিৃত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। 

পলাশের ভাই মুক্ত রহমান বলেন, পুলিশ ইচ্ছা করলে ৭০ হাত মাটির নিচেরও অপরাধী খুঁজে বের করতে পারে। আশা করছি আমার ভাইয়ের খুনিদের সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। প্রকৃত অপরাধীদের যেন আড়াল করা না হয়-সেদিকে পুলিশ সুপার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মুক্ত রহমান পুলিশ সুপারসহ দলীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘খুনিরা যদি আওয়ামী লীগ দলীয় হয়, তাহলে তাদেরকে আটক করতে সহায়তা করবেন কিনা?’ জবাবে পুলিশ সুপারসহ নেতারা বলেন, খুনিরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও চেয়ারম্যানের স্বজনেরা জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে লোহাগড়ার দিঘলিয়ার বাড়ি থেকে অফিসের কাজে লোহাগড়া উপজেলায় আসেন ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাচন অফিস এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী ইউপি চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান পলাশকে প্রথমে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান পলাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। 

তিন থেকে চারজন দুর্বৃত্ত এ হত্যাকান্ডে অংশ নেয় এবং তাদের মুখ ঢাকা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গী ইউপি সদস্য ফরিদ আহম্মেদ বুলুর চিৎকারে উপজেলা চত্বরের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। পরে পলাশের মৃত্যুদেহ লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!