• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ইজতেমা শেষেই দেশ-বিদেশে ছুটবেন তারা


শেখ আবু তালেব, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জানুয়ারি ২১, ২০১৮, ০৫:৪৪ পিএম
ইজতেমা শেষেই দেশ-বিদেশে ছুটবেন তারা

ঢাকা: অধিক মানুষের সমাগম হওয়ায় বেশ কয়েক বছর ধরে তাবলিগের বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে ভাগ হয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজধানী ঢাকার টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে। তীব্র শীতের কারণে এবারে মুসল্লির উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে তুরাগ তীরে গড়ে উঠা ভাসমান মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ‍ওপর।

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি(শেষ) মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় রোববার(২১ জানুয়ারি) । টঙ্গীর তুরাগ তীরে দুপুরে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ইজতেমা শেষ হওয়ার পরই তাবলিগের সাথীরা বিভিন্ন দেশ ও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রত্যন্ত জায়গায় চলে যাবেন ইসলামের বাণি প্রচার করতে।

তবে, উপস্থিতি যাই হোক দ্বীনের মহান দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার কাজে বিরতি নেই তাবলিগের সাথীদের(যারা নিয়মিত তাবলিগে সময় দিয়ে ইসলামের বাণি প্রচার করেন)। এবারও অনেকে এসেছেন দ্বিন প্রচারের জন্য আর বাড়ি ফিরে যাবেন না। ময়দান থেকেই জামায়াতবদ্ধ হয়ে চলে যাবেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকায়। এক চিল্লা(চল্লিশ দিন) তিন চিল্লা ও এক বছরের জন্য বেরিয়ে পড়বেন।

অবশ্য ইতোমধ্যে শনিবার(২০ জানুয়ারি) অনেক জামাতকে তাদের রোখ(যে স্থানে যাবেন) ঠিক করে দেয়া হয়েছে। শনিবার রাতেও অনেক জামাত রওয়ানা দিয়েছে নির্দিষ্ট এলাকার জন্য। তারা আখেরি মোনাজাতে অংশ নেননি। বিদেশে থেকে যেমন বাংলাদেশে দাওয়াতী কাজ করার জন্য তাবলিগের কর্মীরা আসেন, তেমনি বাংলাদেশ থেকেও বিদেশে গিয়ে তাবলিগের কাজ করার জন্য জামাত বের হয়। একই সময়ে বাংলাদেশে আসা বিদেশিদেরও স্থানীয় বিভিন্ন জামাতে মিলিয়ে দেয়া হবে।

এজন্য বছরের এই সময়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি তাবলিগের জামাত বের হয় বলে জানা গিয়েছে।

চিল্লায় থাকার সময়ে নিজের সকল খরচ চিল্লায় যাওয়া ব্যক্তিই বহন করবেন। সার্মথ্য, সময় ও এই কাজে যাদের অনুভূতি আছে তারাই বের হয়ে পড়বেন সময় দিতে। অনেকেই চিল্লায় বের হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন ইজতেমায়।

দলভিত্তিক(তাবলিগের ভাষায় জামাত) ভাগ করে একজনকে আমির বানানো হয়। তার নেতৃত্বে চলে দলটি। তাবলিগের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি হচ্ছে, আমির কোনো বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত নেন না। এমনকি বাজারের মেন্যু কী হবে তাও সকলের মতামত নিয়ে করেন। সকল বিষয়ে নির্ভয়ে পরামর্শ দেন সবাই।

ছোট ছোট বিষয়েও সবাইকে জানিয়ে করা হয়। চিল্লায় যাওয়ার পরে প্রতিদিনই তাদের নতুন কিছু শেখানো হয়। পাশাপাশি এলাকার মানুষদের নামাজ পড়ার জন্য দাওয়াতী কার্যক্রম চালান তারা।

তাবলিগের সাথীরা জানান, এক চিল্লায় যারা সময় দেন। চিল্লা শেষে শুদ্ধভাবে তারা নামাজ পড়তে পারেন। এই সময়ে নামাজ পড়ার জন্য কমপক্ষে চারটি সুরা সুন্দর ও শুদ্ধভাবে শিখতে পারেন একজন সাথী। এছাড়াও পবিত্রতাসহ খুঁটিনাটি বিষয়ে তাকে বাস্তবিক করে দেখানো হয়। এই সময়ে একজন ইসলামের মৌলিক বিষয়ে জানতে পারেন।

সময় দেয়া শেষ হলে বাকি জীবন তিনি চলার মতো একটি নির্দেশনা পাবেন বলে জানান তারা। এসময় তাবলিগের কর্মীরা জানান, জামাত নিয়ে তারা দেশের ভেতরে ও বিদেশে চলে যাবেন। যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে, তারা বিদেশেও যেতে পারেন দাওয়াতী কাজে।

চিল্লায় সময়ে প্রতি তিনদিন পরপর একটি মসজিদ পরিবর্তন করে জামাতের দলটি। এভাবেই চল্লিশ দিন শেষ করে আবার কাকরাইল প্রধান মারকাজে ফিরবে জামাত। সেখানে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ফিরে যাবেন নিজ নিজ এলাকায়। এর পরে নিজ বাড়ি গিয়ে আবার লেগে যাবেন তাবলিগের কাজে।

এবারে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের। বিশ্বের মুসলিম উম্মার সুখ, শান্তি, কল্যাণ, অগ্রগতি, ভ্রাতৃত্ববোধ ও মঙ্গল কামনা করে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হয় চলতি বছরের ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী এই ইজতেমা শুরু হয়। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব গত ১২ জানুয়ারি শুক্রবার বাদ ফজর জর্দানের মাওলানা শায়েখ ওমর খতিবের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে ১৪ জানুয়ারি শেষ হয়।

প্রথম ধাপে ইজতেমায় অংশ নেন দেশের ১৬ জেলার মুসল্লিরা। দ্বিতীয় পর্বেও ১৬ জেলার মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেছেন। এই পর্বের মাধ্যমে এবারের মতো ইজতেমা শেষ হয়েছে।

সোনালীনিউজ/তালেব/এমটিআই​

Wordbridge School
Link copied!