• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইনজামাম হতে পারেন নি সাব্বির


ক্রীড়া প্রতিবেদক অক্টোবর ২৫, ২০১৬, ১০:৩৭ এএম
ইনজামাম হতে পারেন নি সাব্বির

অভিষেক টেস্টেই হয়ত জয়ের স্বাদ নিয়ে নিজেকে আরও বেশি স্মরণীয় করে রাখতে পারতেন জাতীয় দলের টি২০ স্পেশালিস্ট খ্যাত ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। কিন্তু হলো না। চট্টগ্রামে যেন ফিরে এলো ১৩ বছর আগের মুলতান। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরের এক সকাল আশাভঙ্গের বেদনায় কাঁদিয়েছিল গোটা বাংলাদেশকে। ১৩ বছর পর অক্টোবরের আরেক সকাল আবারও সাক্ষী হলো রক্তক্ষরণের। সেদিন একজন ইনজামাম-উল-হক ‘চুরি’ করে নিয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বপ্ন। আর এদিন বাংলাদেশের সাব্বির রহমান পারলেন না ইনজামামের ভূমিকায় নিজেকে নিয়ে যেতে! ১৩ বছর আগের মুলতান টেস্টের দুঃস্বপ্ন আবারও ফিরে এল চট্টগ্রামে। কিন্তু হায়, দুবারই যে দুর্ভাগা ওই বাংলাদেশ। মুলতান টেস্টে জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে জয়ের জন্য মাত্র ৪ উইকেট দরকার ছিল বাংলাদেশের। এক প্রান্ত আগলে ছিলেন ইনজামাম। অন্য প্রান্তে ‘লেজের’ উমর গুল, শাব্বির আলী ও ইয়াসির আলী। 

পাকিস্তানের ৯ উইকেট ফেলে দিলেও ইনজামামকে আউট করতে পারেনি বাংলাদেশ। ২৩২ বলে ১৩৮ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেলে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন ইনজামাম। উমর গুল মাটি কামড়ে পড়ে থেকে ইনজামামকে সঙ্গ দিয়েছিলেন দারুণভাবে। ৯৯ মিনিট উইকেটে থেকে ৫০ বল খেলে ৫ রান করে নিজের কাজটি ঠিকই করে গিয়েছিলেন তিনি। সজল চোখে মাঠ ত্যাগ করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আপাত শান্ত নিরাবেগ ইনজামামও মহাকাব্যিক সেই ইনিংস খেলে আবেগের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। গ্যালারি থেকে তাঁর দিকে হয়েছিল ফুলের বৃষ্টি। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের জয়ের রাস্তায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন টেস্ট অভিষিক্ত সাব্বির রহমান। ১০২ বল খেলে ৬৪ রান করে অবিচল আস্থায় ব্যাট করছিলেন তিনি। অনেকটা মুলতান টেস্টের ইনজামামের মতোই। 

বাংলাদেশ টেস্টটা জিতে গেলে হয়তো চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের দর্শকেরা সাব্বিরকে ফুলের মালা দিয়েই বরণ করে নিতেন। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ত তাঁরই বন্দনা। এ দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চিরদিনের জন্য এক বীরের মর্যাদা পেয়ে যেতেন তিনি। কিন্তু তিনি পারেননি। চেষ্টার ত্রুটি করেননি তিনি। কঠিন এক উইকেটে ব্রিটিশ অহমের চোখে চোখ রেখেই লড়াই করে গিয়েছিলেন। তিনি তাইজুল ইসলাম নামের এক ‘উমর গুল’কেও পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে ইনজামামের ভাগ্য ছিল না! কামরুল ইসলাম আর শফিউল ইসলামরা যে পারলেন না শাব্বির আহমেদ-ইয়াসির আলী হয়ে উঠতে। মুলতানে সেদিন শাব্বির ২৫ বলে ১৩ রান করে গিয়েছিলেন, অভিষিক্ত ইয়াসির ৪ বলে ১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। আজ তাইজুল নিজের কাজটি করে দিয়ে গেলেও কামরুল ও শফিউল ব্যর্থই হয়েছেন। 

মুলতান টেস্টের সেই হার বাংলাদেশের ক্রিকেটের চিরকালীন ক্ষতগুলোর একটি। চট্টগ্রাম যেন সেই ক্ষতের জায়গাটিই খুঁচিয়ে রক্তাক্ত ঝরাল। এই ক্ষত কবে সারবে, কে জানে!

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!