• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ার অদ্ভুত লোককথা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ২, ২০১৬, ০৫:১৯ পিএম
ইন্দোনেশিয়ার অদ্ভুত লোককথা

ঢাকা: গায়ে কাঁটা দেয়া কত না লোককথা শুনেছি ছোটবেলায়। সন্ধ্যা নামলেই দাদী-নানীদের কাছে ঘেঁষতাম। তাদের মুখ থেকে কত ভূত পেত্নী আর রাক্ষস খোক্কসের গল্প শুনেছি। চারপাশটা তখন কেমন রহস্যময় হয়ে উঠতো। এসব লোককথা, জনশ্রুতি অলঙ্কৃত করে রেখেছে আমাদের লোকশিল্পকে। ঠিক একই ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমাজেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কত লোককথা, গল্প। যা শুনে যে কারো শরীরের লোপ দাঁড়িয়ে যেতে পারে। এমনই লোককথা আছে ইন্দোনেশিয়াতেও। চলুন জেনে নিই সেইসব লোককথা।

পোচং: (Pocong): এরা দেখতে ভয়ঙ্কর। এদের চেহারা অনেক সময় সাদা। গলিত বা অনেক সময় মাংস বাদে শুধু কঙ্কালও থাকতে পারে। কেউ মারা গেলে কবর দেবার সময় মৃতদেহকে সাদা কাপড় দিয়ে দেয়া হয় মুড়িয়ে। মাথার উপর একটা আর পায়ের কাছে একটা গিট দেয়া হয়। কবর দেবার পরে তারা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কবর থেকে বেরিয়ে আসতে পারে পার্থিব দুনিয়ায়। তাদের এভাবে ফিরে আসার কারণ হচ্ছে, পার্থিব জগতে অসম্পূর্ণ কাজ। সেই কাজের জন্যই এরা বাইরে বেরিয়ে আসে। যেহেতু তাদের হাত পা বাঁধা থাকে তাই তারা লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। অনেক সময় আপনার দরজায় ধাক্কা দিয়ে থাকে তাদের মাথা দিয়ে।

থুউল: (Thuyul) এদের দেখতে ঠিক বাচ্চাদের মতো। মাথায় কোনো চুল থাকে না। চামড়া সাদা। অনেক সময় কৃষ্ণ বর্ণের চোখ থাকে। শুধু মাত্র বাচ্চাদের পরিহিত ছোট নেংটি পরিহিত অবস্থাতেই থাকে। গর্ভাবস্থায় এরা মৃত বাচ্চা। এদের সাধারণত কেউ পুষে রাখে। এরা যে কারো ঘর থেকে টাকা পয়সা চুরি করতে পারে।

অনেকেই মনে করেন, থুউলের হাত থেকে তাদের টাকা পয়সা বাঁচাবার উপায় আছে। আর তা হল ঘরের ভিতরে ফলের বীচি রেখে দেয়া। সেই বীচি দেখলেই তা গুনতে বসে যাবে তারা। আর তা বারবার গুণতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত তারা টাকা পয়সা চুরি করার কথা ভুলে না যাবে। আর এদের ধাওয়া করে আপনি ধরতে পারবেন শুধুমাত্র এদের মতো নেংটি পরিহিত অবস্থাতেই। জনশ্রুত আছে, অনেকেই থুউল দেখেছেন। ধরার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ তা করতে পারেননি। পারলেও আজ অবধি তা প্রকাশ করেননি।

জেন্ড্রু: (Gendruwo) এরা মূলত খারাপ প্রকৃতির ভূত। লিঙ্গ বিশেষে সবাই পুরুষ। এদের সম্পূর্ণ শরীর নোংরা লম্বা লোমে ঢাকা থাকে। মাথায় থাকে লম্বা লম্বা চুল। লোমের রঙ হয় কালচে লাল। এদের হাতে ও পায়ে আছে বিশাল বড় বড় নোখ। ভয়ংকর প্রাণী বলতে যা বুঝায় তার সব গুণাগণই আছে এদের মাঝে। যদি কখনও মধ্যরাতে আপনি জানালার বাইরে পচা মাংসের পোড়া গন্ধ পান তাহলে বুঝে নেবেন সেখানে জেন্ড্রু অবস্থান করছে। এরা নিজেদের রূপ পরিবর্তন করতে সক্ষম। অনেক সময় এরা অনেক স্ত্রী লোকের স্বামীর রূপ ধরে তাদের সাথে দৈহিক মিলনেও রত হয়।

কান্তিলানাক: (Kuntilanak) লোকবিশ্বাস মতে এরা হলো সেসব নারী যারা সন্তান জন্ম দেয়ার আগেই মারা যান। এরা সাদা জামা পরে থাকে। আর মাথায় থাকে কাল লম্বা চুল। এদের চেহারা থাকে ভয়ঙ্কর আর তার থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর এদের অট্ট হাসি। বসবাস উঁচু গাছের মাথায়। আর ওই গাছের তলা দিয়ে যারা যায়, সুযোগ বুঝে তাদের ধরে ফেলে। তারা পথিককে আটকে প্রচণ্ড জোরে হাসি দিয়ে ভয় দেখায়। আবার একটু পরেই উধাও হয়ে যায়। এমনকি তারা নিজেদের সুন্দরী নারীতে পরিণত করে গাড়ি চালকদের অন্ধকার পথে দাঁড় করিয়ে দেয়। এরপর তাদের কাছে সাহায্য চায়, আর যে সাহায্য করে তার পরিণতি মৃত্যু।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!