• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইফতার যেন ভোজন উৎসবে পরিণত না হয়


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ২৫, ২০১৮, ০৪:১২ পিএম
ইফতার যেন ভোজন উৎসবে পরিণত না হয়

ঢাকা : ইফতার আরবি শব্দ। ফুতুর মূল ধাতু থেকে আগত। যার অর্থ নাশতা, হালকা খাবার। কেউ কেউ বলেছেন, ইফতার অর্থ খোলা বা উন্মুক্ত করা। ইসলামী পরিভাষায় সারা দিন রোজা রাখার পর সূর্যাস্তের সময় যে খাবার-পানীয় গ্রহণ করার মাধ্যমে উপবাস ত্যাগ করা হয়, তাকেই ইফতার বলে। ইফতার নিছক একটি ভোজন আয়োজন বা ভোজন উৎসব নয়। ইফতার একটি আমল-ইবাদত ও আনন্দক্ষণ।

রসুল (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের সময় রয়েছে-

১. ইফতারের সময়, ২. আল্লহ তায়ালার সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (বোখারি ও মুসলিম) রমজান মাসে ইফতারের সময়টি প্রত্যেক মুমিন-মুসলমানের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত।

রসুল (সা.) বলেছেন, ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া কবুল হয়ে থাকে। (আবু দাউদ শরীফ) হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।

এক. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। দুই. ন্যায়বিচারক বাদশাহর দোয়া। তিন. মজলুমের দোয়া। রসুল (সা.) ও সাহাবি আজমাইনরা ইফতারের সময় গুরুত্ব সহকারে দোয়া করতেন। বান্দা যখন ইফতার সামনে নিয়ে অপেক্ষা করে আল্লাহ মহান তখন ফেরেশতাদের ডেকে বলেন, আমার বান্দাদের ধর্মভীরুতার অপূর্ব দৃশ্য দেখো। এরা আমাকে কত ভালোবাসে। সামনে খাবার উপস্থিত।

কিন্তু শুধু আমার ভয়ে, আমাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোনো খাবার কেউ খাচ্ছে না।  

নিজে ইফতার করা যেমন ইবাদত, অন্যকে ইফতার করানো তেমনি ফজিলতপূর্ণ একটি আমল। রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, রমজান মাসে যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে এবং দোজখ থেকে মুক্তি পাবে।

এ ছাড়া যিনি ইফতার করিয়েছেন, তিনি ওই রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবেন, কিন্তু এতে রোজাদারের সওয়াব কমানো হবে না।  

ইসলামী শরিয়তের বিধান হলো- সময় উপস্থিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত ইফতার করা। সাহরি খাওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা উত্তম এবং ইফতারের ক্ষেত্রে দ্রুত করা উত্তম। রসুল (সা.) বলেছেন, মানুষ ততক্ষণ কল্যাণে থাকবে, যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে। (বোখারি ও মুসলিম) এ ছাড়া রসুল (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ মহান বলেন- আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই বান্দা, যে ইফতার সঠিক সময়ে করে। (তিরমিজি) সুতরাং সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করা উচিত।

হালাল খাবার বা হালাল উপার্জনে কেনা খাবার দিয়ে ইফতার করা মহাপুণ্যের কাজ। হারাম উপার্জন দিয়ে লোকদেখানো ইফতার পার্টির আয়োজন করায় কোনো সওয়াব তো পাওয়া যাবেই না; বরং গুনাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ ছাড়া বর্তমান সময়ে নবীজীর (সা.) বরকতময় ইফতারের দস্তরখানাকে ‘ইফতার পার্টি’তে পরিণত করার যে জাগতিক প্রবণতা তৈরি হয়েছে, তা থেকে প্রত্যেক মুসলমানেরই বেঁচে থাকা আবশ্যক। একটি কথা মনে রাখতে হবে- লৌকিকতা ও প্রদর্শন মানসিকতা নিয়ে ইফতার করানোকে কখনোই ইসলাম সমর্থন করে না।

সোনালীনিউজ/এমটিআিই

Wordbridge School
Link copied!