• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাসলো ইমরুলের ব্যাট জিতল বাংলাদেশ


ক্রীড়া প্রতিবেদক অক্টোবর ২১, ২০১৮, ১০:২৭ পিএম
হাসলো ইমরুলের ব্যাট জিতল বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ব্যাটে-বলে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ উপহার দিল ইমরুল কায়েস আর নাজমুল ইসলাম অপুরা। তাদের অসাধারন নৈপুন্যে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না জিম্বাবুয়ে। নিজেদের ফেবারিট মনে করা হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দলকে ২৮ রানে হারিয়েছে লাল সবুজের জার্সিধারীরা। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা।

আগে ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরি এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে দুর্দান্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার কেপাস ঝুওয়াও ও হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তারা তুলে ফেলেন মুল্যবান রান ৪৮টি। ঠিক তখনই টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বল তুলে দেন মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে। হতাশ করেননি তিনি। নিজের প্রথম ওভারেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন কাটার মাস্টার।

দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা জিম্বাবুয়ের ওপেনার সিফাস জুওয়াওয়ের লাগাম টেনে ধরেন মোস্তাফিজুর রহমান। নিজের প্রথম ওভারেই জুওয়াওকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান বাংলাদেশের এই কাটার মাস্টার। সফরকারি শিবের দ্বিতীয় ছোবল মারেন নাজমুল ইসলাম অপু। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বেন্ডন টেলরকে বিদায় করেন নাগিন খ্যাত এই স্পিনার।

এরপর অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে রান আউট করে ফেরান ইমরুল-মুশফিক। তার আগে ৩৪ বলে ২১ রান করেন মাসাকাদজা। আবারও দৃশ্যপটে হাজির হন অপু। এবার সিকান্দার রাজাকে সাজঘরে ফেরান তিনি।  উইকেট শিকার করেই বিখ্যাত নাগিন ড্যান্সে মেতে ওঠেন অপু। এরপর ক্রমেই আত্ববিশ্বাসী হয়ে উঠা ক্রেইগ অরভিনকে থামিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনাররের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৪৮ বলে এক চারে ২৪ রান করেন অরভিন। দলীয় ১৪৫ রানে মোরকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ।

এরপর ৩ রানের ব্যবধানে নতুন ব্যাটসম্যান ত্রিপানোকে রান আউট করেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া ফজলে মাহমুদ রাব্বি। মিরাজের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন মাভুতা। শেষ দিকে বাংলাদেশের জয় বিলম্বিত করেছে জার্ভিস এবং উইলিয়ামস। হাফ সেঞ্চুরি পুর্ণ করেন উইলিয়ামস। কিন্তু তাতে টাইগারদের জয় আটকায়নি। ৯ উইকেটে ২৪৩ রান তুলতেই নির্ধারিত ওভার শেষ হয় জিম্বাবুয়ের। ফলে ২৮ রানে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতে নেয় বাংলাদেশ।

রোববার (২১ অক্টোবর) মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা মোটেও ভালো করেনি স্বাগতিকরা। শুরুতেই টেন্ডাই চাতারার শিকারে পরিণত হন লিটন। পরে ক্রিজে আসেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। তবে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তিনি। সেই চাতারার বলেই ব্রেন্ডন টেইলরের তালুবন্দী হন তিনি। ৪ বল খেলে কোন রান করতে পারেননি রাব্বি।

১৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহীমের ব্যাটে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১৫তম ওভারে ব্রান্ডন মাভুটার বলে টেইলরের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন মুশফিক। ফেরার আগে ২০ বলে ১৫ রান করেন এই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান।

৬৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ চতুর্থ উইকেটে আরও একটি ভালো জুটি গড়ে তুলেছে। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেলে যাচ্ছেন ইমরুল। কিন্তু ব্যাটে ঝড় তুলে তিন ছক্কা আর এক চারে ৩৭ রান নিয়ে বিদায় নেন মোহাম্মদ মিঠুন।

মিথুন ফেরার পর ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে নির্ভরতার পরিচয় দিতে পারেননি তিনি। খানিক পরেই জার্ভিসের ছোবলে কাটা পড়েন মিস্টার কুল। এতে ফের চাপে পড়ে টাইগাররা। সেই চাপের মধ্যে এ পেসারের তৃতীয় শিকার হয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এতে ১৩৭ রান থেকে ১৩৯ যেতে ৩ উইকেট খুইয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

তবে অন্য প্রান্তে ইমরুলে কায়েস একাই লড়ে গেছেন। তিনি তুলে নিয়েছেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। আটটি চার ও তিনটি ছয়ের মারে তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ইমরুল। সেঞ্চুরির পর যেন আরও ধার বাড়ে তার ব্যাটে। ছক্কা হাঁকান আরও তিনটি। শেষ পর্যন্ত ইনিংসের ৮ বল বাকি থাকতে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। তার আগে ছয় ছক্কা আর তেরটি চারের মারে ১৪০ বলে ১৪৪ রান করেন ইমরুল। কম যাননি মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এই অলরাউন্ডার তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি। ইনিংসের শেষ ওভারে চাতারার শিকার হয়ে বিদায় নেয়ার আগে ৬৯ বলে এক ছক্কা আর তিন চারে ৫০ রান করেন তিনি।

অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ১২৭ রানের রেকর্ড ‍জুটি গড়েছেন ইমরুল। সপ্তম উইকেটে তাদের গড়া জুটিই বাংলাদেশের সেরা। ইমরুল কায়েস আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ব্যাটে ভর করেই ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। মাশরাফি ২ ও মোস্তাফিজুর রহমান ১ রানে অপরাজিত থাকেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে জার্ভিস ৪টি এবং চাতারা ৩টি উইকেট পেয়েছেন।  

এ ম্যাচে অভিষেক ঘটেছে ফজলে মাহমুদ রাব্বির। ১৪ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত পারফর্ম করেছেন ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। চোটের কারণে এ সিরিজে নেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়েছেন রাব্বি।

চোটের কারণে দলে নেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। তার জায়গায় খেলবেন ইমরুল কায়েস। আর জ্বরের কারণে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে পেসার রুবেল হোসেনকে। এশিয়া কাপে বারবার ব্যর্থ হওয়া নাজমুল হোসেন শান্তকে রাখা হয়নি একাদশে। সাত নম্বর পজিসনে আরিফুল হককে পেছনে ফেলে সুযোগ পেয়েছেন সাইফউদ্দিন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!