• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ২৬ শতাংশ


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৩১, ২০১৭, ০৮:১৩ পিএম
ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ২৬ শতাংশ

ঢাকা: এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশে ইলিশ মাছের উৎপাদন বেড়েছে ২৬ শতাংশ বেশি। বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ইলিশ মাছের উৎপাদন আগের বছরের (২০১৫-১৬) চেয়ে এক লাখ এক হাজার ৪৬৬ মেট্রিক টন বেড়েছে। গত অর্থবছরে ইলিশের মোট উৎপাদন ছিল ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৭ টন। এর আগের বছর ছিল ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৫১ টন।

এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ইলিশ মাছের উৎপাদন বেড়েছে ২৬ শতাংশ। বাংলাদেশে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ইলিশের উৎপাদন সর্বোচ্চ প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছিল।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ২৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ছিল। যদিও এক যুগ ধরে সুস্বাদু মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।

২০১৬-১৭ অর্থবছরের খসড়া মৎস্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান থেকে ইলিশ আহরণের এ তথ্য জানা গেছে। খসড়া পরিসংখ্যান চূড়ান্ত করতে মৎস্য অধিদফতরে সভা বসলেও কিছু তথ্যে ত্রুটি থাকায় তা ফের যাচাই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই মাছের উৎপাদনের পরিসংখ্যান চূড়ান্ত হয়নি। 

ওয়ার্ল্ড ফিশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশই উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। বাংলাদেশে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে এর আগের বছরের চেয়ে ইলিশের উৎপাদন সর্বোচ্চ প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়েছিল।

ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব ফিসারিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী আহসান হাবীব সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত বছর থেকেই বেশ বৃষ্টিপাত হচ্ছে, এতে উজান থেকে প্রচুর পানি নামে। ফলে ইলিশ সমুদ্র থেকে উপরের দিকে উঠে আসে। অনুকূল পরিবেশের সঙ্গে সরকারের কড়া মনিটরিংয়ের কারণে ইলিশের উৎপাদন এতটা বেড়েছে।’

খসড়া প্রতিবেদন থেকে দেখা গেছে, গত অর্থবছরে নদী থেকে ২ লাথ ১৭ হাজার ৩০০ টন, সুন্দরবনের আশপাশের নদী থেকে ১৬৯ টন, সমুদ্র থেকে ২ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪৮ টন (বড় জাহাজের মাধ্যমে ৬৯৪৮ টন ও ট্রলারের মাধ্যমে ২,৭২,০০০ টন) ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত অর্থবছরে উৎপাদিত ইলিশের বাজারমূল্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা।

অধ্যাপক আহসান হাবীব বলেন, ‘আমার মনে হয় এখন ইলিশ রফতানি খুলে দেয়ার সময় এসেছে। ইলিশের চাপের কারণে অন্য মাছের দামটা একটু পড়ে যাচ্ছে। রপ্তানি খুলে দেয়া হলে আমাদের বৈদেশিক অর্থ আসবে অপরদিকে অ্যাকোয়া কালচারে ব্যালেন্স তৈরি হবে। এক সময় ইলিশ পাওয়া যেত না বলে রফতানি বন্ধ করে দেয়া হয়ে হয়েছে। এখন অলিগলিতেও ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।’

মৎস্য অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইলিশ ধরার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ৪ লাখের বেশি জেলে জড়িত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মিলিয়ে ইলিশের উপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ।

দেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১১ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ শতাংশ বলেও মৎস্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে। চলতি বছরই ইলিশ মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন) স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে।

তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে গত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৯২১ টন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৩৪২ টন, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৮৪৫ টন, ২০১১-১২ অর্থবছরে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৫১২ টন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৩ লাখ ৫১ হাজার ২২৩ টন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ১৪০ টন ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২১১ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!