• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
নির্বাচনের প্রস্তুতি

ইশতেহার-প্রার্থীদের খসড়া তালিকা তৈরি বিএনপির


নিজস্ব প্রতিবেদক জুলাই ৫, ২০১৭, ০৮:৩৩ পিএম
ইশতেহার-প্রার্থীদের খসড়া তালিকা তৈরি বিএনপির

ঢাকা : নির্বাচন কমিশন, মাঠ প্রশাসন এবং দলীয় সরকার নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। একইসঙ্গে নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক’ সরকারের দাবি আদায়ে দলটি আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো ঘোষণা না দিলেও ভেতরে-ভেতরে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি, সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে প্রায় ১০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি।

বিএনপি নেতারা বলছেন, বিগত দিনে আন্দোলন করে নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করতে ব্যর্থ হলেও এবার সফলতা আসবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করতে দল গোছানো, আন্দোলন কৌশল নির্ধারণ ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে এখন ব্যস্ত দলটির নেতারা। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সংসদের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এছাড়া সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত দলের বাইরে থাকা নেতাদেরও দলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত রমজানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ইফতার পার্টিতে যোগ দেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কৌশল বিনিময় ছিল ঐক্যমত গড়ে তোলারই অংশ। বিএনপির মধ্যম সারির এক নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিবে না বিএনপি। আমরা নির্বাচন বর্জনের কথা ভাবছি না। এখনই ঘোষণা দিলে আর নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায় হবে না। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দর-কষাকষিতে সব রকমের চেষ্টা চলবে। যদি এই কৌশল সফল না হয় তবে দাবি আদায়ে শেষ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে রাজপথের আন্দোলনে যাওয়ার ছাড়া আমাদেরে সামনে কোনো পথ খোলা নেই। তিনি জানান, বিএনপি আন্দোলন যাওয়ার আগে সরকারকে বারবার সংলাপের জন্য আহ্বান জানাবে। সরকার যদি তাতে সাড়া না দেয়, তাহলে রাজপথেই এর সমাধান হবে। তবে সরকার যদি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সহায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয় তাহলে আন্দোলনের প্রয়োজন পড়বে না।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এখন বিকল্প কিছু বলছি না। সহায়ক সরকারের কথা বলছি। আশা করছি একটা মুক্ত আলোচনা হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন শুধু বিএনপির নয়, সারাদেশের মানুষের দাবি। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাটা ভেঙে পড়েছে, তাই নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যবস্থা না করে নির্বাচনের কথা বলে কোনো লাভ নেই।

আগামী দিনে ভোটের অধিকার আদায়ে নিজেদের স্বার্থেই ঐক্যবদ্ধ হবে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, জনগণের ভোটের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে এটা ফেরত দিতে হবে। তা না দিলে এর দায়দায়িত্ব তাদেরই (সরকার) বহন করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। আমরা অবশ্যই নির্বাচনে যাব। আগামী নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সময় মত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সহায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরবেন। তিনি বলেন, আমরা এখন দল পুনর্গঠনের ওপর জোর দিচ্ছি। নির্বাচন ও আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে। আন্দোলন তো দিনক্ষণ ঠিক করে হয় না। সময় এবং পরিস্থিতি বুঝে দলের চেয়ারপারসন ডাক দেবেন। কারণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন বাংলাদেশে আর হতে দেয়া হবে না। জনগণের দাবির মুখে সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে।

এছাড়া একই প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, একদলীয় কোনো নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে আর হবে না। গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য বিএনপির আন্দোলনও চলবে, নির্বাচনের প্রস্তুতিও চলবে।

প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে দলের ভেতর এবং বাইরে থেকে নানামুখী চাপ আছে বিএনপি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নিবন্ধনের বিষয়টি। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ আইনের (আরপিও) ৯০ (এইচ) (১) অনুসারে পরপর দু’বার নির্বাচনে অংশ না নিলে দল হিসেবে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। ফলে নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই দলটির।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!