• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ১২ দেশের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক ডিসেম্বর ২৮, ২০১৬, ১০:৪৮ এএম
ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ১২ দেশের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১২টি সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে। শুক্রবার এ দেশগুলো অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাবে ভোট দিয়েছিল। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েল এ ব্যবস্থা নিল। খবর সিএনএন ও এএফপির।

এদিকে, ইসাইলের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রই দলবাজি করছে বলে অভিযোগ করেছেন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

ইসরাইলের দু’জন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, জাতিসংঘে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া ১২ রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক সাময়িকভাবে স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে এ দেশগুলোতে থাকা দূতাবাসের কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দুই কর্মকর্তা আরও জানান, ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, জাপান, ইউক্রেন, অ্যাঙ্গোলা, মিসর, উরুগুয়ে, স্পেন, সেনেগাল ও নিউজিল্যান্ডে থাকা দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।

এ কর্মকর্তারা জানান, এখন থেকে এ দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারও সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সাক্ষাৎ করবেন না। সেইসঙ্গে এসব দেশ থেকে আসা কোনো কূটনীতিককে স্বাগত জানাবে না ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে এ দেশগুলোতে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর ভ্রমণ কমিয়ে দেয়া হবে। তবে দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে ইসরাইলি কূটনীতিকরা যোগাযোগ রাখতে পারবেন। দূতাবাস বন্ধ থাকলেও দেশগুলোতে থাকা ইসরাইলি নাগরিকদের জন্য কাজ করবে দূতাবাসের কর্মকর্তারা। ২৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক ভোটে পশ্চিম তীরে ইসরাইলের অবৈধ বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে ভোটাভুটি হয়। ১৫ সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ সদস্য ভোট দিলে প্রস্তাবটি পাস হয়। ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে অতীতে তারা ইসরাইলবিরোধী প্রস্তাবগুলোতে ভেটো দিত। এরপর থেকে জাতিসংঘ, ওবামা প্রশাসন ও ভোট দেয়া রাষ্ট্রগুলোর সমালোচনা করছেন নেতানিয়াহু।

বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ওই প্রস্তাব পাস করাতে কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ করেছে তেল আবিব। ইসরাইলবিরোধী ওই প্রস্তাব পাসে ওবামা প্রশাসন কলকাঠি নেড়েছে, এমন স্পষ্ট প্রমাণ হাজির থাকার কথা বলছে ইসরাইল। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র ডেভিড কেয়িস এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত রন ডারমার দু’জনই অস্পষ্ট সূত্র থেকে প্রমাণ তুলে ধরার কথা বলেছেন। রন ডারমার দাবি করেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে দাঁড়ায়নি; শুধু এটাই নয়। তারা জাতিসংঘে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দলবাজির নেপথ্যে ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন প্রশাসনের (ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন) কাছে আমরা যথাযথ মাধ্যমে এ প্রমাণ তুলে ধরব। তারা যদি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে এটি জানাতে চায়; তাকে আমরা স্বাগত জানাব।’

২০১৬ সালের মার্চ থেকে নেতানিয়াহুর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিষয়ক মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন ডেভিড কেয়িস। ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, অন্যদের মতো আরব সূত্রগুলো ইসরাইলকে জাতিসংঘের প্রস্তাবের ব্যাপারে ওবামার সংশ্লিষ্টতার কথা জানিয়েছে। ডেভিড কেয়িস বলেন, ‘আরব দুনিয়া এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়; উভয় দিক থেকেই আমরা অকাট্য তথ্য পেয়েছি যে, এটা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছাকৃত আক্রমণ। প্রকৃতপক্ষে তারা এ প্রস্তাব তৈরিতে সহায়তা করেছিল।’

তবে ইসরাইলের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বারাক ওবামার উপজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বেন রোডস বলেন, ‘আমরা এ প্রস্তাবের খসড়া তৈরি করিনি। আমরা এ প্রস্তাব উপস্থাপন করিনি। এটা যখন ভোটাভুটির জন্য এলো তখনই আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু বসতি স্থাপনের বিরোধিতা এবং এটা নিয়ে উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, এ অঞ্চলের জন্য এটা আরও খারাপ হতে পারে। এখানে ভেটো দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সুবিবেচকের কাজ হতো না।’

এদিকে, জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাসের পরপরই পূর্ব জেরুজালেমে আরও শত শত ভবন তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির হারেজ পত্রিকা জানিয়েছে, পূর্ব জেরুজালেমের স্থানীয় পরিকল্পনা ও অবকাঠামো-বিষয়ক কমিটি ৬১৮টি নতুন ভবন তোলার বিষয় অনুমোদন দিতে যাচ্ছে। বুধবারই (আজ ২৯ ডিসেম্বর) এটি অনুমোদিত হতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!