• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
জঙ্গি অর্থায়নের উৎস অনুসন্ধানে পদক্ষেপ

ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিলেই তদারকি


অর্থনৈতিক রিপোর্ট মার্চ ২২, ২০১৮, ১২:২১ পিএম
ইসলামী ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিলেই তদারকি

ঢাকা : মালিকানায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এলেও ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের বেশিরভাগই একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একই সঙ্গে ধারণা করা হয়, ব্যাংকটি থেকে যারা ঋণের সুযোগ পায়, তাদের একটা অংশও এই বিশেষ রাজনৈতিক ভাবাদর্শের। তাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কোনো গ্রহীতা জঙ্গি অর্থায়ন করছে কি না- সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে চায় সরকার। এ অবস্থায় ব্যাংকটি ৫০ লাখ টাকার ওপরের ঋণ গ্রহীতাদের তথ্য নতুন করে তদারকি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সম্প্রতি জঙ্গিবাদের অর্থের উৎস অনুসন্ধান কার্যক্রম আরো জোরদারকরণ এবং এ কার্যক্রম অধিকতর সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের চতুর্থ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি টাস্কফোর্সের সভাপতি ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কার্যক্রমও তদারকি হবে। সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে।

উল্লেখ্য, অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটি মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ ৬৮ হাজার ৩০৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ বিষয়ে কথা বলতে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহবুব আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল করে সাড়া পাওয়া যায়নি। ফোন ধরলেও ইসলামী ব্যাংকের আরেকজন পরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

চতুর্থ টাস্কফোর্স সভার কার্যবিবরণী থেকে আরো জানা গেছে, বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস, মোবাইল ব্যাংকিং ও বিকাশ এবং এ ধরনের সব অনলাইন মাধ্যমে আন্তর্জাতিক লেনদেন নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের পদক্ষেপ নিতে অর্থ মন্ত্রণালয়েল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, হাসপাতাল, ক্লিনিক, কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে জঙ্গি তৎপরতা ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে কি না- সে বিষয়েও সতর্ক নজর রাখা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়, জঙ্গি অর্থায়নের সন্দেহভাজন এনজিওগুলোর বিষয়ে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জঙ্গি অর্থায়নে সম্পৃক্ত এমন সন্দেহজনক এনজিওগুলোকে নিয়মিত তদারকি করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া অভিযোগ রয়েছে, অনেক এনজিও ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের মাধ্যমে গ্রাম অঞ্চলে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে টাস্কফোর্স ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী এনজিওগুলোর বিষয়ে যাচাই করবে। সন্দেহজনক টেলিযোগাযোগের মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়ন হচ্ছে কি না- সে বিষয়ে নজরদারি অব্যাহত থাকবে।

সভায় প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এবং দেশের সব অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং লেনদেনের কোনো অর্থ জঙ্গিবাদের কাজে ব্যবহার হচ্ছে কি না- সে বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। অবৈধ ব্যাংকিং লেনদেনের কোনো তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে থাকলে তা তাৎক্ষণিক গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করতে হবে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনুসন্ধান করবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এ ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রয়োজনে যেকোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!