• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলামী ব্যাংকের দ্বন্দ্বে মুখ খুললেন চেয়ারম্যান


নিজস্ব প্রতিবেদক মে ১৮, ২০১৭, ০৯:৫৫ পিএম
ইসলামী ব্যাংকের দ্বন্দ্বে মুখ খুললেন চেয়ারম্যান

ঢাকা: ইসলামী ব্যাংকে অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করেছেন ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এক জরুরি বৈঠকে ব্যাংকের পরিচালক হয়েই চেয়ারম্যান হন তিনি। এক সংবাদ সম্মেলনে আরাস্তু খান বলেছেন, আহসানুল আলম পারভেজ ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান হয়ে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তা অসত্য। তিনি ইচ্ছে করলে ব্যাংকের পরিচালক পদ ছেড়ে চলে যেতে পারেন।

 ইসলামী ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পরিষদের মধ্যে অভন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন ব্যাংকটির সরকার মনোনীত পরিচালক অধ্যাপক আহসানুল আলম পারভেজ। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কথা প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, দুই ডজন স্বাধীনতা বিরোধী, রাষ্ট্র বিরোধী উর্দ্বতন কর্মকর্তারা ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মানছেন না। ফলে ব্যাংকটি ফের স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে চলে যেতে পারে। এজন্য তিনি ব্যাংকে গোয়েন্দা সংস্থার সাঁড়াশি অভিযান চালানোর জন্য অনুরোধ করেন।

তার বক্তব্য দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গত ১৩ মে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাহারায় ব্যাংকের বোর্ডসভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলতে ইসলামী ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে কথা বলেন বর্তমান চেয়ারম্যান আরাস্তু খান। তিনি বলেন, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ নিয়ে সম্প্রতি ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিভ্রান্তিকর। ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পরিচালনা পরিষদ জিম্মি হয়ে গেছে বলে তার (আহসানুল আলম) দেয়া বক্তব্য ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন আরাস্তু খান।

ব্যাংকটির চেয়ারম্যান বলেন, অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলমকে ঊর্ধ্বতন ব্যাংক কর্মকর্তারা পদত্যাগ করতে বলেছেন বলে যে বক্তব্য তিনি দিয়েছেন সেটি অসত্য। এসব অসত্য কথা বলে তিনি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায়িক সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছেন। আহসানুল আলম চাইলে পদত্যাগ করতে পারেন। তার থাকা বা পদত্যাগ নিয়ে ব্যাংকের ভেতর থেকে কোনো চাপ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরাস্তু খান জানান, ব্যাংকের পর্ষদে কোনও সিদ্ধান্ত হলে, তা চেয়ারম্যান ছাড়া অন্য কেউ প্রকাশ করতে পারে না। অথচ সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তার এই মিথ্যাচারের কারণে প্রধানমন্ত্রীর ইমেজ ড্যামেজ হয়েছে। সরকারের ইমেজ ড্যামেজ হয়েছে। ব্যাংকের ম্যানেজমেন্টের ইমেজও ড্যামেজ করা হয়েছে। সৈয়দ আহসানুল আলম উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।

ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরো বলেন, সৈয়দ আহসানুল আলম ইনডেপেনডেন্ট(স্বতন্ত্র) পরিচালক হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এখনই কোনও ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে আগামী বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ চাইলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে পারেন। তবে তার পদত্যাগ নিয়ে ব্যাংকের ভেতর থেকে কোনও চাপ নেই বলেও তিনি জানান।

‘আহসানুল আলম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পরে আমি তাকে ফোন করেছিলাম। আমি তাকে বলেছিলাম, আপনি একটু ওয়েট করতে পারতেন। আমি ৫ ঘণ্টা পরেই দেশে ফিরবো। যখন বোর্ড মিটিংয়ে ডাকা হলো, তখন তিনি বলেছেন, তাকে পদত্যাগ করতে ফোর্স (চাপ দেয়া) করা হচ্ছে। কে বলেছে, সেটা আমাকে বলেননি। এ বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়েছি বলে সাংবাদিকদের জানান আরাস্তু খান।

চেয়ারম্যান বলেন, আমরা এখানে (ব্যাংকে) ভালো কিছু করতে এসেছি। সবাই কিন্তু অনেক সৎ। এমনকি তিনিও (ভাইস চেয়ারম্যান), কিন্তু, আমি জানি না। তিনি কেন এগুলো করেছেন। সরকার, ব্যাংক, বোর্ড এবং এই ম্যানেজমেন্টের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কোনো অধিকার তার নাই।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসলামী ব্যাংকের এই চেয়ারম্যান বলেন, তিনি (ভাইস চেয়ারম্যান) বলেছেন, তাকে বাইরের কেউ ফোর্স করছে। ব্যাংকের কেউ বলেছে সেটা তিনি দাবি করেননি।

আরাস্তু খান আরো বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের জাকাত ফান্ডের অর্থ প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে জমা দেয়া হচ্ছে বলে যে খবর বেরিয়েছে এসব ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইসলামী ব্যাংকের জাকাত ফান্ডে সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা রয়েছে বলে পত্রিকায় যে খবর বের হয়েছে তা সঠিক নয়, মূলত টাকার পরিমাণ হচ্ছে মাত্র ২৮ কোটি।

ব্যাংকের এসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার ৪০ মিনিট কথা হয়েছে। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) জানিয়েছি জাকাতের অর্থ প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে হস্তান্তরের কোনো সিদ্ধান্ত ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নেয়নি বলে সাংবাদিকদের জানান।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!