• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘ইসলামে মাংস খাওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই’!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ২৮, ২০১৭, ১১:২৫ এএম
‘ইসলামে মাংস খাওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই’!

ঢাকা : ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েই বেআইনি কসাইখানায় লাগাম টেনেছেন যোগী আদিত্যনাথ। তার নির্দেশনায় সে রাজ্যে মাংস কেনাবেচা প্রায় বন্ধ হতে বসেছে।

ভারতে উত্তরপ্রদেশ মাংস ব্যবসায়ীরা গতকাল সোমবার (২৭ মার্চ) থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতেই মুখ খুললেন সপা নেতা আজম খান। তাঁর একটাই দাবি, মাংস খাওয়া বন্ধ করুক মুসলিমরা। তারা বলছেন, রাজ্যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের জনসংখ্যার ১৮ শতাংশই মুসলমান, আর মাংস ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশই মুসলিম। নির্বাচনের আগে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ক্ষমতায় এলে তারা রাজ্যের অবৈধ কসাইখানাগুলো বন্ধ করে দেবে।

 সে হিসেবে উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতা গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকে নির্দেশ দেন সমস্ত অবৈধ কসাইখানা এবং মাংসের দোকানে তালা লাগিয়ে দিতে।

যোগী আদিত্যনাথের মতে, মাংস বেচাকেনা ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের জন্য খারাপ। কিন্তু মাংস ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, বৈধ-অবৈধ তোয়াক্কা না করেই সব কসাইখানা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছে, উত্তরপ্রদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধ হলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ছাগল, মহিষ এসব পশুর মাংস বিক্রি বৈধ। যারা এমন ব্যবসা করেন তাদের দোকানও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের।

লখনউর সাংবাদিক বিশ্বদীপ ঘোষও বিবিসিকে বলছিলেন, যারা বৈধভাবে মাংস ব্যবসা করছেন তাদের সরকারি কর্মকর্তা হয়রানি করছেন। অবৈধভাবে যেসব কসাইখানা চলতো সেগুলো আস্তে আস্তে বন্ধ হচ্ছে বলে জানান তিনি। কারণ যাদের বড় মাংসের কারবারি আছে অর্থাৎ ‘স্লটার হাউজ’ চালায় তাদের একটা রাজনৈতিক প্রভাব আছে, এদের মধ্যে হিন্দু ব্যবসায়ীও আছে, বলছিলেন এই সাংবাদিক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশে মাংসের ক্রেতাদের মধ্যেও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

তবে এ নিয়ে কোন উত্তেজনা নেই, কারণ সাধারণ অনেকে মনে করছেন যোগী আদিত্যনাথ যে ‘অবৈধ কসাইখানা’ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছেন তা একটি সঠিক পদক্ষেপ। কারণ অবৈধ দোকান থেকে মাংস কেনা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না বলছিলেন ঘোষ। তাঁর মতে অনেকে এই কসাইখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত ধর্মের রঙ দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এটা আসলে ধর্মীয় বিষয় নয়। অনেক হিন্দু ব্যবসায়ীওতো আছেন।

এদিকে মাংস ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রধান চৌধুরী ইকবাল কুরেশি বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন, ধর্মঘটের ডাক দেয়ার কারণেও কর্তৃপক্ষ তাদের হয়রানি করছে। উত্তরপ্রদেশের বহু পরিবার রয়েছে যাদের জীবন ও জীবিকা কয়েক প্রজন্ম ধরে মাংস কেনা-বেচার ওপরই নির্ভরশীল। উত্তর প্রদেশ ভারতের বৃহত্তম মাংস উৎপাদনকারী রাজ্য। সরকার প্রতি বছর এই খাত থেকে প্রায় একশো সত্তর কোটি টাকা আয় করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!