• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ সালামি : একাল সেকাল


ফাতিহা প্রীতি জুন ২৯, ২০১৭, ১২:৩৪ পিএম
ঈদ সালামি : একাল সেকাল

মেয়েদের ঈদ সালামির পরিমাণ দেখে আমি চমকে উঠেছি। দু মেয়ে মিলে প্রায় ছ'হাজার টাকা! আমার ছোট বেলায় সর্বসাকুল্যে দুশ টাকা পেতাম কিনা সন্দেহ আছে। পাঁচ বা দশ টাকা পেলেই খুশি। কেউ যদি বিশ টাকা দিত তাহলে সেই আনন্দ আকাশ ছুঁত! পঞ্চাশ বা একশ টাকা যখন পেতে শুরু করলাম তখন কলেজ পেরোনো জীবন। সেই ঈদ সালামিতে কত কি করতাম। পছন্দের পোস্টার, ভিউকার্ড, মাঝে মাঝে দুএকটা বই। বছরের ওই একটা সময় টাকা খরচের কী আনন্দ!

ছোট মেয়ে বড় মেয়ের থেকে বারো টাকা বেশি পেয়েছে। ওই বারো টাকা বড় মেয়ে সালামি দিয়েছে ছোট মেয়েকে। ছোট মেয়ের কঠিন সিদ্ধান্ত, সে একটাকাও খরচ করবে না। খরচ করলেই টাকা কমে যাবে।

বড়মেয়ে অবশ্য এত কঠিন হতে পারেনি। টাকা খরচের উদ্দেশ্যে আমাকে নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দোকানে গেলো। ছোটখাটো একটা পুতুল অনেকক্ষণ নাড়াচাড়া করে জায়গায় রেখে দিতেই বললাম, পছন্দ হয়নি?
-হুম।
-কিনে ফেলো।
-অনেক দাম।
ট্যাগ চেক করে দেখি চারশত পঁচাত্তুর টাকা দাম লেখা। আমি বললাম, তোমার কাছে তো টাকা আছে। ইচ্ছা করলে কিনতে পারো।
-এটা কিনবো না। খাবারের কিছু কিনবো।

আশেপাশের কফিশপগুলো ছাড়া খাবারের দোকানগুলো তখনো খোলেনি। ওকে নিয়ে পাশেই একটা গ্রোসারিসপে ঢুকি। দোকানের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত সবকিছু দেখেশুনে লেস চিপসের একটা প্যাকেট হাতে নিলো। দোকানিকে দাম জিজ্ঞেস করতেই বলল, পঁচিশ টাকা।

মেয়ে হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিল, চিপসও কিনবে না! দোকান থেকে বের হয়ে বলল, চিপস কিনলে একশটাকা থেকে পঁচিশটাকা কমে যাবে। সেও টাকা খরচ করবে না। টাকা জমাবে।

বাসায় ফিরতে ফিরতে ভাবছিলাম, আমাদের সময় সর্বসাকুল্যে হয়ত একশ থেকে দুশটাকাই পেতাম। সেই টাকায় বড় বড় আনন্দ কিনে ঘর ভরাতাম, মনও ভরাতাম। আজকের প্রজন্ম... কিছু বলার নাই!

লেখক : কবি ও গল্পকার

Wordbridge School
Link copied!