• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদবাজারে সেমাই চিনিতে স্বস্তি


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৪, ২০১৮, ০২:০৭ পিএম
ঈদবাজারে সেমাই চিনিতে স্বস্তি

ঢাকা : পবিত্র ঈদুল ফিতরে বাড়িতে বাড়িতে সেমাই-ফিরনি জাতীয় মিষ্টান্নের রেওয়াজ বেশ পুরনো। ঈদের সকাল থেকে শুরু করে পরের কয়েক দিন থাকে এই আয়োজন। এ কারণে ঈদের পোশাকসহ প্রয়োজনীয় সব কেনাকাটা শেষে ক্রেতারা ছুটতে শুরু করেন সেমাই-চিনির বাজারে। এবার যারা রাজধানীতে ঈদ করবেন তাদের কেনাকাটার ব্যস্ততা এখনো শেষ হয়নি। তবে যারা গ্রামে যাবেন তাদের অনেকেরই সেই পর্ব শেষ, বাকি শুধু স্বজনদের জন্য সেমাই-চিনি কেনা। তারা এখন ভিড় করছেন এই বাজারে। রাজধানীতে যারা ঈদ করেন তারা সাধারণত সেমাই-চিনির বাজারে যান শবেকদর থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত। সব মিলে জমে উঠেছে এই বাজার। বাজার ঘুরে পাওয়া গেছে সুখবরও। রোজার শুরুতে কিছুটা অস্থিতিশীল হয়ে ওঠা চিনির দাম এখন স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। গত বছরের দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন রকম সেমাই।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া-মহল্লার মুদি দোকান থেকে শুরু করে সুপারশপ পর্যন্ত সবখানে সেমাই-চিনি বিক্রির বাড়তি আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে পোলাওয়ের চাল, গুঁড়োদুধ ও মসলার আয়োজন। ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো পণ্যের দামই অস্বাভাবিকভাবে বাড়েনি। তালতলা বাজারের রাজধানী স্টোরের মালিক রাসেল আহম্মেদ বলেন, আমরা সেমাই-চিনির বাড়তি আয়োজন রেখেছি সপ্তাখানেক আগেই। গত কয়েক দিন সেমাই-চিনির বাজার তেমন না জমলেও শবেকদরের নামাজের পর থেকে ক্রেতাদের ঢল নামবে। ঈদের আগের রাত পর্যন্ত ক্রেতাসমাগম থাকবে অনেক বেশি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর অন্যতম পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজার ঘুরে সেমাই-চিনির ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। সেখানকার উপহার স্টোরের বিক্রেতা বাবুল হোসেন জানান, অনেকে গ্রামের বাড়িতে নেওয়ার জন্য সেমাই কিনছে। অনেকে দরিদ্রদের বিতরণের জন্য সেমাই-চিনি পাইকারি নিচ্ছে।
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদার শীর্ষে রয়েছে বনফুল, অলিম্পিয়া, ড্যানিশ, কুলসুন, আলাউদ্দিন ও প্রিন্স ব্র্যান্ডের সেমাই। এসব ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রামের লাচ্ছাই বেশি বিক্রি হচ্ছে; দাম পড়ছে আগের মতোই ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রামের প্যাকেটে লাগছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা। আর প্যাকেটজাত অধিকাংশ ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম সাদা সেমাইয়ের দাম পড়ছে ৩০ টাকা। তবে ঘিয়ে ভাজা দাবি করে অনেক সেমাই বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোলা সেমাইয়ের দামও আগের বছরের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি খোলা লাচ্ছা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আর সাধারণ সাদা সেমাই ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

চকবাজারের পাইকারি দোকানে সেমাই বিক্রি হয় টন বা খাঁচি হিসেবে। পাইকারি এই বাজারে হাতেগোনা কিছু দোকানে খুচরায়ও সেমাই বিক্রি হয়; দামও কম পড়ে। সেখানে কথা হয় মেহেদি হাসান নামে এক সাধারণ ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতি বছরই আত্মীয়দের বাড়িতে সেমাই পাঠাই। এবারো পাঠাচ্ছি। তাই এখানে আসা।

এদিকে রোজার শুরুতে চিনির কেজি ৭০ টাকা পর্যন্ত উঠলেও কয়েক দিন আগে কমতে শুরু করে। গতকাল বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি চিনি ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। সাধারণ চালের দাম কিছুটা বাড়লেও বাড়েনি পোলাওয়ের চালের দাম। খোলা পোলাওয়ের চাল খুচরায় ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে প্যাকেটজাত বিভিন্ন কোম্পানির পোলাওয়ের চালের দাম বেশি পড়ছে।

মসলা বাজারের খুচরা বিক্রেতারা জানান, হাতেগোনা কয়েক পদের মসলার দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি ভারতীয় জিরা ৩৪০-৩৬০ টাকা, দারুচিনি ২১০-২৮০, সাদা এলাচ ১ হাজার ২৭০ থেকে ১ হাজার ৬০০, লবঙ্গ ৮০০-৯০০, কালো গোলমরিচ ৬০০-৬৫০, সাদা গোলমরিচ ১ হাজার, কিশমিশ ২২০-২৪০ এবং বাদাম ৪০০-৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ হোল সেল স্পাইসেস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ রুবেল বলেন, বেশিরভাগ মসলার দাম আগের মতোই রয়েছে। তবে খুচরা বাজারে কোথাও কোথাও দাম একটু বেশি পড়ছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!