• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদের খাবার


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৭, ২০১৮, ০৬:০৯ পিএম
ঈদের খাবার

ঢাকা : ঈদের দিন সকালে সেমাই, ফিরনি বা পায়েস ছাড়া কী ভাবা যায়? সকাল সকাল মায়েরা তাই ব্যস্ত হয়ে যান সেমাই রান্নায়। কারণ সেমাই মুখে দিয়ে তবেই বাড়ির পুরুষেরা সবাই নামাজে যাবে। নামাজ থেকে ফিরে সবার মন টানে ঝাল কিছু খাওয়ার প্রতি। এ সময় খাবার আয়োজনে তাই থাকা চাই চটপটি, নুডলস, কাবাব ইত্যাদি। নইলে যেন ঈদটা ঠিক জমে না। দুপুর আর রাতে পোলাও, গরুর রেজালা, রোস্ট, বিরিয়ানি দিয়ে চলে ভূরিভোজ আর অতিথি আপ্যায়ন।

শহুরে আপ্যায়নে ঈদের দিনের মেন্যুতে যুক্ত হয় প্রচলিত খাবারের বাইরে নিত্যনতুন সব মুখরোচক খাবার। বিদেশি খাবারও ঠাঁই করে নেয় কারো কারো খাবারের টেবিলে। প্রিয়জনকে চমকে দিতে বিশেষ এ দিনটিতে গৃহিণীরা রাঁধেন নতুন ধরনের খাবার। আগে খাবারে মুঘল রান্নার প্রাধান্য থাকলেও বর্তমানের ঈদ রসনায় দেশীয় আইটেমগুলোর পাশাপাশি দেখা মেলে ইতালিয়ান, থাই আর চাইনিজ সুস্বাদু সব খাবারের।

ঈদের বিকালে বাইরে খেতে যাওয়া মানেই যেখানে ছিল চটপটি আর ফুচকা, সে জায়গাটি এখন দখল করে নিয়েছে পিৎজা, বার্গার, পাস্তার মতো ফাস্টফুডগুলো।

একসময় গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে ঈদের বিশেষ খাবার তৈরির আয়োজন কিন্তু শুরু হয়ে যেত আগের রাত থেকেই। চাঁদরাতে কুপি আর হারিকেনের আলোয় বসে রাত জেগে বাড়ির মেয়েরা তৈরি করত হাত সেমাই, তেলের পিঠা, নকশি পিঠা, নারিকেলের পিঠাসহ নানা পদের পিঠা। সে পিঠা ঈদের দিন সকালে পাঠানো হতো প্রতিবেশী আর আত্মীয়দের বাড়ি। এ পিঠাতেই হতো অতিথি আপ্যায়ন। যদিও এর প্রচলন এখন ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে। এখন আর রাত জেগে হাতে কাটা সেমাই তৈরি করতে হয় না। সুপার শপগুলোতে এখন প্যাকেট আকারেই কিনতে পাওয়া যায়। তাই আগের মতো আর কষ্ট করতে হয় না কাউকে। এখন সব  কিছুই রেডিমেড পাওয়া যায়।

উনিশ শতকের শেষ এবং বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ঢাকায় ঈদ আকর্ষণের বড় একটি অংশ জুড়ে ছিল খাবার। রমজান মাসজুড়ে চকবাজারে ইফতারি পণ্য হিসেবে বাকরখানি, চাপাতি, নানরুটি, কুলিচা, নানখাতাই, শিক কাবাব, হান্ডি কাবাব, মাছ ও মাংসের কোপ্তা, শামি ও টিকা কাবাব, পরোটা, বোগদাদি রুটি, মোরগ কাবাব, ফালুদার শরবত ও নানারকম ফলের চাহিদা থাকলেও ঈদের দিন ‘তোড়াবন্দি’ খাবার ছিল বিখ্যাত।

এই খাবারে থাকত চার রকমের রুটি, চার রকমের পোলাও, চার রকমের কাবাব, পনির, বোরহানি, চাটনি অর্থাৎ প্রত্যেক পদের চার রকমের খাবার দিয়ে সাজানো হতো তা।

এ ছাড়া কমপক্ষে ২৪টি পদ থাকত। আর সে সময়ে সারা দেশের সাধারণ মানুষ ঈদের দিন প্রতিদিনের চেয়ে একটু বাড়তি আয়োজন রাখত।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!