• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের ছুটিতে ব্যাংকে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৬, ০৯:২৯ পিএম
ঈদের ছুটিতে ব্যাংকে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ

ঈদের ছুটিতে ব্যাংকে সাইবার হামলার আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ কারণে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত  নির্দেশনা সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে এ বছরের সরকারি ছুটি দীর্ঘ হওয়ায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। বিশেষভাবে সাইবার অপরাধ ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি ও ব্যবসাকেন্দ্রের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা প্রয়োজন। এরই  পরিপ্রেক্ষিতে ছুটির দিনে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, শাখা অফিস, এটিএম বুথে সাইবার নিরাপত্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে। এ ক্ষেত্রে, প্রয়োজনে ব্যাংক কর্মকর্তারা পালাক্রমে তদারকির ব্যবস্থা  নেবেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ঈদের ছুটিতে ব্যাংকের শাখায় বা এটিএম বুথে যেন অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা না ঘটে, সে জন্য দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোকে  সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশি-বিদেশি জালিয়াত চক্র ৫টি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে অর্ধশতাধিক গ্রাহকের টাকা তুলে নেয়। এ ছাড়া স্কিমিং ডিভাইস ব্যবহার করে আরো প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের তথ্য চুরি করে তারা। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি ও এটিএম বুথে জালিয়াতির পরও ব্যাংকগুলোর সাইবার নিরাপত্তা জোরদারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ফায়ারওয়াল স্থাপন, নিয়মিত তথ্য যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া, সব এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ও পিন শিল্ড ডিভাইস বসানো, স্বয়ংক্রিয় এসএমএসের মাধ্যমে লেনদেনের তথ্য দেয়াসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ প্রসঙ্গে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, ব্যাংকের নিরাপত্তার চেয়ে ভল্ট-সংক্রান্ত নিরাপত্তা বেশি জরুরি। তবে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়েও ব্যাংকগুলো এখন সচেতন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে। তিনি বলেন, বেশির ভাগ ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে চলার চেষ্টা করছে। অবশ্য  সরকারি ব্যাংকগুলোর কিছু শাখা প্রত্যন্ত গ্রামে হওয়ার কারণে ঝুঁকি এখনো আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদের ছুটিতে দৈনন্দিন ও স্বাভাবিক লেনদেনের সুবিধার্থে ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদে টাকা উত্তোলনের সুবিধার্থে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের ব্যবস্থাসহ বুথগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদ উৎসবে গ্রাহকদের কেনাকাটা ও ছুটিকালীন ব্যাংকের শাখা বন্ধ থাকায় গ্রাহকরা এটিএম, পস (পয়েন্ট অব সেলস) এবং ই-পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে বেশি লেনদেন করেন। ইলেকট্রনিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সার্বক্ষণিক লেনদেন নিশ্চিত করতে এটিএম ও পস নেটওয়ার্ক চালু রাখা এবং এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক নগদ টাকার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো অবস্থায়ই বুথ বন্ধ রাখা যাবে না। এটিএমে সার্বক্ষণিক পাহারাদারের সতর্ক অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। আর পসের মাধ্যমে পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো বিক্রেতা যেন নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত চার্জ না কাটেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, কোনো অবস্থায়ই গ্রাহক যেন হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন সাপোর্ট দিতে হবে। সব ধরনের ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সতর্কতা অবলম্বনের জন্য গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। আর যেকোনো পরিমাণের এটিএম ও পস লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহককে তাৎক্ষণিক এসএমএস অ্যালার্ট দিতে বলা হয়েছে। কোনো কারণে পস বন্ধ থাকলে আগেই তা গ্রাহককে জানানোর পাশাপাশি অনলাইন ই-পেমেন্ট গেটওয়েতে কার্ডভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দুই স্তরবিশিষ্ট যাচাইব্যবস্থা চালু রাখতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ব্যাংকগুলোর সাত হাজার ৯৫৪টি এটিএম বুথ রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর বুথের সংখ্যা সাত হাজার ৬২৫টি। সারাদেশের ৮৮ লাখ ডেবিট ও প্রায় সাত লাখ ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক এসব এটিএম বুথ থেকে লেনদেন করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!