• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের পর সবজির দাম চড়া


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৭, ০১:৩৭ পিএম
ঈদের পর সবজির দাম চড়া

ঢাকা : হাতিরপুল বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে এসেছিলেন নাসরিন সুলতানা। কিন্তু দাম শুনে বচসা শুরু হয়ে গেল বিক্রেতার সঙ্গে। বিক্রেতা মো. আরিফ এক কেজি কাঁচামরিচের দাম চেয়েছেন ১২০ টাকা। কিন্তু নাসরিনের দাবি, দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে। শেষে মরিচ না কিনেই বাড়ির পথ ধরেন এই গৃহিণী। যাওয়ার সময় বললেন, ‘কি বলব! ইচ্ছেমতো দাম চায় এঁরা।’

ঈদের পর মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির দাম কিছুটা চড়া ছিল। অবশ্য ক্রেতাও খুব বেশি ছিল না। গত জুলাই ও আগস্ট মাসে বন্যা এবং বৃষ্টির প্রভাবে রাজধানীর সব সবজির বাজারই ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তখনো প্রায় সবজির দাম ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ছিল। এখন সেই দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। হাতিরপুল বাজারে বড় আকারের করলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতার দাম আকাশছোঁয়া, ৩০০ টাকা কেজি। টমেটোর দাম কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা। পটল আর ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. খলিল কারওয়ান বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কেনেন। তিনি বলেন, আজকে সবজি কম পেয়েছেন। সরবরাহই কম ছিল। তাই দাম একটু বেশি। কিন্তু ক্রেতা খুব কম। বিক্রি হচ্ছে টুকটাক। নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে মাত্র গুটিকয়েক সবজির দোকান খোলা দেখা গেছে। ছিলেন হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা, তাও আবার দামে বনিবনা হচ্ছে না। এই বাজারে লালশাকের একটি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। মিষ্টি কুমড়ার ছোট ফালির দাম ৩০ টাকা। শসার দাম একটু কম, প্রতি কেজি ৫০ টাকা। ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি ৪০ টাকায়। আর চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায়।

নিউমার্কেটে বেশির ভাগ ক্রেতাই সবজির দাম বেশি বলে অভিযোগ করেছেন। এই শুনে বিক্রেতা ফারুক হোসেনের উত্তর, ‘ঈদের পরে বাজার, দাম বেশি তো হইবেই। মাল কম, দাম বেশি হইবে না? আরো দুই-চার দিন যাক, তারপর কমবে।’

পলাশী কাঁচাবাজারে বাজার করছিলেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা আইয়ুব মুহাম্মদ খান। তার কথা, ঈদের পর সবজির দাম অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘আগে যে বাঁধাকপি কিনতাম ৩৫ টাকায়, এখন তা ৫০। ১৫ টাকার লেবু এখন ২৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে।’

পলাশীতে বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। হাতিরপুল বাজারে যে করলা কেজিপ্রতি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তা এখানে পাওয়া গেল ৪০ টাকায়। এই বাজারে কাঁচামরিচের ঝালও একটু কম, কেজি ১০০ টাকা। আর শিম বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। এক একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। এখানকার সবজি বিক্রেতা মো. হান্নান বলেন, গতকাল কিছু সবজি কারওয়ান বাজারের আড়ত থেকে কিনেছেন। এছাড়া ঈদের আগে কিনে রাখা সবজিও ছিল। সব মিলিয়েই বিক্রি করছেন। আগে কিনে রাখা সবজির দাম কম। তবে কিছু সবজির দাম বেড়েছে।

কারওয়ান বাজারে সবজির দাম অন্যান্য বাজারের তুলনায় কিছুটা কম। এখানকার বিক্রেতাদের দাবি আজ আড়তে সবজি কম পাওয়া গেলেও, দাম বাড়েনি। এই বাজারে বড় আকারের করলা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকায়। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। ঢ্যাঁড়সও বিক্রি হচ্ছে একই দামে। এক কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, পলাশী বাজারের চেয়ে ২০ টাকা কমে।

কিন্তু ক্রেতাদের দাবি ভিন্ন। মগবাজার থেকে এসেছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী এমদাদুল হক। তিনি বলেন, ‘বিক্রেতারা সবাই সিন্ডিকেট করে ফেলেছে। সবাই একই দাম চায়। ঈদের আগের চেয়ে প্রতি সবজিতেই ১০-১৫ টাকা দাম বেড়েছে। এর কমে কেউ বিক্রিই করতে চায় না।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!