• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ১২, ২০১৭, ১১:৪১ এএম
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয়ের নেপথ্যে

জয়ের পর বিজেপি সমর্থকদের উল্লাস

ঢাকা: ভারতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগোরিষ্টতা পেয়ে জয়ী হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ৪০৩ আসনের বিধানসভায় ৩১২টি আসন পেয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে বিদায়ী সরকার পরিচালনা করত যে সমাজবাদী পার্টি, তারা কংগ্রেস দলের সঙ্গে জোট গড়ে পেয়েছে মাত্র ৫৪টি আসন।

এছাড়াও উত্তরাখন্ড রাজ্যেও বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে পাঞ্জাব আর মনিপুরে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস দল। গোয়া বিধানসভা ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে - কংগ্রেস আর বিজেপি কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় নি। সরকার গড়তে তাদের এখন নির্ভর করতে হবে দুটি আঞ্চলিক দলের ওপরে।

নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে এই প্রথম বড় নির্বাচনের মুখে পড়েছিল দলটি। এছাড়াও নরেন্দ্র মোদীর কার্যকালের তিনবছর পেরিয়ে আসার পরে এই ভোট হল।

এ নির্বাচনের ফলাফলের মধ্য দিয়ে মোদীর অবস্থান আরো শক্ত হল বলে মনে করছেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এ নির্বাচনে কীভাবে এই বিপুল জয় পেল বিজেপি? এমন প্রশ্ন এখন সবার মাঝেই। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা। 

ভোট প্রক্রিয়ার পর্যবেক্ষণ করে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশে যে জাতি-ধর্মের অঙ্ক কাজ করে, সেটাই এবার বিজেপি-র এত আসন পাওয়ার মূল কারণ। তাদের চিরাচরিত যে হিন্দু ভোট, সেটা দখলে রাখতে পেরেছে, এর সঙ্গে অন্যান্য হিন্দু জাতি - যাদের পিছিয়ে থাকা জনজাতি বলা হয়ে থাকে, তাদের ভোটও এবার গুছিয়ে ঘরে তুলেছে বিজেপি।

সমাজবাদী পার্টির মূল ভিত্তি যে যাদব গোষ্ঠী, তারা ছাড়া অন্যান্য গোষ্ঠীর সমর্থন পেয়েছে বিজ পি - এমন সব গোষ্ঠীগুলিও এবার বিজেপি কে ভোট দিয়েছে, যারা আগে কখনও সমাজবাদী, কখনও বহুজন সমাজপার্টিকে সমর্থন করত। এই হিন্দু ভোট একত্রীকরণ করেই এত আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি।

এই নির্বাচনকে মনে করা হচ্ছিল ৫০০ আর হাজার টাকার নোট বাতিলের যে ঘোষণা নরেন্দ্র মোদী নভেম্বরে করেছিলেন, তার ওপরে একটা গণভোট। কোটি কোটি মানুষ - বিশেষ করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ, মধ্যবিত্ত, ছোট ব্যবসায়ী, কৃষক - এদের ব্যাপক হয়রানি পোহাতে হয়েছে গত কয়েক মাসে।

কিন্তু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও ভোটবিশেষজ্ঞ সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরী বলছিলেন, নোটবাতিলের সেই ঘোষণার কোনও কুপ্রভাব বিজেপির ওপরে পড়ে নি।

তার ভাষ্য, ‘নোটবাতিলটা কোনও নির্বাচনী ইস্যুতে যে রূপান্তরিত হয় নি, সেটা দেখা যাচ্ছে। এর একটা কারণ বোধহয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রধান আর দলের নেতা হিসাবে উন্নয়নের যে মডেল সামনে আনছেন, সেটাতে মানুষ আস্থা রাখছেন। দ্বিতীয়ত, নোট বাতিল করার স্বপক্ষে যে যুক্তিগুলো সরকার দিয়েছিল, যেমন কালো টাকার কারবারীদের নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি, সেটাকে মানুষ মেনে নিয়েছেন, নিজেদের অনেক অসুবিধায় পড়তে হলেও।’

৪০৩ আসনের বিধানসভায় প্রায় ১২০টি আসন এমন রয়েছে, যেখানে মুসলমান ভোটারের সংখ্যা ২০ শতাংশর বেশি - অর্থাৎ সেখানে মুসলমানরাই নির্ণায়ক শক্তি বলে মনে করা হয়। এইরকম আসনগুলির অনেকগুলিতেই বিজেপি এবার ভাল ফল করেছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটাকে মুসলমানদের মধ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তা বাড়ার একটা ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করা হচ্ছে। 

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!