উদ্বোধনের অপেক্ষায় ২ হাজার ‘কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’

৬৪টি জেলা শহরে একটি করে ‘কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে ২ হাজারের বেশি ‘কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’ স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নাম অনুসারে দেশের সর্ববৃহৎ এ ল্যাবটির নাম রাখা হয়েছে ‘শেখ রাসেল কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব।’  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময় দিলে চলতি মাসেই উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবে ল্যাবগুলো। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ সূত্রে এসব জানা গেছে। এরই মধ্যে দেশের ৬৪টি জেলা শহরে একটি করে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, উপজেলা পর্যায়ে ‘কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ল্যাব’ তৈরি করা হয়েছে। সারা দেশে পর্যায়ক্রমে ২ হাজারের বেশি ল্যাব তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।

সরকারের আইসিটি বিভাগ জানিয়েছে, ল্যাবের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি হয়েছে। যে বাজেট বরাদ্দ ছিল তা দিয়ে ২ হাজার ল্যাব তৈরির পরও বাজেটের টাকা উদ্বৃত্ত থেকে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে আরও ল্যাব তৈরির নির্দেশ দেন। সে হিসেবে ২ হাজারের বেশি ল্যাব তৈরি হয়েছে।

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ল্যাবে ৯টি ভাষা শেখানো হবে। এ জন্য এ বিষয়ক একটি সফটওয়্যার ডিজাইন করা হয়েছে। ল্যাবে ইংরেজি, আরবি, কোরিয়ান, চাইনিজ, রাশান, স্প্যানিশসহ আরও তিনটি ভাষা শেখানো হবে বলে তিনি জানান।

দেশের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেয়া জায়গায় তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ক্লাবগুলো গড়ে তোলা হবে। একইসঙ্গে কম্পিউটার ল্যাবগুলো ভাষা শিক্ষা ক্লাব হিসেবেও গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটপ, একটি ইন্টারনেট মডেম, উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং ল্যাঙ্গুয়েজ কনটেন্ট থাকবে।

আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, কম্পিউটার ক্লাবগুলো মূলত ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সহায়ক হবে। ফ্রিল্যান্সাররা ওই ল্যাব থেকে আউটসোর্সিং বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ, মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশনের জন্য ভাষা শিক্ষা, যোগাযোগ রক্ষাসহ বিভিন্ন সহযোগিতা পাবেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থী এবং বেকার তরুণরা প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন। এছাড়া যারা চাকরির জন্য বিদেশে দেশে চান তারাও সিংশ্লিষ্ট দেশের ভাষা শিখতে পারবেন ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব থেকে।

কম্পিউটার ও ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব তৈরির জন্য ৩০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। আইসিটি বিভাগের অধীনে আইসিটি অধিদফতর এটি বাস্তবায়ন করবে। অধিদফতর শুধু ল্যাব তৈরি করবে। কোনও অবকাঠামো তৈরি করবে না। ল্যাব স্থাপনে আগ্রহী স্কুল বা কলেজ একটি সুপরিসর কক্ষ দিলেই সেখানে ল্যাব সাজিয়ে দেয়া হবে। নিতান্তই স্কুল, কলেজ জায়গা দিতে না পারলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কোনও জায়গা দিলে সেখানেই ল্যাব গড়ে তোলা হবে।

এছাড়া উপজেলার বাইরে সম্ভাবনাময় ইউনিয়নেও এই ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হতে পারে। এলাকার জনবসতি, শিক্ষার হার, ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা, এলাকার অবস্থান ইত্যাদির নিরিখে ইউনিয়ন নির্বাচিত হবে।

‘শেখ রাসেল কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’ স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ৬৪টি জেলায় ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাবসহ সারা দেশে ২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের মাদ্রাসা) কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য চারটি লটে ভাগ করা হয়। চলতি বছরের জুনের মধ্যে ২ হাজার কম্পিউটার ল্যাব এবং প্রতি জেলায় একটি করে মোট ৬৪টি ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি