• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়ন উৎসবে ঢাকায় বর্ণিল শোভাযাত্রা


নিজস্ব প্রতিবেদক মার্চ ২৩, ২০১৮, ০৪:০৯ পিএম
উন্নয়ন উৎসবে ঢাকায় বর্ণিল শোভাযাত্রা

ঢাকা : উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার সূচক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের এই স্বীকৃতি শুধুই একটি রাজনৈতিক দলের নয়। এ অর্জন ১৬ কোটি মানুষের। সবার চেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে বাংলাদেশের এই সাফল্য। ঠিক এমনটি বলছিলেন বাংলাদেশে পর্যটন করপোরেশনের উপব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) শিপ্রা বসু।

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আয়োজিত ‘উন্নয়ন উৎসব’ উদযাপনে সংস্থাটির শোভাযাত্রা শুরু হয় সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমির সামনে থেকে। একই স্থান থেকে লাল-সবুজ পোশাকে ব্যান্ড পার্টি নিয়ে শোভাযাত্রা শুরু করে তেজগাঁওয়ের সরকারি শিশু পরিবার। ড্রাম ও ট্রাম্পেটের তালে তালে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে এক ঝাঁক শিশু এগিয়ে চলছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দিকে।

নিজেদের প্রধান কার্যালয় থেকে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের করে মৎস্য অধিদফতর। ঠিক একই রকম চিত্র ছিল রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, শিক্ষা ভবন, চানখাঁরপুল এলাকারও।

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের স্বীকৃতি উদযাপনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী সেজেছিল উৎসবের আমেজে।

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, শ্রমিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বের করা হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। মৎস্য ভবন মোড়, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, আজিমপুর-পলাশীর মোড়, চানখাঁরপুল, নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুলসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট থেকে শুরু হয় এসব শোভাযাত্রা। আর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ছিল উৎসবের মিলনকেন্দ্র। বিকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যায় শুরু হয় দিনের অন্যতম আকর্ষণ মনোমুগ্ধকর লেজার শো।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী ও এর আশপাশ থেকে আসা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রথমে মিলিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে। সেখান থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শোভাযাত্রা সহকারে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেস ক্লাব হয়ে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। একই স্থান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দিকে এগোতে থাকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

কারওয়ান বাজারের প্রধান কার্যালয় থেকে দীর্ঘপথ হেঁটে মিলনকেন্দ্রে মিলিত হয় ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, পেট্রোবাংলা, টিসিবি ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া প্রতিটি মানুষের মধ্যেই ছিল উৎসবের ছোঁয়া। বর্ণিল পোশাক, হাতে ব্যানার, মাথায় ক্যাপ কিংবা ব্যান্ড, দেখে মনে হচ্ছিল পহেলা বৈশাখ বা ধর্মীয় কোনো উৎসবের আমেজ।

কথা হয় সরকারি শিশু পরিবারের শিক্ষার্থী নুসরাত ফাতেমার সঙ্গে। নুসরাত জানায়, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বরের মতোই লাগছে তার কাছে। জাতীয় দিবসগুলোতে যেভাবে আনন্দ নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আমরা অংশ নিই, ঠিক তেমনই ছিল বৃহস্পতিবার দিনটা।

এদিকে ‘উন্নয়ন উৎসব’ উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ মানুষের মতো রাজধানীও সেজেছিল ভিন্ন রকম সাজে। পথে পথে বর্ণিল পতাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কার্যালয়গুলোতেও ছিল সেই উৎসবের আমেজ। কার্যালয়গুলোর সামনে ব্যানার, বিলবোর্ডে তুলে ধরা হয়েছে এযাবৎকালের যত অর্জন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় স্থাপন করা এলইডি বিজ্ঞাপন বোর্ডগুলোতে ভাসছিল বাংলাদেশের উন্নয়নের এই জয়যাত্রার প্রচারণা। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত এসব বিজ্ঞাপন বোর্ডে দেখানো হচ্ছিল খাতওয়ারি সব সফলতার চিত্র।

উৎসব উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনই পালন করছে বিশেষ সেবা সপ্তাহ। আর এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রতিটি সড়কে ছিল করপোরেশন দুটির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। ধুলামুক্ত করতে প্রধান প্রধান সড়কে ছিটানো হচ্ছিল পানি। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভ্রাম্যমাণ গাড়িগুলো ব্যস্ত ছিল পরিচ্ছন্নতার কাজে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্যানেল মেয়রের নেতৃত্বে পৃথক পৃথক র‌্যালিও বের করা হয়। দুই নগর ভবন থেকে শুরু হওয়া এসব র‌্যালি এসে মিলিত হয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে নগর ভবন থেকে একটি র‌্যালি বঙ্গবাজার, শিক্ষা ভবন, জিরো পয়েন্ট হয়ে প্রবেশ করে স্টেডিয়ামে। এতে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরসহ অংশ নেয় বিভিন্ন পেশার মানুষ।

উত্তর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ওসমান গনির নেতৃত্বে পৃথক আরেকটি শোভাযাত্রা বের করা হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের প্রধান মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এ উৎসব সবার। এখানে কাউকে জোর করে অংশগ্রহণ করানো হচ্ছে না। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। এ গর্ব শুধু সরকারের নয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব বলেন, যদি কেউ এই অর্জনকে আওয়ামী লীগের অর্জন বলে দেখে তাহলে তাদের মানসিকতার সমস্যা আছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সবার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের এই অর্জন। তাই এই উৎসব সব দলের, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের। এখানে দলীয়করণ করার কিছু নেই।

এদিকে উন্নয়ন উৎসব উপলক্ষে সরকারের সব মন্ত্রণালয় গত ২০ মার্চ থেকে সারা দেশে সেবা সপ্তাহ পালন করছে। গতকালও সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!