• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
‘উই’ এর যাত্রা শুরু

উপেক্ষিত ১০ নারী মুক্তিযোদ্ধাকে ঈদশুভেচ্ছা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ২৪, ২০১৭, ০৮:৪০ পিএম
উপেক্ষিত ১০ নারী মুক্তিযোদ্ধাকে ঈদশুভেচ্ছা

ঢাকা: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা উপেক্ষিত ১০ নারী মুক্তিযোদ্ধাকে ঈদশুভেচ্ছা জানিয়ে যাত্রা শুরু করলো মানবতাবাদী সংগঠন ‘উই’ (উই আর দ্য আর্থ-আমরাই পৃথিবী)। প্রচলিত প্রথা উপেক্ষা করে প্রধান কিংবা বিশেষ অতিথি ছাড়াই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় শাড়ি ও নগদ টাকা।

শনিবার (২৪ জুন) সকালে রাজধানীর কাঁটাবনে কনকর্ড ইম্পোরিয়ামে অবস্থিত বলাকা প্রকাশন কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয় এসব মুক্তিযোদ্ধা মাকে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সেখানে উপস্থিত হন তারা একে একে।

আমন্ত্রিত মায়েরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা কানন ব্যাপারী, রিজিয়া বেগম, রাজিয়া বেগম, নাজমা আকতার, লুৎফা বেগম, সন্ধ্যা ঘোষ, রঙমালা, নূরজাহান বেগম, নাজমা বেগম ও কেয়া বিশ্বাস। এঁদের বেশিরভাগেরই আশ্রয় রাজধানীর তেজগাঁও রেলবস্তিতে।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে, সম্ভ্রমের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করলেও তারা আজ ছিন্নমূল। তাদের অনেকেরই মাথার গোঁজার ঠাঁই নেই। আজও বস্তির অন্ধকারে চলছে তাদের জীবনযুদ্ধ।

আয়োজনে উপস্থিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুক্তিযোদ্ধা নাজমা আকতার। তার অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় কোনো অনুষ্ঠানে তাদের ডাকা হয় না। তাদের সম্মান দেয়া হয় না। আরেক মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ, চারদশকের প্রতীক্ষার পর গেজেটে নাম উঠলেও কোনো ভাতা পাচ্ছেন না।

উপেক্ষিত ও বঞ্চিত এসব মুক্তিযোদ্ধা মায়ের হাতে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা স্বরূপ শাড়ি ও নগদ অর্থ তুলে দেন ‘উই’ এর পরিচালক, সাংবাদিক শরীফা বুলবুল। এসময় উপস্থিত ছিলেন অনলাইন নিউজপোর্টাল সোনালীনিউজের সম্পাদক নিয়ন মতিয়ুল।

ব্যতিক্রমী আয়োজন বিষয়ে ‘উই’ এর পরিচালক শরীফা বুলবুল বললেন, উই-এর অর্থ- আমরাই পৃথিবী। মানবতার কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার নিয়েই উই-এর আত্মপ্রকাশ। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা মুক্তিযোদ্ধা মায়েদের মুখের হাসি দিয়েই যাত্রা শুরু হলো। উই মনে করে মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে আর বড় কারো সম্মান হতে পারে না। তাই এ আয়োজনে উপস্থিত মায়েরাই প্রধান আর বিশেষ অতিথির সম্মান নিয়েছেন।

বীরাঙ্গনা নয়, তারা মুক্তিযোদ্ধা

‘উই’ এর পরিচালক আরো বলেন, সবাই জানি, অসংখ্য মানুষের আত্মত্যাগের ফলেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। তবে সেই বিজয় যে কেবল মুক্তিযোদ্ধা পুরুষদের কাঁধেই ভর করে এসেছিল তা কিন্তু নয়। তাদের সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে লড়াই চালিয়েছিলেন নারীরাও। কিন্তু স্বাধীনতার কথা উঠলে প্রথমেই পুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম উঠে আসে। একাত্তরে নারীদের অবস্থা কী হয়েছিল সে কথা হয়তো আজকের প্রজন্মের অনেকেই জানেন না। আর জানেন না বলেই নিন্দার থু থু ছিটান তাদের দিকে। অথচ একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদাররা ধর্ষণ করেছিল প্রায় চার লাখ মা বোনকে। আট থেকে আশি, কাউকেই রেহাই দেয়নি দানবরা। মা বোনদের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অমর্যাদার দায়ভার কেউই এড়াতে পারেন না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা মায়েদের একটাই দাবি, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীন এই দেশের মাটিতে সামান্য একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।

সোনালীনিউজ/ জেএ

Wordbridge School
Link copied!