• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঋণের টাকা শোধ করতেই হত্যার পরিকল্পনা


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭, ১১:১৬ পিএম
ঋণের টাকা শোধ করতেই হত্যার পরিকল্পনা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: অবশেষে উদঘাটিত হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের পৌর এলাকার নামোশংকরবাটী ভবানীপুর ফতেপুর এলাকার চাঞ্চল্যকর সুমাইয়া খাতুন মেঘলা (৭) ও মেহজাবিন আক্তার মালিহা (৬)  নামে দুই শিশুর হত্যা রহস্য। ঋণের টাকা পরিশোধ করতেই ওই দুই শিশুকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল অধিকারীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা জানায় ওই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার প্রধান অভিযুক্ত লাকি খাতুন (২২)। জেলা পুলিশ সুপার টি.এম মোজাহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

বুধবার রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মোজাহিদুল ইসলাম জানান, লাকি খাতুন বিভিন্ন জনের কাছে ঋণগ্রস্থ ছিল। কিছুদিন পাওনাদাররা টাকার জন্য তাকে প্রতিনিয়ত চাপ দিতে থাকে। এ নিয়ে তিনি সব সময় চাপের মধ্য ছিলেন। অনেক চেষ্টার পরেও টাকার কোন ব্যবস্থা না করতে পেরে ওই শিশুদের গলার স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল দেখে তিনি লোভ সামলাতে না পেরে তাদের নিজের ঘরে আটকে রাখে।

পরে ওই শিশুদের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল নিয়ে বিক্রি করে পাওনাদারদের কিছু কিছু করে টাকা দেন। অপহরনের প্রথম দিন গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই দুই শিশুকে নিজ বিছানায় নিয়ে একসঙ্গে ঘুমালেও পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি ভয় দেখিয়ে সারাদিন ঘরের ফ্রিজের পেছনে ও রাতে বক্স খাটের নিচে শিশু দুইটিকে শুইয়ে রাখেন। ধারণা করা হচ্ছে বক্স খাটের উপর তোষক ও কাপড় থাকায় অক্সিজেন বন্ধ হয়ে শিশু দুটি মারা যায়।

এ ঘটনায় লাকি খাতুনের শ্বশুর ভ্যান চালক ইয়াসিন আলী (৬০) ও শ্বাশুরী তানজিলা খাতুনের (৫০) আপাতত কোন সংশ্লিষ্টতা না পেলেও তারা রয়েছেন পুলিশি হেফাজতে রয়েছে বলেও জানান তিনি।

তবে লাকীর দেয়া তথ্যানুসারে স্মৃতি জুয়েলার্স থেকে চোরাইকৃত স্বর্ণালঙ্কার গলিত অবস্থায় উদ্ধারের পর বুধবার রাতে ওই দোকানের কারিগর পলাশকে আটক করেছে পুলিশ।

লাশের ময়না তদন্তকারী সদর হাসপাতালের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে শিশুদের মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যেই শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

এদিকে বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিহত দুই শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে মেহজাবিন আক্তার মালিহার মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এবং বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রবাস থেকে দেশে ফেরার পর সকাল ১০টায় সুমাইয়া খাতুন মেঘলার মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করার পর দুপুর ২টায় নামোশংকরবাটী ডিহিপাড়া গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় নিখোঁজ হওয়া দুই শিশু প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে স্থানীয় ছোটমনি বিদ্যানিকেতনের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন মেঘলা (৭) ও একই বিদ্যালয়ের নার্সারী পড়ুয়া ঢাকায় কর্মরত প্রতিবেশী রাজমিস্ত্রি আব্দুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা (৬) নিখোঁজ হয়। ঘটনার ২ দিন পর মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রতিবেশী ইয়াসিন আলীর বাড়িতে তার প্রবাসী ছেলের বৌ লাকী খাতুনের শোবার ঘরের খাটের নীচ থেকে পৃথক দুটি বস্তার মধ্য থেকে নিখোঁজ ওই দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম
 

Wordbridge School
Link copied!