• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আত্মজীবনীর খসড়া

এই জীবনের বাঁকে বাঁকে (পর্ব-০২)


সাহিত্য সংস্কৃতি ডেস্ক আগস্ট ২১, ২০১৬, ০৬:০১ পিএম
এই জীবনের বাঁকে বাঁকে (পর্ব-০২)

তখনও গ্রামে গ্রামে টেলিভিশন পৌঁছেনি। পাশের গ্রাম সরিষাবাড়িতে প্রথম টেলিভিশন এলো আশির দশকের প্রথম দিকে। আমাদের বাড়ি থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগতো প্রায় ৩০ মিনিট। চারপাশের গ্রামের লোকেরা সন্ধ্যার পর ভিড় জমাতো। টিভি রাখা হতো উঠানের এক কোণায় টেবিলের ওপর।

সারা উঠান এমনকি রাস্তা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে-বসে থাকতো দর্শক। রাত ৮টার খবর আর খবরের পর সাপ্তাহিক নাটক ছিল সবার মূল আকর্ষণের জায়গা। আমি কয়েকদিন গিয়েছিলাম সুনীলের সাথে। শীতের রাতে টিভি দেখে বাড়ি ফেরা, দু-পাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার আর গা-কাঁপা সেই কৈশোরে ফিরে যেতে ভালো লাগে ফ্ল্যাটবাড়ির সোফায় টিভির সামনে বসে। চ্যানেল ঘুরাতে চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিটিভির সেই শাদা-কালো পর্দা।

পুঠিয়ার রাজবাড়িতে রথের মেলার সময় বসতো সার্কাস, পুতুলনাচের আসর। ‘রওশান সার্কাস’ তখনকার দেশকাঁপানো টিম। বিশেষ করে মোটর সাইকেলের কসরত আর দড়ির ওপর দিয়ে হাফপ্যান্ট-পরা সুন্দরী তরুণীদের শরীর দুলিয়ে হেঁটে-যাওয়া উপভোগ করতাম আমরা। মেলা থেকে কিনতাম বাঁশের বাতা মাটির ছোট্ট চাড়ি আর রঙিন কাগজে মোড়া ব্যাঙের গাড়ি, পথে আসতে আসতে ঢ্যাবঢ্যাব ব্যাঙের গাড়ির শব্দ শুনতে মজা পেতাম। আর বিশেষ ঝোঁক ছিল চিনির হাতি-ঘোড়ার দিকে।

শাদা-শাদা আস্ত হাতি-ঘোড়া খেয়ে ফেলতাম চিবিয়ে। কাগজের তৈরি চর্কিও ছিল আমাদের মেলা থেকে কেনা বস্তুর তালিকায়। চিকন বাঁশের কাঠির ওপর লাগানো চর্কি বাতাসের দিকে মুখ করে ধরে রাখলে ফ্যানের মতো ঘুরতো। ওই চর্কির দিকে হা করে তাকিয়ে থেকে কত সময় যে পার করেছি! আর লোহার তৈরি বালা ছুঁড়ে দিয়ে ধরতে চেষ্টা করতাম মাঠে বিছানার ওপর সাজিয়ে রাখা সাবান, পাউডারের কৌটা, কাঁচের চুড়ি, এইসব। এক টাকায় দশটা বালা ছুঁড়তে পারতাম। আমি কেনোদিনও সাবান-পাউডার-চুড়ি পাইনি। এই ছিলো আমার কপাল। তখন তো বুঝবার বয়স হয়নি যে, ইলিশ সবার ভাগ্যে জোটে না, কাউকে কাউকে পুঁটি মাছ খেয়েই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে হয়।

শীতকালে চন্দ্রকলা স্কুলে হতো যাত্রাপালা। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হিশেবে আমার বাবা আয়োজক কমিটির সদস্য থাকতেন। আমরা বাড়ির ছোটরা একরাত যাত্রা দেখার সুযোগ পেতাম। সারারাত মাটিতে বিছানো নাড়ার ওপর বসে, চাদর মুড়িয়ে হা করে তাকিয়ে থাকতাম ‘এক ঝাঁক ডানাকাটা পরী’র দিকে। মেয়েরা যখন বিশেষ ভঙ্গিতে কোমর-নাচাতো, তখন শিস দিত দর্শকরা। আর শিসের তালে তালে নাভি দেখিয়ে নেচে যেত নায়িকারা। এইসব অশ্লীল নাচ-গানই ছিল তখনকার গ্রামের খেটে-খাওয়া মানুষদের বিনোদনের প্রধান ভরসা।

মুগ্ধ দর্শকের কেউ কেউ টাকা-পয়সা ছুঁড়ে মারতো নায়িকার দিকে। আর নায়িকারাও কুড়িয়ে নিত বকশিসের কাঁচা-পয়সা। বেহুলা-লখিন্দরের কাহিনি মঞ্চস্থ হতো বালিয়াডাঙ্গার প্রাইমারি স্কুল মাঠে। কোনো মঞ্চ ছিল না, খোলা মাঠই ছিল স্টেজ। বেহুলার পাঠ করতো মঈনুদ্দি মামা। লখিন্দরকে ঘিরে, চারদিকে ঘুরে ঘুরে, তার সুরেলা কান্না আর আহাজারি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিত। কী যে আবেগঘন সে পরিবেশনা!

আমার ছোট জ্যাঠা আলী হোসেন ওরফে আবদুল হাই চাকরি করতেন পাবনায়। জেলা পরিষদের এ ও ছিলেন। বছরে-দুবছরে পরিবার নিয়ে আসতেন গ্রামে। অন্তত দিন পনের আগে বাড়িতে চিঠি আসতো। সে-অনুযায়ী বাড়ি থেকে মহিষের গাড়ি পাঠানো হতো চৌগাছি ডাকমারা গোরস্থান বাসস্ট্যান্ডে। তখনো গ্রামে পাকা রাস্তা হয়নি। প্রায় ৪ মাইল কাঁচা পথ পারি দিয়ে মহিষের গাড়ি নিয়ে যেতাম আমরা। গাড়োয়ানের সাথে থাকতো বড়ো জ্যাঠার ছেলে টুকু ভাই। আমি যেতাম কখনো কখনো। সে-সময় ঘন্টায়-দুঘন্টায় একটা করে বাস আসা-যাওয়া করতো রাজশাহী-পাবনা সড়কে।

ঢালাই করা রাস্তা। শুনেছি ব্রিটিশ পিরিয়ডে করা। আমরা বসে থাকতাম অপেক্ষায়। বাস এসে থামলে লেদারের বেল্ট বাঁধা স্যুটকেস নিয়ে নামতেন জ্যাঠা-জ্যাঠি, রিতা আপা, রিনা আপা, রতন ও রানী। গাড়ি ছাড়লে স্যুটকেস খুলে জ্যেঠি আমাদেরকে দিতেন কাগজ-মোড়ানো লম্বাটে নরম চকলেট। বাড়িতে এসেও প্যাকেট থেকে বাচ্চাদেরকে বিতরণ করতেন একটা-দুইটা করে টকলেট। সবার আগে সুম্বাদু ওই চকলেট খাওয়ার লোভেই যেতাম অতদূরের পথ চৌগাছি গোরস্থানে। আর শহর থেকে আসা আত্মীয়দের পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলনের প্রতিও কোনো বিশেষ আকর্ষণ কাজ করেছে বোধহয়।

আমাদের গ্রামের পশ্চিমে ঠাকুর পাড়ায় যেতাম জামরুল কুড়াতে। হিন্দুদের বাড়ির ভেতরের দিকে থাকতো আমাদের দৃষ্টির সীমানা। শাদা-শাদা সুন্দরী মেয়েদেরও দেখতাম আমরা। সেই শৈশবে-কৈশোরে, অতোসব না বুঝলেও, বুঝতাম ওরা সুন্দরী। সুন্দরীরা মাঝে-মধ্যে সদর দরোজা পেরিয়ে পুকুরে যেতেন ঘর-কন্যার কাজে। আমাদের দিকে তাকিয়ে হয়তো কখনো বলতেন, ‘কি, জামরুল পেলে?’ বাড়ির ভেতরের বারান্দায় পরিবারের বৃদ্ধ কর্তা কাঁঠালের রস চিপে চিপে দুধ আর খই-চিড়া খেতেন।

আনারসের বাগান ছিল ঠাকুর বাড়ির পুকুরপাড়ে। আমরা শুধু মাটিতে পড়েথাকা জামরুল কুড়াতাম। আনারস ছিড়তাম না। অবশ্য ছিড়তাম না, না বলে বলা ভালো আনারস গাছের কাঁটার খোঁচা খেয়ে আগ্রহ হারাতাম। আসা-যাওয়ার পথে চাঁড়াল পাড়ায় দেখতাম পথের ধারে কাঁদার মধ্যে দাঁড়িয়ে-থাকা একঝাঁক শুয়োর। কী যে নোঙরা লাগতো।

বকুল ফুলের জন্য খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে দৌড়াতাম মাঠের দিকে। একটা বড় বকুল গাছ ছিল আমিনুল্লাদের বাড়ির কাছে। সেখান থেকে ফুল আনতাম। আমার ছোটবোন মুক্তা মালা গাঁথতো খুব যত্ন করে। তার হাতের তৈরি একটা বকুল ফুলের মালা তার মৃত্যুর দু-বছর পরও ঝুলে ছিল দেয়ালের গাড়া লোহার পেরেকে। যখন আমরা গ্রামের ঘর-বাড়ি বড়চাচার কাছে পশ্চিম পাড়ার কাঁঠাল বাগানের বিনিময়ে দিয়ে চলে এলাম নাটোরের একডালায়, তখন একদিন ওই বকুল ফুলের মালাটি লোহার পেরেক থেকে নামিয়ে ফেলি আমি। মালাটি নামাতে গিয়ে আমার হাত কেঁপেছিল, মনে পড়ে। ছোট্ট বোনটির হাতে বানানো মালা! বড় ভালোবাসতে আমাকে। তার নাকের কোণে মমতার মতো লেগে-থাকা মসুরের ডালের মতো সোনার নাকফুলটি আজো আমার চোখের সামনে চকচক করে।

রুয়েরভাগ গ্রামের জবান আলী আমার আব্বার পেসেন্ট ছিলেন। আগদিঘা হাটে ছিল আমার বাবার ডিসপেনসারি। ওই হাটে তিনি বসিয়েছিলেন রাজশাহী অঞ্চলের প্রথম রাইস মিল। গ্রামের মেয়েরা তখন ঢেকিতে ধান পার দিত। সারারাত জেগে চাল করতো। সকালে কুলাতে ঝেড়ে ঝেড়ে কুড়ো উড়াতো বাতাসে। তো এমন সময়ে আমার বাবা দিলেন ইঞ্জিনে চালানো ধান-ভাঙানো কল। শ্যালো মেশিন চালু হলে তিনি আপাতত ক্ষ্যান্ত দিলেন ওই ব্যবসায়। থাকলো কেবল রাজনীতির পামাপাশি ডাক্তারিটা।

জবান আলীর বড়ো মেয়ে মুক্তা। আসতে যেতে রুগীর সাথে তৈরি হলো ডাক্তারের ব্যক্তিগত-পারিবারিক সম্পর্ক। মাঝে মধ্যে বাড়িতে গিয়েও রুগী দেখে আসতেন। মেয়েরা তো আর হাটে-বাজারে এসে ডাক্তার দেখাতো না। ডাক্তারকেই যেতে হতো ‘কল’-এ। আমার ছোটবোনের নামও মুক্তা। একসময় ঠিক হলো এই ২ মুক্তার সই-পাতানো হবে। ২ বাড়িতে অনুষ্ঠান হলো। গরুর গাড়িতে করে লোকজনের আসা-যাওয়া হলো। খাওয়া-দাওয়া হলো। ১ বছরের ছোট-বড়ো ছিল ওরা। আমার বোন ১৯৮৬ তে মারা গেল, মাত্র ১২ বছর বয়সে। তারপর থেকে মুক্তার সই আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে গেল। আজও অটল সে সম্পর্ক। মুক্তার স্বামী পরান ভাইও হয়ে গেলেন আবুল ডাক্তারের জামাতা।

বর্ষাকালে আমাদের উঠান পর্যন্ত কই মাছ, ডানকিনে মাছ চলে আসতো বিলের পানি গড়িয়ে। বাড়ির উঠানে মাছধরার যে কী মজা। আমরা- পাড়ার ছেলেরা মাছ ধরেছি গামছা-লুঙ্গি দিয়ে। উঠানে পানির স্রোতে কাগজের নৌকা চালাতাম। এ-বাড়ি, ও-বাড়ি হয়ে পুরো পাড়া ঘুরতে হতো নৌকার পেছনে পেছনে। সে যে কী আনন্দ!

মুসলমানি করাতে হাজাম এলো। হাতে ছাই-চাকু। চোখ বন্ধ করে কোলে নিয়ে বসে ছিল পঁচু দাদা। একদিনে আমাদের ২ ভাইয়ের মুসলমানি করালো হাজাম। এই উপলক্ষে ৭দিন পরে হলো অনুষ্ঠান। গরু-খাসি জবাই করে খাওয়া-দাওয়া। ইয়াচিন মামা কাঁসার গ্লাস দিলেন। তাতে খোদাই করে নাম লেখা। কেউ কেউ দিল টাকা। ‘গ্রামের সবচেয়ে কিপ্টে’ সুরুজ কাকা দিয়েছিল ৫ টাকা।

রব কাকার বাবা-মা খুব আদর করতেন। আমার দাদির একমাত্র ভাই ছিলেন এই মুন্সি দাদা। শুনেছি আমার ছোটবেলায় গু-মুদ সাফ করেছেন দাদি। আমার মা বড়ো জ্যেঠির সাথে ব্যস্ত থাকতেন একান্নবর্তী পরিবারের ৩০-৪০ জনের রান্না-বান্নায়, গরু-মহিষের দেখা-শোনায়, কাজের মেয়েদের তদারকিতে। মুন্সি দাদা সবাইকে ‘আপনি’ বলতেন। দাদির যেন আঁচলে-বাঁধা চাবির গোছা আমি! এখনও মধুখালি গেলে ফেরার সময় এই বৃদ্ধ বয়সেও, বারবার মানা করা সত্ত্বেও আমার পেছন পেছন হেঁটে বহুদূর পর্যন্ত চলে আসেন তিনি। তারপর কাপড়ের আঁচল দিয়ে চোখ মুছে নীরবে পেছন ফেরেন। কী করে ভারি দুটো পা টেনে হেঁটে সামনে এগোয় আমি টের পাই না।

একবার খায়রুন এসেছিল যশোরের জীবননগর থেকে মধুখালীতে আমাদের বাড়িতে। আমাদের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। কেমন যেন চাচাতো বোন হতো। আমার সমবয়সী। শীতের সন্ধ্যা। সেদিন আমার গায়ে ছিল হালকা সবুজ কিংবা জলপাই রঙের একটা সোয়েটার ধরনের ফুলহাতা গেঞ্জি। খায়রুন বলেছিল, ‘তোমার সুইটারডা সুন্দর।’ শুধু এইটুকু মনে পড়ে। হালকা গড়নের ছিল খায়রুন। শ্যামলা। আর কিছু মনে করতে পারি না আজ। খায়রুনের পড়নে কী ছিল সেদিন? কামিজ? না-কি মা-খালাদের পুরনো রঙচটা শাড়ি? আমরা রাতের প্রথম প্রহরে বাড়ির বাইরের উঠানে সেদিন নাড়াজ্বালা আগুন তাপিয়েছিলাম। অনেকক্ষণ। (চলবে...)

ফজলুল হক সৈকত-এর আত্মজীবনীর খসড়া ‌‘এই জীবনের বাঁকে বাঁকে’ পড়তে সোনালীনিউজ ডটকম-এর সঙ্গেই থাকুন...

ডক্টর ফজলুল হক সৈকত :

জন্ম ১৪ অক্টোবর ১৯৭১ রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানার ঝলমলিয়া গ্রামে। নিবাস পূর্বে পুঠিয়া থানার মধুখালী গ্রাম বর্তমানে নাটোর সদরের একডালা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৯২ সালে অনার্স (মেধাতালিকায় প্রথম); ১৯৯৩ সালে মাস্টার্স (মেধাতালিকায় দ্বিতীয়) এবং ২০০৩-এ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন। পরবর্তীকালে ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ এবং চাইনিজ ভাষায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বাবা মরহুম ডা. মো. আবুল হোসেন, মা মমতাজ বেগম, স্ত্রী জান্নাতুল পারভীন, পুত্র অনিরুদ্ধ অস্মিত সৌভিক, কন্যা সম্প্রতি সোপান শ্রেয়সী।

প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রবন্ধ-গবেষণা : শব্দসৌভিক বাংলা ব্যাকরণ ও রচনারীতি, তিরিশোত্তর কাব্যধারা ও আহসান হাবীবের কবিতা, আধুনিক বাংলা কবিতা : বিষয় ও প্রবণতা, সরদার জয়েনউদ্দীনের কথাসাহিত্য : সমাজ ও সমকাল, অবসন্নতার অন্তরালে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : বিভ্রান্তি ও বাস্তবতা, কথাসাহিত্যের কথা, কবিতায় সমাজ ও রাষ্ট্র, সাহিত্যে গীতলতা ও প্রতিবাদ, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি ভাবনা, ভাষা চর্চা ও শিক্ষা-পরিকল্পনা, বাংলা কবিতায় সমকাল, বাংলা লেখার নিয়ম, সাহিত্য ও সৌন্দর্য, বই বইমেলা ও প্রকাশনা।

সম্পাদনা : জসীম উদ্দীন : ঐতিহ্যের অহংকার, কথাশিল্পী আবু ইসহাক, জীবনানন্দ : কবি ও কথাশিল্পী, বাংলাদেশের সাহিত্য: বিষয় ও প্রবণতা, নজরুলের চিন্তাবিশ্ব, মুহম্মদ মতিউর রহমান : জীবন ও কর্ম, লালন : চিন্তা ও কর্ম, সাহিত্যতত্ত্ব-জিজ্ঞাসা, কথানির্মাতা সেলিনা হোসেন, লালন সাঁই-এর জীবন ও গান;

ছোটদের বই : ছোটদের বাংলা লেখার নিয়ম, অনি-প্রীতির পাঠশালা। ছোটগল্প : বিড়ির আলোয় পরির মুখ। এছাড়া বেসরকারি উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানের কিছু গ্রন্থের ভাষা-সম্পাদনা এবং কয়েকটি গ্রন্থের ভূমিকা রচনা করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে নাটোর জেলার কাফুরিয়া কলেজে অল্পকাল অবৈতনিক শিক্ষক হিশেবে কাজ করেছেন। অতঃপর ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ঢাকা কমার্স কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে প্রকৃত কর্মজীবনের শুরু। ৯ জুন ২০০৫ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিশেবে কর্মরত; বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং সুইডেন থেকে প্রকাশিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় কবিতা, গল্প, সাহিত্য-সমালোচনা এবং কলাম লিখছেন।

পুরস্কার ও সন্মাননা :

বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান উপস্থাপক, পাণ্ডুলিপি লেখক ও সংবাদ পাঠক। বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি এবং ফররুখ একাডেমীর সদস্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে পেয়েছেন ‘উর্মি-ইসলাম পুরস্কার’, রোটারী ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮০ বাংলাদেশ প্রদত্ত ‘বেস্ট জোনাল কালচারাল অ্যাকটিভিটিজ অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৫’ এবং ‘বেস্ট প্রফেশনাল ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৬’ পেয়েছেন।

এছাড়া  শিল্প-সাহিত্য ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্যামব্রিয়ান কলেজ প্রদত্ত ‘বিশ্ব কবিতা দিবস বিশেষ সম্মাননা ২০০৯’ এবং উত্তর বাঙলা সংস্কৃতি পরিষদ প্রদত্ত ‘গবেষণা সাহিত্যে উত্তর বাঙলা বিজয় দিবস পদক-২০১১’ লাভ করেছেন। সুইডেন থেকে ‘অনুশীলন সাহিত্য পুরস্কার- ২০১৩’। বাংলাদেশ কবিতা পরিষদ থেকে ২০১৪ সালে ‘সরদার জয়েনউদদীন সম্মাননা’, ২০১৫ সালে সিএনসি প্রদান করে ‘সৈয়দ আলী আহসান পদক’।

এই জীবনের বাঁকে বাঁকে

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!