• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
আত্মজীবনীর খসড়া

এই জীবনের বাঁকে বাঁকে (পর্ব-০৩)


ড. ফজলুল হক সৈকত সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬, ০৫:৪৯ পিএম
এই জীবনের বাঁকে বাঁকে (পর্ব-০৩)

দ্বিতীয় কিস্তির পর...

আমাদের নানার বাড়ি ছিল দুইটা। বালিয়াডাঙ্গার নন্দী হাজির বাড়ি আমাদের প্রথম নানাবাড়ি। মহী মামা মিয়াজ মামাদের বাড়ি। মামারা ছিলেন চার ভাই। শহী মামা ছিলেন বাউন্ডুলে। সবসময় ঘুরে বেড়াতেন। সংসারের কোনো খবর রাখতেন না। খেলাধূলার দিকে ছিল প্রবল ঝোঁক। দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরে এনেছিলেন সুন্দরী (!) বউ। 

সংসারের কী এক ঝুট-ঝামেলা নিয়ে একবার শহী মামা নন্দী হাজির ভুড়িতে চাকু বসিয়ে দিলেন। রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি হলেন নন্দী নানা। শহী মামা তখন পলাতক। মেডিকেলে দেখতে গেলে আমাকে কাছে ডেকে হাত ধরে নরম গলায় বলেছিলেন নন্দী নানা- ‘শহী মনে হয় হাতে খুব ব্যথা পাইছে, এত বড়ো ভুড়ির মধ্যে চাকু ঢুকানো কি সহজ ব্যাপার?’ পুত্রের প্রতি পিতার সেই দরদের কথা, সেই নির্মল আবেগের দৃশ্য আজও আমি ভুলতে পারি না।

আমার বাবা আবুল ডাক্তার প্রথম বিয়ে করেছিলেন নন্দী হাজির বড় মেয়েকে। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কপাল পুড়লো তাঁর। পেটের ভেতরেই মরে গেল বাচ্চাটা। মরা ছেলেকে পেট কেটে বের করার যন্ত্রণায় আর সন্তানহারা ব্যথায় ‘মা আমার’ পাগল হয়ে গেলেন। পরে আবার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন ঝলমলিয়ার হাজি মফিজউদ্দিনের মেজ মেয়েকে। আমি সেই ঘরের দ্বিতীয় সন্তান। পাগল হওয়ার কিছুদিন পর মারা গেছেন আমার বাবার প্রথম স্ত্রী। কিন্তু নন্দী বাড়ির জামাই রয়ে গেলেন আমৃত্যু আবুল ডাক্তার। 

আমার মা খুকি হয়ে গেলেন নন্দী বাড়ির বড় মেয়ে। আর আমরাও পেলাম বোনাস বা এক্সট্রা নানার বাড়ি। নানা-নানি-মামা-মামিরা আমাদেরকে আপন ভাগ্নে-ভাগ্নির মতোই দেখেছেন। আজও আমরা সেই পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কখনো কিছুতে আদর-আত্তির, মায়া-মমতার একফোঁটা ঘাটতি দেখিনি।  কোনো কৃত্রিমতাও চোখে পড়েনি। কী অদ্ভুত রিপ্লেসমেন্ট!

বিরাট সংসার নন্দী হাজির। ঘরে-বাইরে-মাঠে ২০-৩০ জন লোক ডেইলি কাজ করছে। বাড়ি সরগরম। আত্মীয়-পরিজনে ভরা। পিঠা-পায়েস-মুড়ি-মুড়কি, রান্না-বান্না নিয়ে ব্যস্ত নানি। তার সাথে ঘরের বউমাদেরও নাওয়া-খাওয়ার ঠিক-ঠিকানা নাই। বাহির বাড়িতে বৈঠক খানায় বসে থাকতেন নন্দী হাজি ওরফে আলহাজ আকরাম আলি। 

বৈঠকখানার বারান্দা থেকে নিয়ন্ত্রণ করতেন পুরো সংসার। হাঁক-ডাক আর ব্যক্তিত্বই ছিল তাঁর প্রধান শক্তি। ছোট ছেলে মাইনুদ্দিন মামা লাপাত্তা। তার চিন্তায় নন্দী হাজির ঘুম হারাম। মাঝে মাঝে খবর আসে মাইনুদ্দিনকে কে যেন কোথায় কোন পীর সাহেবের মাজারে দেখেছে। নানি লোক পাঠান সেখানে। কিন্তু পাওয়া যায় না মাইনুদ্দিনকে। পরিবার-পরিজনদের কারো কারো বিশ্বাস সে পাগল হয়ে গেছে। কেবল নানির চোখে অপার বিস্ময়।

পুকুরের দূর সীমানায়, মাঠের প্রান্তরের দিকে, রাস্তার ওধারে নদীতে বয়েচলা পালতোলো নৌকায়, ঘাটে, হাট থেকে সন্ধ্যার অন্ধকারে ফিরে আসা লোকেদের ভিড়ে তার স্যাঁতসেঁতে চোখ কেবল মাইনুদ্দিনকে খুঁজে ফেরে। হয়তো কারোর চোখে পড়ে না সে খবর। নাকে নোলক পড়তেন নানি। কখনো চোখের কোণ বয়ে এক ফোঁটা জল নোলকে এসে ঠেকেছে কি-না, দিখিনি। প্রৌঢ় বয়সেও তিনি চলনে-বলনে ছিলেন ভারী আকর্ষণীয়। 

এমন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন রমণী আমি জীবনে খুব একটা দেখিনি। নানির শৈশবে-কৈশোরে-যৌবনে লম্বা কালো চুল ছিল। শ্যামলা মেয়ের চুলের শোভায় নাকি প্রেমে পড়েছিলেন আমার কৈশোর-পার-না-হওয়া নানা। নানির কাছে শুনেছি সে গল্প। চিলমারির চরের ওদিকে সম্পন্ন গৃহস্থ পরিবারের ছেলে আকরাম ঘোড়ায় চড়ে মাঠে যেতেন জমি-জিরেত দেখতে। আমার নানি তখন ক্লাস থ্রিতে পড়েন। পথে লম্বা চুলের এই মেয়েটিকে ভালো লেগেছিল তার। ‘কার মেয়ে, কোন বাড়ির?’ এইসব তথ্য-তালাশ করে পরে বিয়ে করলেন তিনি। নানি আমার এই ব্যাপারটিকে বলেছেন ‘প্রেম’। ওই যে ঘোড়ার ওপর থেকে এক প্রায়-যুবক তার লম্বা চুল দেখে মুগ্ধ হলো, এটা কি প্রেম নয়?

চিলমারি চর ছেড়ে, নদী ভাঙনের কবল থেকে বাঁচবার জন্যই বোধহয়, আকরামরা রাজশাহীর বালিয়াডাঙ্গায় কোনো এক নন্দীর হিন্দু বাড়ি কিনেছিলেন। আর সেই থেকেই আকরাম হয়ে গেলেন নন্দী! সত্যি বলতে কি, সেই ইতিহাসটা জানা হয়নি আজও। অজানার আনন্দই হয়তো এমন। নন্দী হাজির বাড়িতে ছিল এক অচিন বৃক্ষ। রাস্তার পাশে বিরাট বটগাছের মতো কী যেন একটা গাছ। এই গাছ নিয়ে গল্পের শেষ নেই। 

একবার গাছটা বিক্রি করে দিলেন নন্দী নানা। কুড়াল দিয়ে গাছ কাটতে শুরু করলো কাঠের ব্যাপারি। কয়েকটা কোপ দেওয়ার পরই নাকি শুরু হলো গলগল করে রক্ত বের হওয়া। তারপর পোটলাপাটলি গুটিয়ে চলে গেল তারা। টাকাও ফেরত নিয়ে গেল। একদিন শোনা গেল নন্দী হাজিকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া গেল ওই গাছের গোড়ায় একটা ছোট গর্তের ভেতরে। সেখানে বসে তিনি তসবি গুনছেন। এসবই ছিল ছোটবেলায় শোনা গল্প। সে সব রহস্যের সন্ধান আজও করা হয়নি। 

মজার মানুষ ছিলেন নন্দী নানা। বাড়িতে একবার চোর এলো। নানা-নানির ঘরের পাশেই ছিল স্টোর রুম। সংসারের টুকিটাকি ও দামি দামি মালামাল রাখা হতো ওইখানে। নিয়ন্ত্রণ ছিল নানির হাতে। তাঁর কোমড়ে বাঁধা থাকতো একথোকা চাবির গোছা। তো রাতের বেলা চোর লাঠি দিয়ে ঠুকে ঠুকে এবং সামান্য টর্চ মেরে নাকি মালামালের অস্তিত্ব বুঝার চেষ্টা করছিল। এমন সময় লঠির খোঁচা গিয়ে লাগলো নন্দী হাজির চোখের কোণায়। তাঁর ঘুম পাতলা। হঠাৎ বলে উঠলেন- ‘কে রে লাঠির খোঁচা মারে? আরেকটু হলেইতো চোখে লাগতো।’ এই কথা শুনে চোর পাগারপার। 

যেমন মায়া ছিল নন্দী হাজির মনে, তেমনই রাগও কম ছিল না। একবার আমার বাবা শখ করে মহিষ কিনলেন। কালো জোয়ান এক মহিষ নিয়ে এলেন বেলঘরিয়ার পেয়ারা ফুফুর ভাসুরের কাছ থেকে। তিনি ছিলেন মহিষের ব্যাপারি। মাত্র একটা মহিষ কিনলেন আব্বা। জোড়া মিলানোর জন্য আরেকটা মহিষের খোঁজ চলছে। আমাদের বাড়ির চাকর সুশীল-সুনীলের মনে খুব আানন্দ। মহিষের গাড়ি হবে! একদিন দুপুরবেলা আমি মহিষের পিঠে চড়ে গেলাম মাঠে। সাথে ছিল সুশীল। বিলের ধারে নন্দী হাজির বিশাল খেসারির ক্ষেত। চারপাশে নাড়ার জমিতে গরু-ছাগল-মহিষ চড়াচ্ছে ওগ্রাম-ওগ্রামের ছেলে-মেয়ে, রাখালেরা। 

আমি মহিষ নিয়ে সোজা ঢুকে পড়লাম খেসারির জমিতে। অনেকে মানা করেছিল। কিন্তু আমার মনে ছিল- নানার জমি, মহিষে খেসারি খেলে কার কী? বিকেল গড়াতে বাড়ি ফিরলাম। ওদিকে খেসারির জমির বেশ খানিকটা প্রায় লোপাট। সন্ধ্যায় লাঠি হাতে বাড়ি এলেন নন্দী হাজি। তিনি মাঠে চক্কর দিতে গিয়ে জানতে পেরেছেন কাহিনি। সঙ্গে সঙ্গে বোধহয় মাথায়ও ঘোরপাক খেয়েছিলেন। আমাদের বাড়ির সদর দরোজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে বলছেন- ‘কই গো রেখার মা, ফজলু কই, ঞ্যাঁ, শ্যায় আমার খেসারির খ্যাত কী করছে জানো? কই শয়তানডা?’ ঘর থেকে মা বেরুনোর আগেই আমি ‘দে দৌড়’। তারপর অনেকদিন নন্দী হাজির বাড়ির আশে-পাশেও আমাকে দেখা যায়নি।

নন্দী হাজির বড় নাতি হানিফ। মহী মামার ছেলে। হায়ারে ফুটবল খেলতো। কপালে বেল্ট বেঁধে মাঠে নামতো। মাথা ঘুরিয়ে, ঘাড় বাঁকিয়ে দারুণ সব হেড করতো। তো হানিফ ভাই যখন কলেজে উঠলো, তার দাদাকে বললো মোটর সাইকেল কিনে দিতে। নন্দী বাড়ির ছেলে কলেজে যাবে, এ কি কম কথা! কিন্তু নন্দী হাজি নাছোর বান্দা। তিনি বললেন- ‘মোটর সাইকেল কিনে লাভ কী? রিক্সা কিন। নিজে কলেজে যাবি, লগে দুইজন নিয়া যাবি। ভাড়াও পাবি।’ সৌখিন-সংসারি নন্দী হাজির কী রসিকতা! 

মিয়াজ মামা সুদর্শন পুরুষ। মিতবাক। ব্যক্তিত্ববান। আড়তে চামড়ার ব্যবসা করেন। বিয়ে করলেন দেরি করে। পাত্রী পছন্দ হয় না। অবশেষে কুষ্টিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসার না-কি টোবাকো কোম্পানির ম্যানেজারের বোন আমাদের মামি হয়ে এলেন। শিক্ষিত-স্মার্ট মেয়ে। আমরা বিয়ের বরযাত্রী হয়ে কুষ্টিয়া গেলাম বাসে করে। মামা সাইকেল ছেড়ে ধরলেন লালরঙা ইয়ামাহা হানড্রেড। তখনো বালিয়াডাঙ্গা-চন্দ্রকলা-লোচনগড়-একডালা কিংবা চৌগাছি-ডাকমারা গোরস্থান পাকা সড়ক হয়নি। ধুলা উড়িয়ে মিয়াজ মামা ইয়ামাহা চালাতেন। চারদিকের গ্রামে কেবল দু-একটি মোটর সাইকেল তখন আমাদের চোখে পড়তো। 

মাইনুদ্দিন মামাও একদিন ঘরে ফিরে এলেন। বিয়ে করে সংসারি হলেন। সময় যে কীভাবে গড়ায়। পাশের হোজা নদী শুকিয়ে গেল ফারাক্কা হবার পর। একে একে নানা-নানি চলে গেলেন পরপারে। নন্দী হাজির সংসার ফুলে ফেঁপে বড় হলো। এখন সে বাড়িতে আগের আনন্দ নেই। সেই মাটি ঘর-দোর ঠিকই আছে। অনেক কিছু অচেনা-অজানা লাগে। এক কোণের ঘরে বসে থাকেন মাজাভাঙা মহী মামা। টিভি দেখেন সারাক্ষণ। বড় মামি আজও সংসারের চাপে ন্যুজ্ব। গায়ের ফর্সা রঙে কালচে দাগ পড়েছে। 

ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে বলেন- ‘বইয়েন। খাইয়া যান। আপনের মামায়তো অহন চলতে-ফিরতে পারে না। আপনের মায় কেমন আছে? হ্যার দিগে খেয়াল রাইখেন।’ ওপাশের ঘর থেকে হয়তো ডাক পাড়েন হানিফ ভাবি- ‘কে ফজলু, কখন আসলা?’ কিংবা শহী মামার জৌলুশহারা সেই সুন্দরী বউ হয়তো দূরের বারান্দা থেকে বলেন, ‘কেমন আছো? তুমি নাকি এহন ঢাকায় থাহো?’ কিন্তু এসব কিছুই যেন আমার কানে ঢোকে না। কেবল মন কাঁদে। কেন যে, জানি না। (চলবে...)

এই জীবনের বাঁকে বাঁকে (পর্ব-০২)

ফজলুল হক সৈকত-এর ধারাবাহিক আত্মজীবনীর খসড়া ‌‘এই জীবনের বাঁকে বাঁকে’ পড়তে সোনালীনিউজ ডটকম-এর সঙ্গেই থাকুন...
 

ডক্টর ফজলুল হক সৈকত :

জন্ম ১৪ অক্টোবর ১৯৭১ রাজশাহী জেলার পুঠিয়া থানার ঝলমলিয়া গ্রামে। নিবাস পূর্বে পুঠিয়া থানার মধুখালী গ্রাম বর্তমানে নাটোর সদরের একডালা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ১৯৯২ সালে অনার্স (মেধাতালিকায় প্রথম); ১৯৯৩ সালে মাস্টার্স (মেধাতালিকায় দ্বিতীয়) এবং ২০০৩-এ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন। পরবর্তীকালে ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ এবং চাইনিজ ভাষায় ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বাবা মরহুম ডা. মো. আবুল হোসেন, মা মমতাজ বেগম, স্ত্রী জান্নাতুল পারভীন, পুত্র অনিরুদ্ধ অস্মিত সৌভিক, কন্যা সম্প্রতি সোপান শ্রেয়সী।

প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রবন্ধ-গবেষণা : শব্দসৌভিক বাংলা ব্যাকরণ ও রচনারীতি, তিরিশোত্তর কাব্যধারা ও আহসান হাবীবের কবিতা, আধুনিক বাংলা কবিতা : বিষয় ও প্রবণতা, সরদার জয়েনউদ্দীনের কথাসাহিত্য : সমাজ ও সমকাল, অবসন্নতার অন্তরালে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় : বিভ্রান্তি ও বাস্তবতা, কথাসাহিত্যের কথা, কবিতায় সমাজ ও রাষ্ট্র, সাহিত্যে গীতলতা ও প্রতিবাদ, শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি ভাবনা, ভাষা চর্চা ও শিক্ষা-পরিকল্পনা, বাংলা কবিতায় সমকাল, বাংলা লেখার নিয়ম, সাহিত্য ও সৌন্দর্য, বই বইমেলা ও প্রকাশনা।

সম্পাদনা : জসীম উদ্দীন : ঐতিহ্যের অহংকার, কথাশিল্পী আবু ইসহাক, জীবনানন্দ : কবি ও কথাশিল্পী, বাংলাদেশের সাহিত্য: বিষয় ও প্রবণতা, নজরুলের চিন্তাবিশ্ব, মুহম্মদ মতিউর রহমান : জীবন ও কর্ম, লালন : চিন্তা ও কর্ম, সাহিত্যতত্ত্ব-জিজ্ঞাসা, কথানির্মাতা সেলিনা হোসেন, লালন সাঁই-এর জীবন ও গান;

ছোটদের বই : ছোটদের বাংলা লেখার নিয়ম, অনি-প্রীতির পাঠশালা। ছোটগল্প : বিড়ির আলোয় পরির মুখ। এছাড়া বেসরকারি উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠানের কিছু গ্রন্থের ভাষা-সম্পাদনা এবং কয়েকটি গ্রন্থের ভূমিকা রচনা করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে নাটোর জেলার কাফুরিয়া কলেজে অল্পকাল অবৈতনিক শিক্ষক হিশেবে কাজ করেছেন। অতঃপর ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ঢাকা কমার্স কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে প্রকৃত কর্মজীবনের শুরু। ৯ জুন ২০০৫ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিশেবে কর্মরত; বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশ, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং সুইডেন থেকে প্রকাশিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পত্রিকায় কবিতা, গল্প, সাহিত্য-সমালোচনা এবং কলাম লিখছেন।

পুরস্কার ও সন্মাননা :

বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান উপস্থাপক, পাণ্ডুলিপি লেখক ও সংবাদ পাঠক। বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি এবং ফররুখ একাডেমীর সদস্য। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৩ সালে পেয়েছেন ‘উর্মি-ইসলাম পুরস্কার’, রোটারী ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮০ বাংলাদেশ প্রদত্ত ‘বেস্ট জোনাল কালচারাল অ্যাকটিভিটিজ অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৫’ এবং ‘বেস্ট প্রফেশনাল ডাইরেক্টর অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৬’ পেয়েছেন।

এছাড়া  শিল্প-সাহিত্য ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্যামব্রিয়ান কলেজ প্রদত্ত ‘বিশ্ব কবিতা দিবস বিশেষ সম্মাননা ২০০৯’ এবং উত্তর বাঙলা সংস্কৃতি পরিষদ প্রদত্ত ‘গবেষণা সাহিত্যে উত্তর বাঙলা বিজয় দিবস পদক-২০১১’ লাভ করেছেন। সুইডেন থেকে ‘অনুশীলন সাহিত্য পুরস্কার- ২০১৩’। বাংলাদেশ কবিতা পরিষদ থেকে ২০১৪ সালে ‘সরদার জয়েনউদদীন সম্মাননা’, ২০১৫ সালে সিএনসি প্রদান করে ‘সৈয়দ আলী আহসান পদক’।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!