• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এইচআইভি আক্রান্ত নারী-পুরুষের বিয়ের সুযোগ


বিচিত্র ডেস্ক নভেম্বর ২৮, ২০১৭, ০৮:৫৪ পিএম
এইচআইভি আক্রান্ত নারী-পুরুষের বিয়ের সুযোগ

ঢাকা: এইচআইভি-আক্রান্তদের জন্য বিয়ের ওয়েবসাইট! স্বেচ্ছায় নিজেদের ছবি এবং অন্যান্য তথ্য পোস্ট করছেন পাত্রপাত্রীরা। এক-একটি সাইটের মাধ্যমে বছরে গড়ে ১০০-১৫০ জন এইচআইভি আক্রান্ত পুরুষ ও মহিলার বিয়ে হচ্ছে।

শুধু এইচআইভি-আক্রান্তদের জন্যই এমন সাইট রয়েছে চার-পাঁচটি। এ ছাড়া অন্তত চারটি সাইটে স্পেশাল কেস বলে একটি বিভাগ রাখা হচ্ছে। যেখানে এইচআইভির সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া বা ক্যান্সার আক্রান্ত, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের বিয়ের সম্বন্ধ করা হচ্ছে।

সমাজকর্মীরা মনে করছেন, এইচআইভি নিয়ে ছুৎমার্গ দূর করার এর থেকে ভালো পন্থা হতে পারে না। তাদের মতে, এই সাইটগুলো তৈরি হওয়াতেই বোঝা যাচ্ছে সামাজিক ভাবনায় সদর্থক বদল শুরু হচ্ছে।

ভারতের মহারাষ্ট্রের এক ট্রান্সপোর্ট অফিসার অনিল ভালিভ ২০০৬ সাল থেকে একটি সাইট চালু করেন। এখনো পর্যন্ত সেখানে প্রায় আড়াই হাজার এইচআইভি আক্রান্তের বিয়ে হয়েছে।

আবার বেঙ্গালুরু থেকে ২০১৩ সালে একটি সাইট চালু করেন ধনঞ্জয় নামে এক জন। আর এক সাইটের শাখা রয়েছে গুরুগ্রাম ও কলকাতায়।

এই রকম সাইটেই বছর দেড়েক আগে বেঙ্গালুরুর এক আইটি কর্মীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে কলকাতার এক অবাঙালি ইঞ্জিনিয়ারের।

ওই ইঞ্জিনিয়ার বললেন, নিজের রোগ আছে জানার পর কোনো সুস্থ মেয়েকে বিয়ের প্রশ্ন ওঠে না। আবার বিয়ে না করলে কেন করছি না সেই প্রশ্নে জেরবার হতে হয়। এই রকম একটা দিশেহারা অবস্থায় মুশকিল আসান করেছিল ওয়েবসাইটই। এইচআইভির চিকিৎসা এখন আগের থেকে উন্নত। ঠিক মতো ওষুধ খেলে ভালোভাবে বাঁচা যায়। মায়ের থেকে সন্তানে রোগ সংবহনও অনেক ক্ষেত্রে আটকানো যায়। ফলে এইচআইভি আক্রান্তদের বিবাহিত জীবন যাপনের ইচ্ছা বাড়ছে, বললেন চিকিৎসক শুভাশিস গুহ।

মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলছিলেন, রোগটা এখন এত বেশি ছড়িয়েছে যে আক্রান্তদের পাশাপাশি তাদের আত্মীয়-বন্ধুর সংখ্যাও এখন কম নয়। সচেতনতা অভিযানেরও একটা প্রভাব তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে আক্রান্ত যখন অনেককে পাশে পাচ্ছেন, তখন তার স্বাভাবিক জীবন কাটানোর চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু এইচআইভি আক্রান্তকে নিয়ে ছুৎমার্গ তো আজো দূর হয়নি!

সেখানে খোলাখুলি নাম-পরিচয়-ছবি সাঁটিয়ে বিয়ের ওয়েবসাইটে নাম লেখানোর সাহস পাচ্ছেন কী করে তারা? এখানেই মনোজগতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত। সমাজবিদ রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরই ঘুরে দাঁড়ানোর তাগিদ তৈরি হয়। কিন্তু সমাজের অন্দর থেকে সমর্থন না-পেলে সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এখানে সেই সমর্থনটা মিলছে, সেটাই আশার কথা।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!