• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এক কিলোমিটার সড়ক ভোগাচ্ছে তিন বছর


মো. আমিনুল ইসলাম, ঝালকাঠি জুন ২, ২০১৭, ০৩:১৮ পিএম
এক কিলোমিটার সড়ক ভোগাচ্ছে তিন বছর

ঝালকাঠি: জেলার পৌর শহরের প্রধান সড়কের এক কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ শুরু হয়েছিল তিন বছর আগে। কিন্তু এত দিনেও এ কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কবে নাগাদ এ কাজ শেষ হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রাচীনতম ও প্রথম শ্রেণির পৌর জেলা শহর তথা দ্বিতীয় কলকাতা খ্যাত বানিজ্যিক শহর ঝালকাঠি। কিন্তু এ পৌর শহরে ৮৮ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে বর্তমানে ৫৬ কিলোমিটারই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা শহরের প্রধান সড়ক হিসেবে পরিচিত হাসপাতাল রোডের।

গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের দুই পাশে হাসপাতাল, কালেক্টরেট কার্যালয়, পুলিশ কার্যালয়, আদালত, ফায়ার সার্ভিস ও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে। এ সড়কের আড়াই কিলোমিটারজুড়ে অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ইট-সুরকি দিয়ে গর্ত ভরাট করার চেষ্টা করলেও বর্ষায় সেগুলো আবার বেরিয়ে পড়ে। এতে পানি জমে থাকায় জনগণের দুর্ভোগের পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা যায়, তিন বছর আগে এ সড়কের গুরুধাম সেতু থেকে সাধনার মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার অংশের সংস্কারকাজ শুরু হয়। এক বছর আগে শুরু হয় সড়কের এক দিকে ড্রেন নির্মাণের কাজ।

অভিযোগ রয়েছে, রাস্তার থেকে উঁচু করে এ ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। এতে ড্রেনের নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। কিন্তু এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই। তাছাড়া বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী রাস্তায় ফেলে রাখায় যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।


সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটির ঝালকাঠি বাসটার্মিনাল ও হাসপাতালের সামনে থেকে চাঁদকাঠি চৌমাথা ও পোস্ট অফিসের সামনে থেকে সাধনার মোড় পর্যন্ত অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। গর্তে পানি জমে থাকায় মানুষের চলাচল দায় হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে শহরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পর এ সড়কে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে। বিপাকে পড়ছে হাসপাতালগামী রোগী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সিফাত আল সাদ জানায়, সড়কটিতে হাঁটার কোনো জায়গা নেই। পানি, কাদা আর গর্তে পূর্ণ। এর মধ্যে দিয়েই আমাদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. বাদল হোসেন জানান, শুধু এটিই নয়, ঝালকাঠির বেশির ভাগ সড়কই বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে এসব সড়ক সংস্কার করায় এ দশা হয়েছে। বছর যেতে না যেতেই সংস্কারকৃত সড়ক আবার আগের মতো হয়ে গেছে।

সড়কের শহরের সাধনার মোড় থেকে পেট্রোল পাম্প মোড় পর্যন্ত ও পেট্রোল পাম্প থেকে গুরুধাম সেতু পর্যন্ত ৭শ’ মিটার সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। আর বাকি অংশ ঝালকাঠি পৌরসভার আওতায়। মাঝে মধ্যে সড়কের নিজ নিজ অংশের সংস্কার করলেও, সংস্থা দুটির কেউই এর স্থায়ী সমাধানে এগিয়ে আসেনি।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি পৌর সভার প্যানেল মেয়র মাহাবুবুজ জামান স্বপন জানান, প্রধান সড়কটি যথাসময়ে সংস্কার করতে না পারায় জনগণের সাময়িক ভোগান্তি হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা অবগত আছি। এটিসহ অন্য সড়কগুলোর সংস্কারে এরই মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ড্রেন নির্মাণের কাজও দ্রুত শেষ হবে। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম হামিদুর রহমান জানান, ‘ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন সড়ক মেরামতের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ওই প্যাকেজে পেট্রোল পাম্প থেকে গুরুধাম সেতু পর্যন্ত ৭০০ মিটার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই এর সংস্কারকাজ শুরু করা যাবে।’


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!