• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা


অর্থনৈতিক রিপোর্ট জুন ১৪, ২০১৭, ১২:৪৭ পিএম
এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা : বর্তমানে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা ঋণ হিসাবে নিলেও ওইসব প্রভাবশালীরা ঋণের টাকা সময় মতো ফেরত না দেয়ায় একদিকে ব্যাংক খাতে বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ, অন্যদিকে ব্যাংক খাতে আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। চলতি বছরের একই সময় এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা। এর বাইরে আরো ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ১ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে খেলাপি ঋণ কমাতে সুনির্দিষ্ট মতামত ও কর্মপন্থা দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সেই নির্দেশনার ইতিবাচক কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্যাংকাররা বলেন, বড় ঋণগ্রহীতাদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। অনেকে সময়মতো ঋণের টাকা ফেরত না দিলে ব্যাংক মামলা করেও ফল পায় না। তিনি বলেন, মামলা হলেই রিট হয়ে যায়, রিটের জাল থেকে ব্যাংক বেরুতে পারে না। এ কারণে বেশ কিছু ঋণের টাকা ফেরত আসে না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাধারণ জনগণের আমানত থেকেই মূলত ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণ করে থাকে। কিন্তু সেই ঋণ যদি ফেরত না আসে তাহলে ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার গ্রাহকের আস্থায়ও চিড় ধরে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগ নেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে সেটি দেখা যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক খাতে সুশাসন না থাকায় এমনটি হচ্ছে। কিছু টাকা বের করে নেয়া হয়েছে লুটপাটের মাধ্যমে। আবার নামী-দামি ব্যবসায়ীরাও অনিয়ম করে সুবিধা নিয়েছেন। এখন অনেক বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও ব্যাংকগুলো অর্থ আদায় করতে পারছে না। আবার যারা ঋণ পরিশোধ করছে না, তাদের কিছু করাও যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যাংক খাতের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাবে।’

এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ‘বড় ঋণগ্রহীতাদের কাছে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। অনেকে সময় মতো ঋণের টাকা ফেরত না দিলে ব্যাংক মামলা করেও ফল পায় না। তিনি বলেন, মামলা হলেই রিট হয়ে যায়, রিটের জাল থেকে ব্যাংক বেরুতে পারে না। এ কারণে বেশ কিছু ঋণের টাকা ফেরত আসে না।’

এদিকে খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকায় ব্যয় সমন্বয় করতে আমানতের সুদের হার কমিয়ে আনছে ব্যাংকগুলো। ৫ বছর আগেও এই সুদের হার ছিল ১২-১৪ শতাংশ। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৫ শতাংশেরও নিচে। এমন অবস্থায় সরকার আমানতের আসল টাকায় হাত দিতে চাইছে। এতে আরও বিপাকে পড়েছেন সুদ আয়নির্ভর অল্প আয়ের গ্রাহকেরা। অনেকে বাধ্য হয়ে ব্যাংক খাত থেকে টাকা উঠিয়ে নেয়া শুরু করেছেন। অনেকেই ব্যাংক থেকে টাকা তুলে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল শেষে ব্যাংক খাতে গড় আমানতের সুদহার ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!