• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদন

এক বছরে সাড়ে ১৬ লাখ ব্যাংক হিসাব বন্ধ


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১, ২০১৮, ১২:৫৭ পিএম
এক বছরে সাড়ে ১৬ লাখ ব্যাংক হিসাব বন্ধ

ঢাকা : গত বছর সাড়ে ১৬ লাখ ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়েছে। এ সংখ্যা মোট ব্যাংক হিসাবের সাড়ে ১২ শতাংশ। ব্যাংকিং সেবায় অসন্তুষ্ট হয়ে এসব হিসাব বন্ধ করে দিয়েছেন গ্রাহকরা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।  

বৃহস্পতিবার (৩১ মে) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘সাসটেইনেবিলিটি ইন সার্ভিস কোয়ালিটি অ্যান্ড কাস্টমার্স কনফর্মিটি : ড্রাইভার্স অব কাস্টমার্স লয়েলিটি টু ব্যাংকস’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে ওই গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং সেবায় অসন্তুষ্ট গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৪ সালে মোট গ্রাহকের ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ অসন্তুষ্ট হয়ে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেন। ২০১৫ সালে এ ধরনের গ্রাহকসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা আরো বেড়ে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ৮৮১টি ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়েছে অসন্তুষ্টিজনিত কারণে, যা দেশের মোট ব্যাংক হিসাবের সাড়ে ১২ শতাংশ।
সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গবেষণা দলে আরো ছিলেন বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন, প্রভাষক লামিয়া রহমান, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অ্যাক্টিং হেড অব রিটেইল এম খোরশেদ আনোয়ার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি ও কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জহির হোসেন।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক মঈনুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান, বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতি বছর গ্রাহকরা ব্যাংক হিসাব বন্ধ করলেও ৫৬ শতাংশ ব্যাংকে এ বিষয়ে গ্রাহকদের কোনো সাক্ষাৎকার নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। বন্ধ হওয়া এসব ব্যাংক হিসাবধারীর কোনো রেকর্ডও সংরক্ষণ করা হয় না। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে গ্রাহকদের আরো ভালো সেবা দিতে হবে। একই সঙ্গে কেন ব্যাংক হিসাব বন্ধ হচ্ছে, তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনে পরামর্শ দিয়ে বরকত-এ-খোদা বলেন, অর্থনীতিতে গ্রাহক সন্তুষ্টি সাফল্য অর্জনের অন্যতম নিয়ামক। ব্যাংকিং খাতেও ভালো পণ্যের সঙ্গে ভালো সেবা প্রদান করতে হবে। ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণেই ব্যাংকিং খাতে কর্মীদের কিছু সৌজন্যতা শিখিয়ে দিতে হবে। কারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ গ্রাহকদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করে না। ব্যাংকারদের গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে হবে। একজন ভালো ব্যাংকার হবেন একজন ভালো জনসংযোগ কর্মকর্তা।

আলী হোসেন প্রধানিয়া ব্যাংকিং খাতের গ্রাহকদের চাহিদার পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে বলেন, বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকের কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। গ্রাহকদের মধ্যে ক্যাটাগরি করে পরিকল্পনা করলে সেটি ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে। কৃষি ব্যাংকে কোনো অভিযোগ আসলে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয় বলেও জানান ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনুদ্দিন গ্রাহকদের সন্তুষ্টি ও দ্রুত সেবা দেওয়ার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর ব্যাংকিং খাতে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে মন্তব্য করে বলেন, যে ব্যাংকের কৌশল যত উন্নত তারা বেশি মুনাফা করে। গ্রাহককে উত্তম সেবা দিয়েই কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!