• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
ভারতের পত্রিকায় শেখ হাসিনা

এত মিলের দুই দেশে নদী নিয়ে বিভেদ কেন


নিউজ ডেস্ক এপ্রিল ৭, ২০১৭, ০৬:১৩ পিএম
এত মিলের দুই দেশে নদী নিয়ে বিভেদ কেন

ঢাকা: ভারত সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ককে ‘নতুন উচ্চতায়’ নিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের মত বেশ কিছু অমীমাংসিত বিষয় এখনও রয়েছে, যার সমাধান প্রয়োজন।

ভারতের প্রভাবশালী ইংরেজি দৈনিক হিন্দুতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘আন্তরিক হলে যৌথভাবে ভারত ও বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের প্রথম দিন শুক্রবার ওই নিবন্ধ প্রকাশ করেছে হিন্দু। 

নিবন্ধটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘ফ্রেন্ডশিপ ইজ অ্যা ফ্লোয়িং রিভার: শেখ হাসিনা’। সেখানে তিনি লিখেছেন, যদি প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে আমরা সৎ থাকি, বাংলাদেশ ও ভারত অনেক কিছুই অর্জন করতে পারবে। যা আমাদের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’

প্রধানমন্ত্রী তার নিবন্ধে লিখেছেন, ‘একমাত্র শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই শান্তি নিশ্চিত করতে পারে। আমাদের মধ্যে কিছু অমীমাংসিত বিষয় আছে, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, যে কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের সদিচ্ছার প্রমাণ দিয়েছি। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের (তিস্তা চুক্তির বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে) মত আরও কিছু বিষয় রয়ে গেছে, যেগুলো মেটানো প্রয়োজন।’   

নিজেকে একজন আশাবাদী মানুষ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা লিখেছেন, তিনি প্রতিবেশী দেশের মহতী মানুষ ও নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখতে চান। 

তিনি বলেছেন, সম্পদ সীমিত, কিন্তু দুই দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে তা ভাগ করে নেওয়া যায়। বাংলাদেশ ও ভারত একই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বহন করছে। বহু বিষয়ে দুই দেশের (অন্তত পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে) মিল রয়েছে।

‘লালন, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল, জীবনান্দ আমাদের দুই দেশেরই। আমাদের ভাষায় যেমন মিল রয়েছে, তেমনি পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তার মত অভিন্ন নদীর পানি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। সুন্দরবন আমাদের দুই দেশেরই অহংকার। সেটা নিয়ে তো আমাদের বিবাদ নেই। তাহলে অভিন্ন নদীর পানি নিয়ে কেন আমাদের মধ্যে বিরোধ থাকবে?’  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং তাতে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করে নিবন্ধে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি উল্লেখ করেছেন, পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে বড় একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এখন পর্যন্ত আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের ও ৫০ সালের মধ্যে উন্নত আয়ের দেশে পরিণত হবে।

 ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের অগ্রগতি এবং দুই দেশের যোগাযোগ ও সহযোগিতা নতুন মাত্রা পাওয়ার কথাও লেখায় তুলে ধরেছেন তিনি।‘এই সহযোগিতায় দুই দেশের মানুষই উপকৃত হচ্ছে। সম্পর্ক, হোক তা ব্যক্তিগত বা জাতীয় পর্যায়ের, অনেকাংশে নির্ভর করে লেনদেনের ওপর।’

নোবেলজয়ী মেক্সিকান কবি অক্তাবিও পাসের বিখ্যাত উক্তি ‘ফ্রেন্ডশিপ ইজ এ রিভার’ উদ্ধৃত করে শেখ হাসিনা লিখেছেন, “আমি মনে করি, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বও বহতা নদীর মত এবং তা ঔদার্যে পূর্ণ। এটাই প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্কের মূল চেতনা হওয়া উচিৎ।     

চার দিনের সফরের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ভারতের জনগণের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি লিখেছেন, ‘আমি আশা করি, এই সফরের মধ্যে দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সহযোগিতার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!