• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার প্রেমের টানে নওগাঁয় থাই তরুণী


জেলা প্রতিনিধি মে ১৮, ২০১৭, ০৫:১৯ পিএম
এবার প্রেমের টানে নওগাঁয় থাই তরুণী

নওগাঁ: এবার ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশি যুবকের প্রেমের টানে থাইল্যান্ড ছেড়ে নওগাঁয় চলে এলেন ভিনদেশি তরুণী সুপুত্তো ওরফে ওম (৩৬)। হাত ধরলেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার যুবক অনিক খানের (২২)।

সুপুত্তো ওরফে ওম ধর্মান্তরিত হয়ে সুফিয়া খাতুন নাম নিয়েছেন। এরপর বুধবার (১৭ মে) নাটোর আদালতে তারা বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ভিনদেশি তরুণী ওম থাইল্যান্ডের চো-অম জেলার পিচচোবড়ি এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা উইছাই ও মা নট্টাফ্রন অন্যদেশে দেশে আলাদাভাবে থাকেন।

পড়ালেখা শেষ করে ওম প্রথমে ব্যাংকে চাকরি করেন। পরে খাবারের (ফাস্টফুডের) ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে এই ব্যবসা নিয়েই আছেন। আর অনিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান রয়েছে তার। 

সুপুত্তো বলেন, ‘ফেইসবুকে অনিকের সঙ্গে পরিচয়। ওর সরলতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার আস্থা জন্মেছে। আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। ওকে শুধু আমার করে নেয়ার জন্য এ দেশে ছুটে এসেছি।’ 

আর অনিক বলেন, তিনি পড়ালেখা তেমন একটা করেননি। তবে ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলতে ও লিখতে পারেন। দোকানে বসে অলস সময় কাটাতে গিয়ে ফেসবুকে ওমের সঙ্গে পরিচয়। ও বাংলাদেশে চলে আসার পর ধর্ম ও রাষ্ট্রের আইনকানুন মেনে ওকে বিয়ে করেছি।’

ওম ওরফে সুফিয়া আরো জানান, ‘ফাস্টফুডের দোকানে বসে ফেসবুক ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে অনিককে বন্ধুত্বের প্রস্তাব পাঠাই। অনিক প্রস্তাব গ্রহণ করলে আমাদের চেনা জানা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ফোনে কথাবার্তাও চলতে থাকে। কোনো এক সময় পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলি। গেল ফেব্রুয়ারিতে বাবা-মার অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশে আসি।’ 

অনিককে দেখার পর আরো ভালো লাগে জানিয়ে থাই তরুণী বলেন, ‘অনিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তারা সায় দেয় না। মাত্র পাঁচ দিনের ভিসা নিয়ে আসায় তড়িঘড়ি দেশে ফিরে যাই। আবারও এ মাসের প্রথম দিকে অনিকের কাছে এসে তার পরিবারকে বিয়ের জন্য রাজি করাই। পরে বুধবার ধর্মীয় ও হলফনামামূলে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হই।’ 

অনিকের বাবা আজাদ হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি (থাই তরুণী) খুব ভালো। মাত্র কদিনে সে আমাদের আপন করে নিয়েছে। আমরা গরীব মানুষ; শিক্ষিতও না। তাতে ওর কষ্ট নাই।’ 

ওম ওরফে সুফিয়া আরো বলেন, ‘মানুষের জীবন একটা। জীবনের সঙ্গীও একটা হওয়া উচিত। যেটা আমার সমাজে নাই। আমি বিশ্বাস করি অনিক আমার জীবনে একমাত্র সঙ্গী হয়ে থাকবে।’ 

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে প্রেম ভৌগোলিক সীমানা অতিক্রম করেছে। সেই সঙ্গে ভেঙে ফেলেছে ভাষা-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণসহ নানা সংস্কার, ভেদাভেদ। শুধু তরুণ-তরুণীই নয়, ৪০-৫০ বয়সী নর-নারীও আসক্ত হয়ে পড়েছেন ফেসবুক প্রেমে। তারা প্রিয়জনের জন্য ঘর ছাড়ছেন। হাজার হাজার কিলোমিটার দূর থেকে উড়ে আসছেন বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে। গেল জানুয়ারি মাসেই ব্রাজিল, কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তিন নারী প্রেমের টানে উড়ে এসে বিয়ে করেছেন হবিগঞ্জ, ঝিনাইদহ ও মাগুরার তিন তরুণকে। অনেকের বয়সের বিস্তর ব্যবধান থাকলেও তা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি।

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!