• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এরশাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় ইসলামী মহাজোট’


বিশেষ প্রতিনিধি মার্চ ৩১, ২০১৭, ০৫:১৫ পিএম
এরশাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় ইসলামী মহাজোট’

ঢাকা: নতুন একটি জোট গঠনের জন্য আরেক ধাপ এগিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রাথমিকভাবে ৩৪টি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল নিয়ে বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় ইসলামী মহাজোট’ নামে একটি নয়া জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সাবেক এ রাষ্ট্রপতি এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জোটের আহ্বায়ক আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক বলেন, যোগ্য প্রার্থীর সন্ধানে শিগগিরই মাঠে নামবে জোট। বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে। দলীয় বিবেচনায় নয়, প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনায় মনোনয়ন দেয়া হবে। অনেক মেধাবী রয়েছে যাদের মূল্যায়ন করা হবে।

জাতীয় ইসলামী মহাজোটভুক্ত ৩৪টি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে- গণ ইসলামিক পার্টি, পিপলস জাস্টিস পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ইসলামিক লিবারেল পার্টি, জাতীয় শরিয়া আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক লীগ, জমিয়তে মুসলিমিন বাংলাদেশ, ন্যাপ ভাসানী, খেলাফত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী গণ আন্দোলন, জাতীয় ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তুল ওলামা পার্টি, জাতীয় ইসলামিক মুভমেন্ট, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনসানিয়াত পার্টি বাংলাদেশ, খেলাফত বাস্তবায়ন পার্টি, ইসলামী আকিদা সংরক্ষণ পার্টি, ইসলামী মূল্যবোধ সংরক্ষণ পার্টি, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, মুসলিম জনতা পার্টি, ইসলামী আকিদা সংরক্ষণ আন্দোলন, খেদমতে খালক পার্টি, ওলামা মাশায়েক সমন্বয় পরিষদ, ইউনাইটেড ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি, ইসলামী সমাজকল্যাণ আন্দোলন, বাংলাদেশ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন, বাংলাদেশ খেলাফাতুল উম্মাহ, বাংলাদেশ আকিমুদ দ্বীন মজলিশ ও বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

এরশাদের ঘনিষ্ঠ ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় জানিয়েছেন, এরকম আরও কয়েকটি পৃথক জোট ও রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি মোর্চা গঠিত হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ মোর্চার প্রধান হবেন।

এদিকে জাতীয় ইসলামী মহাজোটের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ জঙ্গিবাদের আকস্মিক বিস্তৃতির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি এর কারণ খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও দেশে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান ইসলামী দলগুলোকে এক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতে চাইলে আয়োজকরা এড়িয়ে যান। বেরিয়ে যাওয়ার সময় এরশাদের কাছে প্রশ্ন ছিল, আপনি তো এখন মহাজোটে আছেন। সেখান থেকে বেরিয়ে কি নতুন জোটে যোগ দেবেন? জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি মহাজোটে নেই। জাতীয় পার্টি এখন বিরোধী দল। তবে আমরা আরেকটি মহাজোট গঠন করব।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ বলেন, ইসলাম সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে জিহাদের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু এ জিহাদ হল অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম-মানুষ হত্যা নয়। জিহাদ ও সন্ত্রাস এক নয়।

তিনি আরও বলেন, কি কারণে দেশে সন্ত্রাস হচ্ছে? কেন আমরা অন্যায় করছি? কেন আমাদেরকে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে- এসব চিন্তা করার সময় এসেছে। সাবেক এ রাষ্ট্রপতি উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, যদি ইসলামী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য থাকত তাহলে আপনারা আজ ক্ষমতায় থাকতেন। সব ইসলামী দল এক হোন, প্রমাণ করুন- আমরা সন্ত্রাস-বোমাবাজিতে বিশ্বাস করি না।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কি চাই? স্বাধীনতার চেতনা, ইসলামী মূল্যবোধ এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী সবাইকে নিয়ে একটি জোট করতে। তার নেতৃত্ব যদি আমার হাতে দেন তাহলে আমি খুশি হব। আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের আশা পূর্ণ হবে।’

এরশাদ বলেন, ইসলামী মূল্যবোধ এ দেশে প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে আমাদের কোনো মুক্তি নেই, সমাজে শান্তি আসবে না। আমেরিকার নাম উল্লেখ না করে এরশাদ বলেন, ‘আমাদের বলা হল সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসী বানাল কে? কেন ইরাকে বোমা নিয়ে গেলেন? কেন লিবিয়া গেলেন, কেন সিরিয়া গেলেন। আপনারা সন্ত্রাসী বানিয়েছেন। আপনারা লিবিয়াকে ধ্বংস করেছেন। আমাকে সন্ত্রাসী বানিয়েছেন, আপনারা সন্ত্রাসী। ইসলাম সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না।’

তিনি বলেন, লিবিয়া একটি সুন্দর দেশ ছিল। সেখানে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ দেয়া হতো। বিয়ের জন্য বিশেষ ভাতা দেয়া হতো। আপনারা কেন সেখানে বোমা নিয়ে গেলেন। আমাদের দেশ আমরা চালাব, আমাদের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আপনারা কেন গণতন্ত্র চাপিয়ে দিতে আসেন। আপনারা বিশ্ব শান্তি বিনষ্ট করছেন।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে এরশাদ বলেন, যে দেশের লোকজন নদী, ফুল ভালোবাসে, কোকিলের গানে বিমোহিত হয় সে দেশের লোক সন্ত্রাসী হতে পারে না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!