• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘ওদের হাসি’র জন্য প্রস্তুত একতার স্পন্দন


এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও জুন ৭, ২০১৮, ১২:৫২ পিএম
‘ওদের হাসি’র জন্য প্রস্তুত একতার স্পন্দন

ঠাকুরগাঁও: ঈদ মার্কেটের হালচাল জানার জন্য গতকাল শহরের এক মার্কেটে গিয়েছিলাম। এক দোকানীর সাথে আলাপকালে পার্শ্ববর্তী দোকানে জন বিশেক কচিকাচার ভিড় চোখে পড়ে। শিশুগুলো লাইন ধরে সারিবদ্ধ দাড়িঁয়ে। তাদের তত্ত্বাবধান করছে স্কুলপড়ুয়া ক’জন শিক্ষার্থী। বেশ আগ্রহ নিয়েই তাদের কাছে গেলাম।

তারা জানালো, প্রতিবারের ন্যায় এবারের ঈদেও তারা গরীব শিশুদের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির জন্য আয়োজন করেছে ‘ওদের হাসি’ নামক একটি ইভেন্ট। ৯ জুন ইভেন্টের দিনক্ষণ ঠিক করা থাকলেও শিশুদের মনমতো পোশাক কিনে দিতে ইভেন্টের ক’দিন আগেই ওদের নিয়ে হাজির হয়েছে সুপার মার্কেটে। ২ দিনে মোট ৪১ জন শিশুকে মার্কেটে এনে পছন্দমত পোশাক কিনে দিয়েছে তারা।

উৎসব আসলে খুশি আসে। খুশির বর্ষণে কেউ সিক্ত হয় কেউবা রিক্ত হাতে কপালের খেলা দেখে! ঈদ! দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর আসে এই খুশির দিন। ঘরে ঘরে আনন্দের ফল্লুধারা বয়,মানুষে মানুষে ভেদাভেদ হারিয়ে যায়। তবুও এই খুশির উৎসব কি আনন্দের উপহার নিয়ে হাজির হতে পারে প্রতিটি দুয়ারে? পারে না!

সমাজের অলিখিত নিয়মের বেড়াজালে আটকা পরে তখনও কোথাও কোথাও চলে শুধুই বেঁচে থাকার সংগ্রাম। ঈদের দিনকে আনন্দময় করে তুলতে ঈদের সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই চলে কেনাকাটার প্রস্তুতি। ফর্দ যত লম্বা হতে থাকে, খুশি যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ে! সে ফর্দের বৃহৎ অংশ জুড়ে থাকে নতুন কাপড় এর স্থান। আমরা সবাই যখন বিচিত্র, বর্ণিল পোষাক কিনতে গিয়ে বিলাসিতার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হই ঠিক তখনই কিছু পরিবারে মা-বাবা নতুন পরিকল্পনা আঁটছেন এই ঈদেও তাদের নিষ্পাপ শিশুগুলোকে নতুন কাপড় না পাওয়ার সান্ত্বনা দেবার!

হ্যাঁ, সেই বঞ্চিত প্রাণগুলোর কথা বলছি যাদের কাছে ঈদ মানেই শুধু একটি সাধারণ দিন; বিত্তবানের বিলাসিতা চেয়ে চেয়ে দেখার দিন। খুশির ঈদে তাদের একটি নতুন পোশাকের আশা যে পূরণই হতে চায় না! আজ তো আমরা কত গর্ব করি এ জাতির উদারতার। তাহলে আমরা কি পারিনা এই অবহেলিত, বঞ্চিত শিশুগুলোর নিষ্পাপ হাসিটাকে বাঁচিয়ে রাখতে। ঈদকে সামনে রেখে আমরা কতই না খরচা করি।
সব কি প্রয়োজনীয়? আপনি বুকে হাত দিয়ে বলতে শুরু করুন শত শত অপ্রয়োজনীয় খরচ পাবেন!এই খরচ যদি আমরা না করি। আমাদের ছোট্ট একটু ত্যাগ যে পবিত্র প্রাণগুলোকে তাদের প্রাপ্য হাসিটুকু দিবে। আসুন না, একটু সাহায্য করি তাদের। বিশ্বাস করুন হাসিমুখ পৌছে দেয়ার দায়িত্বটুকু নিয়েছি হৃদয় ডাক দিয়েছে বলে। তাই একতার স্পন্দন আয়োজন করছে ‘ওদের হাসি’ ছোট্ট শিশুগুলোর জন্য। এই হাসিটুকু সত্যি সত্যি পৌছাবে,দরকার শুধু একটু সাহায্যোর। আসুন না, নিজেদের ছোট্ট ত্যাগে হাসি ফোটাই ‘ওদের’ মুখে!

আগামী ৯ জুন অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে এই শিশুগুলোর মাঝে তুলে দেওয়া হবে তাদের পছন্দমত বাছাই করে রাখা সেই পোশাকটি। সেই সাথে তাদের পরিবারের জন্য রয়েছে কিছু ঈদসামগ্রী।

পোশাক পছন্দ করতে আসা গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জনি জানায়, ভাইয়া-আপুগেলা বলছে আমি আমার পছন্দমতন কাপড় কিনতে পারুম। আইজ সবার লগে কাপড় নিতে আইসা খুব ভাল্লাগতাছে। এই কাপড়গেলা পিন্দা এবারের ঈদটাও জমবো।

আয়োজক সংগঠনটির সভাপতি মো. আক্কাস আলী আকাশ জানায়, বিগত বছরগুলোর মত এবারেও আমরা কিছু সংখ্যক গরীব শিশুর মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। সকলের সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতেও এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!